Thursday, December 17, 2009

ডিপ্লোমা ডাক্তার বিতর্ক-সূর্য্যকান্তর সঠিক পদক্ষেপ

প্রতিদিন, আনন্দবাজারের রিপোর্ট দেখলাম। সূর্যকান্তর এই নিয়ে মুন্ডপাত করা হচ্ছে। এদেশেও নিউ হেলথকেয়ার বিল নিয়ে রিপাবলিকান মিডিয়া ওবামার মুন্ডপাত করছে। আমি মনে করি এই বিরোধিতা সুস্থ গণতন্ত্রের লক্ষন। কিন্ত এই রাজ্যে যুক্তির ভাষা কোথাও পেলাম না।

আমার ব্যাক্তিগত পজিশন সুর্য্যবাবুর পক্ষে। আমি নিজের পক্ষের যুক্তিগুলো দিতে চাই ( কেও যেন না ভাবেন, আমি সিপিএম কে সমর্থন করছি। প্রশ্নই ওঠে না। আমি সুধু এই ইস্যুতে সূর্য্যকান্তের পদক্ষেপ সঠিক বলে মনে করছি।)
(১) প্রথম বিরোধি যুক্তি-এরা পর্যাপ্ত শিক্ষার অভাবে ভুল চিকিৎসা করতে পারে।আমি মানতে রাজি না। কারন

১১) খুব বড় চিকিৎসক ও ভুল চিকিৎসা করে। আমার জীবনে যত না ঠিক চিকিৎসা পেয়েছি ভুল চিকিৎসা পেয়েছি তার থেকে অনেক বেশী। এবং তাদের সবাই বিদেশী ডিগ্রিধারি। আমি সব থেকে বেশী ঠিক চিকিৎসা পেয়েছি আমার ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানের কাছ থেকে। যার বাংলাদেশ থেকে একটা এম বি বি এস আছে। সবটাই অভিজ্ঞতা এবং বুদ্ধির খেলা।
১২) চিকিৎসাবিদ্যা যতনা পুঁথির-তার থেকেও অনেক অনেক বেশী অভিজ্ঞতার। যেকোন ডাক্তার ও এটা স্বীকার করবে।

১৩) পেটে ব্যাথা, পেট খারাপ, ফ্লু ইত্যাদি হলে আমরাই কি আজকাল ডাক্তারের কাছে যাই? নিজেরদের চিকিৎসা নিজেরাই করছি। কেন? এইসব সাধারন জ্ঞান এখন সবার আছে। কিন্ত চিন্তা করুন এইটুকু জ্ঞান কিন্ত গ্রামের লোকেদের নেই। আমার ডাইরিয়া হলে, আমি জানি ঠিক কি করতে হবে, কি ওশুধ খাব। ডাইরিয়া হলে আমি ডাক্তারের কাছে যায় না। গ্রামে কিন্ত এটা অনেকেই জানে না। শুধু এইটুকু সাহায্য দিতে পারলেই অনেকলোক বেঁচে যাবে।
(২) আমেরিকাতে সি এন আর নার্সরা কিন্ত চিকিৎসা করে। প্রথমে আমাদের নার্সের কাছেই যেতে হয়।সহজ কেস হলে, তিনিই ওশুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। সবকেসে ডাক্তার মোটেও দেখে না। আমেরিকাতে এটা হলে আমাদের দেশে কেন সম্ভব না?

(৩) গ্রামের বাস্তবটাও বুঝতে হবে। একটা গ্রাম থেকে মফঃশহরে আসতে-যেখানে গ্রামীন স্বাস্থ্য কেন্দ্র আছে৪-১০ মাইল পথ। গরুর গাড়িতে চেপে আসে-অধুনা ভটভটি ভ্যান। আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে কেসটা খুব বাজে হয়ে গেলে তবে ওরা আসে। গ্রামে হাতের কাছেই ডাক্তার থাকলে-প্রাথমিক চিকিৎসাটা করে দিলে এই সমস্যা হত না। এই জন্যেই আমেরিকাতে প্যারামেডিকরা আছে।
**********লন্ডন থেকে বিকাশ বাবুর সংযোজন**************
পশ্চিম বঙ্গে তথা সারা দেশে অনেক মেডিক্যাল কলেজে ৫০ বছর আগেও LMS, LMF এই ধরনের licentiate ডিপ্লোমা দেওয়া হত এবং এই সকল ডাক্তার গ্রামে গ্রামে বহু বছর প্রাথমিক চিকিৎসা যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে করেছেন - এবং ডাক্তার হিসেবেও তারা খুব খারাপ ছিলেন না । এই প্রসঙ্গে বলি রাখি যে MB (অধুনা MBBS) সঙ্গে সঙ্গে MF/LMS পাঠ্যক্রমও পড়ানো হত। এই ডিপ্লোমা কিন্তু Paramedic জাতীয় নয় - তার থেকে অনেক এডভ্যান্সড।। Medical Council of India এখনো এই ডিপ্লোমাগুলি কে রিকোজনিশন দেয়ঃhttp://mciindia.org/know/acts/schedule3.htmএইটা দেখার অনুরোধ করলাম ।।

Sunday, November 22, 2009

বঙ্গের ভ্রান্ত রাজনীতির বিরুদ্ধে জনচেতনা মঞ্ছ তৈরী করছেন সইফুদ্দিন চৌধুরী, সোমনাথ চ্যাটার্জি

পশ্চিম বঙ্গ ভারতের সব থেকে বেশী হিংসা কবলিত রাজ্য। কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্বের সন্ত্রাসকে হার মানিয়েছে পশ্চিম বঙ্গের রাজনৈতিক সন্ত্রাস। রাজনৈতিক পরিবর্তন এই রাজ্যে অবশ্যই আসছে-কিন্ত আসছে না উন্নয়ন, শান্তি এবং সমৃদ্ধি। অত্যাচারী এবং স্বৈরাচারীরা জামাকাপড় বদলের মতন পার্টি বদল করছে। কিন্ত রাজবেশ পালটালেই কি আর কংসরাজরা বদলাবে? তাই পরিবর্তন আসছে এটা যেমন আশার কথা-কিন্তু ঠিক কি পরিবর্তন আসছে-সেখানে শুধুই একরাশ নৈরাশ্য।

তাই একটি নাগরিক মঞ্ছ পশ্চিম বঙ্গে ভীষনভাবে দরকার। যা হবে অরাজনৈতিক। জনগনের অভাব অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক পার্টি গুলির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে। আমাদের রাজ্যের অধিকাংশ লোক আজও দেশ এবং দেশের লোককে পার্টির চেয়ে বেশী ভালবাসে। কিন্ত তীব্র রাজনৈতিক মেরুকরণের কুম্ভীপাকে রাজ্যের জনগনের সামনে অধিকাংস সময় বিকল্প পথ খোলা থাকে না। জনচেতনা মঞ্চ সেই অভাব দূর করবে। রাজ্যকে হিংসামুক্ত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করা ভীষন ভাবেই দরকার। পার্টির ওপরে রাজ্য এবং রাজ্যবাসী-এই চেতনার বৃদ্ধি আজ সর্বত্র দরকার পশ্চিম বঙ্গে।

তাই এই নতুন নাগরিক মঞ্চ গড়ার কাজে এগিয়ে এসেছেন সইফুদ্দিন চৌধুরী, প্রাত্তন স্পীকার সোমনাথ চ্যাটার্জি, বিশিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ অম্লান দত্ত এবং আরো অনেক বিশিষ্ঠ নাগরিক। খুব শীঘ্রই মঞ্চের কর্মসূচী এবং কমিটি গঠন করা হবে।

আপনারা যারা এই উদ্যোগে যোগ দিতে চান-তারা এই ফোরামে যোগ দিয়ে আপনাদের মতামত জানান।
http://groups.google.com/group/janachetanamancha

Tuesday, October 20, 2009

মাওবাদ এবং ভারতের ভবিষ্যত

সাঁকরাইল থানায় যেদুজন পুলিশ মারা গেলেন মাওবাদিদের হামলায় এবং যে ও সি আজ বা কাল কোতল হওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছেন-তাদের মৃত্যুর জন্যে দায়ী কে?

রাষ্ট্র? সিপিম? মাওবাদি?

নানান ফোরামে ঘুরলে দেখা যাবে সিপিএম মাওবাদিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়াচ্ছে-নক্সালরা সিপিম আর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে-দক্ষিন পন্থীরা আবার মাওবাদি এবং সিপিএম উভয়কেই দুষছেন বৃত্তাকারে স্তূপীকৃত হচ্ছে দোষারোপ কিন্ত বাস্তবটা কি?

এককচিত্র বা খন্ডচিত্র শুধুই গোলক ধাঁধা মাওবাদিরা দড়জায় কড়া নাড়ছে এব্যাপারে সন্দেহ নেই এসব আলোচনাতে যা ভুলে যাওয়া হচ্ছে

(১) ভারতের সবচেয়ে দরিদ্র ক্লিষ্ট জঙ্গল রাজ্যেগুলিতে মাওবাদিদের ঘাঁটি
(২) ২৮ টির মধ্যে ২২ টি রাজ্যে মাওবাদিরা সক্রিয় -এর মধ্যে চারটি রাজ্যে তারাই সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছে ( তোলাবাজি বা ট্যাক্সেশন পর্যন্ত)
(৩) সালোয়া জুডুম, সেনাবাহিনী-কোবরা--কোন কিছু দিয়েই তাদের দমানো যাচ্ছে না তাদের শক্তি বৃদ্ধি হচ্ছে উত্তোরোত্তর
(৪) গণতান্ত্রিক সিস্টেমের দুর্বলতার তারা সুযোগ নিচ্ছে পশ্চিম বংগে মাওবাদিরা নন্দীগ্রামে ছিল তৃণমূলের সাথে, গরবেতায় সিপিএমের সাথে-রাজনৈতিক পার্টিগুলি নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্যে এদের ডাকছে-মাওবাদিরা সুযোগের সম্পূর্ণ সদ্বাব্যাবহার করছে

আমরা বলছি মাওবাদিরা গণতন্ত্রে ফিরছে না কেন? কেন গণতান্ত্রিক পথে তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলছে না?

আসলে এটা ওপর থেকে বলা সহজ -বাস্তবটাও দেখতে হবে কারা এম এল এ, এম পি হয় এসব জায়গা থেকে? আজই দেখলাম দলিত নেত্রীর এক চ্যালা যে এম পি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিল-পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়েছে ৮ টি ধর্ষনের ঘটনা নথিবদ্ধ হওয়ার পরে! খুন, রাহাজানি, ধর্ষন ইত্যাদি ২২ টা মামলা তার বিরুদ্ধ! জমি দখলের বিরুদ্ধে লড়াই করা পার্টির এম এল এ জমি দখল করেই তিন বছরে ৮০ লাখ টাকার সম্পত্তি বানিয়েছেন!

জমি দখলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নামা নেতাই যদি ক্ষমতা পাওয়ার পরে জমি দখল করা শুরু করেন-তাহলে কি ভাবে এবং কেন গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করবে মানুষ? নেতা হওয়াটা আজকাল মিডিয়া মঞ্চে অভিণয় করে মানুষকে টুপি পড়িয়ে এম এল এ, এম পি হয়ে গুছিয়ে নেওয়ার সিস্টেম হয়েছে আপনারাই বুকে হাত দিয়ে বলুন কোন রাজনৈতিক নেতাকে আপনি বিশ্বাস করতে পারেন ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে আপনাদের স্বার্থ রক্ষার জন্যে? দু এক জন এমন থাকলেও পার্টি কি তাকে রাখবে? তাহলে ওই এক বেলা পাতা-ভাত খেয়ে থাকা বনের মানুষ গুলো কাদের বিশ্বাস করবে? রঙ্গমঞ্চের রঙ মাখা অভিনেতাদের ? এ ব্যাপারে ত সবাই সমান সিপিএমের অনুজ পান্ডে ত শুধু লালগড়ে-চত্রিশগড় মধ্য প্রদেশে অমন অনেক অনেক অনুজ পান্ডে আছে!

এদেরকে গণতন্ত্রে ফিরতে বলাটা প্রহসন নেতা থেকে অফিসাররা কি তা ওরা দেখেছে-আবার মাওবাদি নেতারা কিভাবে ওদের পাশে নানান ভাবে দাঁড়িয়েছে, সেটাও ওরা জানে ন্যাড়াদের বেল তলায় বার বার যেতে বলাটা ঠাট্টা করা চে গুয়েভেরার ওপর একটা ডকুমেন্টারী মনে পড়ছে-চে আর কাস্ত্রো একের পর এক থানা আক্রমন করছেন-আর তত গ্রামের মানুষেরা স্বেচ্ছায় চে র গেরিলা ফোর্সের সাথে যোগ দিচ্ছেন ভারতের মাওবাদিরাও একই ভাবে এগিয়ে চলেছে তবে ভারতে গণতন্ত্র আছে এবং কিউবার থেকে ভারত একশোগুন বড়-তাই বাতিস্তুতা সরকারের মতন ভারতের পতন অসম্ভব-কিন্ত ভারতে একটা প্রাক বিপ্লব পরিস্থিতি মাওবাদিরা তৈরী করেছে, তা অস্বীকার করা অসম্ভব

যদি রাশিয়া , চীন আর কিউবার ইতিহাস সম্পূর্ণ না জানা থাকত-আমি বলতাম মাওবাদিরা এগিয়ে যাক কিন্ত ইতিহাস এটাও বলে কমিনিউস্ট বিপ্লব এই পচা গণতন্ত্রের চেয়েও আরো ভয়ঙ্কর এই গনতন্ত্র আর যাইহোক লাখে লাখে মানুষ মারে না-দুর্বল হলেও কিছু পরিবর্তন হয় আর পৃথিবীর কোন দেশেই কমিনিউজম শোষনের অবসান করে নি-বনিক শ্রেনীর বদলে পার্টির নেতা আর বুরোক্রাটরা শোষকের স্থান গ্রহণ করেছে-যে ব্যাপারের সাথে পশ্চিম বঙ্গের লোকজনের সামান্য পরিচয় হয়েছে আমাদের গণতন্ত্র যতই বাজে হৌক অতটা বাজে নয় যে পুলিশ স্টেটের ন্যায়, যা খুশি যাকে খুশী মারা যাবে, জেলে ভরা যাবে সুতরাং আমাদের গনতান্ত্রিক কাঠামোর যে সমস্যা আছে-গণতন্ত্রের যে সমস্যা আছে-যার বিরুদ্ধে মাওবাদিরা লড়াই করছে-সেই গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ব্যাপক ভাবে সংস্কার করতে হবে

কিন্ত কেও যদি মাওবাদিদের বিরুদ্ধে সিপিএমের মায়াকান্না দেখে পুলকিত হন ভুল করবেন সিপিএমের আরাধ্য দেবতা লেনিন রেড টেররের সময় গনতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রীদের ঠিক এই ভাবেই পিঁপড়ের মতন মেরেছিলেন যেভাবে মাওবাদিরা সিপিএম মারছে সুতরাং সিপিএমের তাত্ত্বিক ভিত্তি ভাওতাবাজি দুনাম্বারীর ওপর দাঁড়িয়ে আছে-মাওবাদিদের মধ্যে কিন্তু এই দ্বিচারিতা নেই তারা লেনিনের গনতান্ত্রিক এবং দক্ষিন পন্থীদের খুন করে লাল সন্ত্রাসের সাহায্যে ক্ষমতা দখলের পথই নিয়েছে সিপিএম মুখে লেনিনের কথা বলেলেও, আসলেই একটি বুর্জোয়া পার্টি স্টালিন দুবার মেনশেভিকদের সাথে হাত মিলিয়ে জারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চেয়েছিলেন-লেনিন দুবারই না করে দিয়েছিলেন লেনিন গনতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রীদের সাথে কোনদিন হাত মেলান নি-এবং ১৯১৮ সালে তাদের মেরেই ফেললেন বা পিটয়ে বলশেভিক বানালেন মাওবাদিরা সিপিএম পিটিয়ে কিন্ত ঠিক এই কাজটাই করছে সুতরাং সিপিএম যখই মায়াকান্না কাঁদুক, কমিনিউজমের সামান্য ইতিহাস বা তত্ত্ব যাদের জানা আছে, তারা নিশ্চিত ভাবেই জানবেন মাওবাদিরাই আসল লেনিনবাদি দল-সিপিম হচ্ছে একটি বিশুদ্ধ হিপোক্রিট গজকচ্ছপ তাত্ত্বিক ভিত্তি এবং ক্যাডার বেসেও লেনিনে এরা সামনে দিকে মালা পড়িয়ে পেছনে পেচ্ছাব করছিল-এখন আসল লেনিনবাদিদের হাতে মার খেয়ে, আসল নকলটা সহজেই বেড়িয়ে আসবে

মাওবাদিদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান যেমন হওয়া দরকার-ঠিক তেমনই আমাদের গনতন্তের দুর্বলতা বুঝতে, মাওবাদি আন্দোলনের দরকার ছিল শুধু সেনা অভিযান করে এই আন্দোলন রোখা যাবে না ভারতীয় গনতন্তের আমূল সংস্কার সাধন করতে হবে, যাতে একদম পিছিয়ে পড়া লোকেদের গলাও দিল্লীতে পৌঁছাতে পারে প্রথম কাজটা যদি সরকার করে-দ্বিতীয় কাজটা আমাদের

Saturday, August 15, 2009

শারুখ খানের হেনস্থা(!) এবং বাঙালী বামপন্থীদের অন্ধ আমেরিকা বিরোধিতা

আজ নিউইয়ার্ক এয়ারপোর্টে শারুখ খান স্পেশাল চেকিং এর সম্মুখীন হন। তার নাম কম্পুটারে স্পেশাল চেকিং এর জন্যে সিলেক্টেড হয় এবং তাকে তল্লাসী ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শারুখের পরিচয় নিরাপত্তা কর্মীরা জানত। তারপরেও তাকে ছাড় দেওয়া হয় নি। কারন আমেরিকা চলে সিস্টেমে। এখানে ভারতের মতন কাওকে ভি আই পি বা স্পেশাল ছাড় দেওয়ার নিয়ম নেই!

সে যাক। শারুখের এই 'হেনস্থা' নিয়ে ভারতের বামপন্থী মহল আমেরিকা বিরোধিতার ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে! শারুখ মুসলমান, তাই নাকি সন্ত্রাসবাদি সন্দেহে এই হেনস্থা! নানা ফোরামে আমেরিকাকে গালাগাল দিত্যে নেমে পড়েছে ভারতের বামপন্থী বাহিনী। যারা আদৌ জানেই না, আমেরিকাতে কিভাবে এই স্পেশাল চেকিংটা হয়! তাতে কি যায় আসে! প্রকাশ কারাত ও জানেন না নিউক্লিয়ার শক্তি ভারতের কেন লাগবে। কিন্ত তাতে কি রাজনীতি আটকায়? কিছু না বুঝে গোলতোলার ক্ষেত্রে বামপন্থীদের প্রতিদ্বন্দী আর কে আছে?

ব্যাপারটা মোটেও সেরকম কিছু না। আমি নিজেও স্পেশাল চেকিং দু-তিনবার ফেস করেছি। প্রথম বার এমনটা হয়েছে আমার জীবনে সেডার রাপিড এয়ারপোর্টে। প্রথমে ঘাবরে গিয়েছিলাম। কিন্ত নিরাপত্তা কর্মীদের ব্যাবহার ছিল অমায়িক। সব থেকে বড় কথা আমি ভারতীয় বলে আমাকে সিলেক্ট করে নি। কম্পুউটারে রান্ডম ভাবে এই নাম গুলো উঠে আসে। আমার আগে চেক করা হচ্ছিল এক সত্তরের সাদা বৃদ্ধাকে! কম্পুটারের নির্বাচনের ওপর কারুর হাত নেই। এটা বুঝতে কি খুব বেশী অসুবিধা হয়- যে আমার নিজের নিরাপত্তার জন্যেই কাজ করছে ওরা? তাতে আমার আপত্তি থাকবে কেন? শারুখ খান যদি ভেবে থাকেন আমেরিকায় ভারতের মতন স্পেশাল স্ট্যাটাস পাবেন-তাহলে ভুল। আমেরিকা চলে সিস্টেমে।

৯/১১ এর পর আমেরিকাতে একটিও সন্ত্রাসবাদের ঘটনা ঘটে নি। ঘটতে পারত অনেক। এফ বি আই সব মুসলিম টেররিস্ট সেলগুলিকে আগেই ধরে ফেলেছে। আর ভারতে কি হয়েছে? খই মুরকির মতন সন্ত্রাসবাদের বোমা ফেটেছে। কেও জানে না, কাল তার স্টেশনে বোমা ফাটবে কি না! এই ত ভারতের নিরাপত্তার অবস্থা! সেই ভারতীয়রা আমেরিকার নিরাপত্তা ব্যাবস্থার সমালোচনা করে কি বুদ্ধিতে যখন এই ব্যাপারে ভারত সম্পূর্ণ ব্যার্থ এবং আমেরিকা সফল? ভারত কটা মুসলিম টেররিস্ট সেল বোমা ফাটানোর আগে ধরতে পেরেছে? গুনে দেখুন। উত্তর পাবেন। রেশিয়াল প্রোফাইলিং এর ভয়ে ভারতের নিরাপত্তা কর্মীরা মুসলিম ধর্মীয় সংগঠন গুলির মধ্যে ইনফিলট্রেট করতে পারে নি। পারবেও না। কথাটি আমার না। ভারতের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বি আর রমনের। সেখানে এফ বি আই আমেরিকার সব মুসলিম সংগঠনে ঢুকে গেছে। আমেরিকাতেও মুসলিমরা তাদের প্রফাইলিং করা হচ্ছে বলে চিৎকার করেছে। আমেরিকার কোন রাজনৈতিক নেতা ভোট হারানোর ভয়ে, তার জন্যে এফ বি আই কে তাদের কাজ থেকে সরে আসতে বলে নি। এটাই আমেরিকার সাথে ভারতের পার্থক্য। এই জন্যেই ভারতে সন্ত্রাসববাদি বোমা ফাটতেই থাকবে-আমেরিকা তুলনা মূলক ভাবে অনেক নিরাপদ।

স্পেডকে স্পেড বলতে না পারলে, সন্ত্রাসবাদীর প্রথম বুলেটটা আপনারই প্রাপ্য।

Monday, August 10, 2009

বিশাল ভূমিকম্প ভারত মহাসাগরে-সুনামী হিট করতে পারে


প্রথম আপডেট-ভারতীয় সময় ৩-৩০ সকাল-১১ই আগস্টঃ
আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ২৫৩ কিলোমিটার দুরের এক এপিসেন্টারে বিশাল ভূমিকম্পের খবর পেলাম-এই মাত্র। সময়
মাত্র কুড়ি মিনিট বাদে জাপান এবং মায়নামারে, প্রশান্ত মহাসাগরেও বিরাট ভূমিকম্পের খবর পাওয়া গেছে।

রিখটার স্কেলে আমেরিকান জিওলজিক্যাল সার্ভের মাপ 7.6-যা খুব ভয়ঙ্কর-এবং সুনামী সৃষ্টির জন্যে যথেষ্ট। কোস্ট লাইন ১০০০ মাইল দূরে এপিসেন্টার থেকে-ঘণ্টায় ৫০০ মাইল বেগে ধেয়ে আসা সমুদ্রশ্রোত আনুমানিক আরো দুঘন্টা বাদে ভারতের উপকূলে পৌঁছাবে।

Sunday, June 14, 2009

সিপিএম এবং রাজনৈতিক হিংসা


ইদানিং তৃণমুলের হাতে মার খেয়ে সিপিএম হিংসা হিংসা ফ্যাসিবাদ ইত্যাদি বলে চিৎকার করছে--

সিপিএমের আইডোলজি ত গান্ধীবাদি না-লেনিন স্টালিন সবাই হিংসাকে কাজে লাহিয়েই ক্ষমতাই এসেছেন-কোন গণতান্ত্রিক রায় তাদের পক্ষে ছিল না।
হিংসা ব্যাবহার করে মানুষ খুন করে ক্ষমতা দখলের নাম কমিনিউস্ট বিপ্লব। কমিনিউস্টরা তা অস্বীকারও করে না।

মোদ্দা কথা সিপিএমের আইডিওজ়িতে হিংসা আপাংত্বেয় না।

যারা হিংসাত্মক কাজ করে-তারা সব সময় হিংসার সপক্ষে সাফাই দেওয়ার চেস্টা করে। লেনিন লোক খুন করে, সেটাকে বলশেভিক বিপ্লব বলে চালিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। হিংসা, তীব্র হিংসার মাধ্যমে জনগনকে মারধোর করে, লেনিন ক্ষমতা দখল করেন। কারন নির্বাচনে তিনি হেরে ছিলেন। সেটাকে সিপিএম সমর্থন করে। অর্থাৎ গণতন্ত্রকে গলা টিপে খুন করাতে সিপিএমের কোন আপত্তি নেই। কারন সেটাই লেনিনবাদ।

তৃণমূলও হিংসার পক্ষে সাফাই গাইতে বলছে সিপিএমের গুন্ডাদের হাত থেকে বাঁচতে এটা আত্মরক্ষা। হার্মাদ বাহিনীর হাত থেকে তারা নানান গ্রাম এবং লোকালয় মুক্ত করছে। লেনিনের রেড টেটর এর থেকেও ভয়ংকর ছিল-তিনি অবাধ্য কৃষক এবং রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দীদের রাশিয়ার ওই প্রবল ঠান্ডায় নগ্ন করিয়ে দাঁড়িয়ে রেখে মারতেন। সিপিএম কোনদিন তার জন্যে দুঃখ প্রকাশ করেনি-কারন তাহা বলশেভিক বিপ্লব।

অর্থাৎ সব ধরনের কমিনিউস্ট হিংসা বিপ্লব , আর তার বিরুদ্ধে নিপীড়িতদের জনঅভ্যুত্থান হচ্ছে প্রতিবিপ্লব!

বাস্তব হচ্ছে হিংসা হিংসাই-যা গান্ধী বলতেন। তার কোন জাস্টিফিকেশন চলে না। হিংসা মানুষের আদিম প্রবৃত্তি-আত্মরক্ষা খাতে ছাড়া আর কোন কাজেই সমর্থন যোগ্য না।

প্রশ্ন হচ্ছে সিপিএম যত দিন না লেনিনবাদ না ছাড়বে-তত দিন হিংসার বিরুদ্ধে বলার কি মরাল রাইট আছে? লেনিনবাদ মানেই ত হিংসার পথে ক্ষমতা দখল। তাহলে, সিপিএমকে তার বিরোধি পার্টি মারধোর করলে, তারা কান্নাকাটি করছে কেন? তাদের আদর্শ, লেনিনবাদই বলছে বিপরীত আদর্শের লোকদের পেটানো এবং খুনোখুনি হারাম না। তাহলে সিপিএমের নেতাদের পেটানো কেন বাজে কাজ? সিপিএমের আদর্শেই তা সিদ্ধ।

একটা দল হিংসার আদর্শকে বক্ষে বহন করে, শতাব্দীর কুখ্যাত দুই খুনী ( লেনিন এবং স্ট্যালিন) কে পূজো করে, কখনোই বলতে পারে না লোকেরা আমার বিরুদ্ধে হিংস্র হচ্ছে কেন! হিংসার পথে হিংসারই জন্ম হয়। যার জন্যে কমিনিউস্ট রাষ্ট্রগুলি মানব সভ্যতাকে নরমেধ যজ্ঞ আর ভয়ঙ্কর সব মিশাইল ছাড়া কিছুই দিতে পারে নি।

তাই আসুন আমরা সিপিএম নেতাদের জিজ্ঞেস করি। মশাই কাঁদছেন কেন? আপনারাইত হিংসার পলিটিক্যাল স্যাংশান দিয়েছেন।

অন্যের মায়ের আঁচল যখন খালি হয়, তখন সেটা বিপ্লব। আর নিজেদের ঘরে হিংসার আঁচ এলে সেটা প্রতিবিপ্লব।

কম্যুনিউস্টদের তুলনা এই বিশ্বে একমাত্র তারা নিজেরাই!

Saturday, June 13, 2009

ছাত্র রাজনীতি না পার্টির সাপ্লাই লাইন?


গত দুই সপ্তাহে পশ্চিম বঙ্গের কলেজ গুলোর একটাই খবর- তৃণমুল বনাম সিপিএমের কুস্তির আখরায় জমি দখলের লড়াই। আগামী দুই বছর আমাদের ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত বেশ ঝরঝরে -সত্তরের দশকের পদধ্বনি।

বাংলার ছাত্র আন্দোলনের ঐতিহ্য উজ্জ্বল-এ কথা ছোটবেলা শুনে আসছি। কেন উজ্জ্বল বা ঐতিহ্য কথাটা ব্যাবহার করা হবে-তার আমি যথাযত কোন কারন খুঁজে পাই নি। যদি ধরে নিই বুদ্ধদেব বা বিমান বা মমতা আমাদের 'গৌরবময় ছাত্র আন্দোলনের' প্রোডাক্ট-খুব পরিস্কার ভাবেই বলা দরকার, এদের অপদার্থতার জন্যেই আজ পশ্চিম বঙ্গ সব কিছুতেই শেষের দিক থেকে প্রথম। এর জন্যে সংখ্যাতত্ত্ব নিস্প্রোজন। দুদিন দিল্লীর গুঁরগাঁও বা ব্যাঙ্গালোরের হাইটেল টেক পার্কগুলো ঘুরলেই বোঝা যাবে পশ্চিম বঙ্গ এখন শ্বশান বঙ্গ। কৃষির কথা বলছেন? আমি ১৯৮০ সালে দেখেছি একজন ভূমিহীন কৃষক তখন ২০ টাকা রোজ পেত-এখন পাচ্ছে ৫০টাকা। তাও বছরে ২০ দিন। আর গুজরাট বা মহারাষ্ট্রে এইসব ডেইলি লেবাররা কাজ পায় ৯০-১০০ দিন এবং ১০০/১২০টাকা রোজে। মোদ্দা কথায় পশ্চিম বঙ্গ একটি ভীষন রকমের পিছিয়ে পড়া রাজ্য। শিক্ষা, শিল্প, বিদ্যুত, কৃষি-সব দিক দিয়ে।

ছাত্র আন্দোলনের ফাইনাল প্রোডাক্ট যদি বুদ্ধ বা মমতা হয়--আমাদের লাভটা কি হল? বরং কর্নাটক বা তামিলনাড়ুতে দেখুন। এস এম কৃষ্ণা ব্যাঙ্গালোরের রূপকার-কৃষ্ণা আমেরিকাতে পেশাদারি ডিগ্রী পাশ করে, দেশে এসে রাজনীতি করেছেন। ফলে ব্যাঙ্গালোরকে দেশের মধ্যে এগিয়ে দিতে পেরেছেন। আফগানিস্থানে আমেরিকা প্রস্বাব করলে, কর্নাটকের চাকা বন্ধ করেন নি। খুবই ফোকাসড থেকেছেন ব্যাঙ্গালোরের উন্নতির প্রশ্নে। যেসব ছাত্র কমরেডরা বিগ্রেডে আজ ডি ওয়াই এফ আই এর হয়ে সাম্রাজ্যবাদি শ্লোগান দিচ্ছে, কালকে তারাই পেটের তাড়নায় ব্যঙ্গালোর বা হায়দ্রাবাদে যাচ্ছে! তাই প্রশ্নটা আমি বারবার করছি-পশ্চিম বঙ্গের গৌরবময় ছাত্র আন্দোলনের ফলটা কি? শুন্য না নেগেটিভ?

এর থেকে কি ভাল কোন সাহিত্যিক বা দার্শনিক বা রাজনৈতিক পন্ডিত বেড়িয়েছে? প্রথমে রাজনীতিতেই আসি। বাঙালীদের মধ্যে যারা কমিনিউমের চর্চা করেন তারা কি আদৌ মার্ক্স বোঝেন? আমার নিজের ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলি-টপ টু বটম কেও মার্ক্সবাদের ম ও বোঝেন না। বুঝলে এদ্দিনে লেনিনবাদের শ্রেফ ধাপ্পাবাজিগুলো অনায়াসের ধরতে পারতেন। ১৯১০ সাল থেকে লেনিনবাদের সমালোচনা রাজনীতি বিজ্ঞানীরা করেছেন-এবং ১৯৩০ সালের মধ্যে এটা বিশেষভাবে গবেষনা মহলে গ্রহনযোগ্য হয় যে লেনিন মার্ক্সবাদ বুঝতেন না-এবং তিনি নিজের ফ্যাসিস্ট তত্ত্বকে মার্ক্সের নতুন অবতার হিসাবে চালিয়ে ভ্যাঙ্গার্ড পার্টির দৈত্য- কমিনিউজম নামক স্বৈরাচারী বস্তুটি তৈরী করেছিলেন। মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদের ওপর বাংলায় লেখা একটিও আন্তর্জাতিক মানের বই আছে যা মৌলিকত্ব দাবি করতে পারে? যেসব বই আছে সেগুলো সব লিফলেট-কোম সিরিয়াস বিশ্লেষন ধর্মী কিছু না। যেগুলোতে বিশ্লেষনের ভাব আছে, আদের অধিকাংশরই দর্শন শাস্ত্রে প্রাথমিক জ্ঞান নেই। শ্রেফ প্রপাগান্ডা জোক। আর বাংলা সাহিত্যের কথা না বলাই ভাল। আন্তর্জাতিক মানের সাহিত্যে জীবনানন্দই বাংলার শেষ মোহিকান্ত। বাংলা কবিতা যাও বা কিছু হয়-উপন্যাস আর ছোটগল্পের করুন হাল।

তাহলে ছাত্র আন্দোলন থেকে আমরা অশ্বডিম্ব ছাড়া আর কি পেলাম?

আমার গোটা শিক্ষাজীবন কেটেছে আই আই টিতে-সেখানেও অরাজনৈতিক ছাত্র ইউনিয়ান (জিমখানা) আছে। ছাত্রদের দাবি নিয়ে আমরাও আন্দোলন করেছি। কিন্ত আমেরিকা কোথায় হাগুমুতু করছে, তা পরিস্কার করার দাবিতে কোন সময় নষ্ট করি নি।
আমি একথা বলছি না, ছাত্রদের বৃহত্তর রাজনীতি সচেতন হওয়ার দরকার নেই। কিন্ত সেটার জন্যে যদি, ছাত্ররাজনীতি বড় দলগুলির পুতুল নাচের স্টেজ ওয়ার্ক হয়ে ওঠে, আই আই টি আই আই এমের ফর্মাটেই ছাত্র রাজনীতি হওয়া উচিত। অর্থাৎ দাদাদিদিদের কব্জিমুক্ত হয়ে, ছাত্র ছাত্রীরা সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবেই নিজেদের কলেজ চালাক।

Wednesday, June 10, 2009

রুমানিয়ার চেসেস্কুর মতন অবস্থা হবে বাংলার কমিনিউস্টদের

১৯৮৯ সালের ২১শে ডিসেম্বর-হেলিকপ্টারে পালাচ্ছেন চেসেস্কু
As human beings, our greatness lies not so much in being able to remake the world - that is the myth of the atomic age - as in being able to remake ourselves. -Mahatma Gandhi

২২ শে ডিসেম্বর, ১৯৮৯। রুমানিয়ার কমিনিউস্ট রাজা নিকোলাস চেসেস্কু, লাখ খানেক জনগণের তাড়া খেয়ে বুদাপেস্টের রাজপ্রাসাদ থেকে হেলিকাপ্টারে পালাচ্ছেন। শেষ রক্ষা হয় নি। মিলিটারি প্লেন, কয়েক মিনিটের মধ্যেই হেলিকপ্টার ইন্টারসেপ্ট করে। ২৫ শে ডিশেম্বর ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে ঝঁজরা করে দেওয়া হল চেসেস্কু এবং তার স্ত্রী এলেনাকে। শুধু ২০ থেকে ২১ শে ডিসেম্বর, সে দেশের পুলিশ প্রায় দু হাজার গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষকে খুন করে। চেসেস্কুর ২৫ বছরে রাজত্বকালে সিক্রেট পুলিশের হাতেই মারা গেছে ১ লাখের বেশী লোক। ফলে ২৫ বছরের অত্যাচার, খুন দমন এবং নিপীড়নের শাস্তি স্বরূপ ২৩শে ডিসেম্বর, এক বিশেষ জনআদালত চেসেস্কুকে মৃত্যুদন্ডাজ্ঞা দেয়। ফায়ারিং স্কোয়াডে কে গুলি চালাবে, তার জন্যে ১০,০০০ জন স্বেচ্ছাসেবক এগিয়ে আসে-চেসেস্কুর ওপর রুমানিয়ান জনগণের রাগ ছিল এতটাই। ভাগ্যের কি করুণ পরিহাস, ওই সপ্তাহের পিপল ডেমোক্রাসিতে ( ভারতের সিপিএমের মুখপাত্র) সীতারাম ইয়েচুরী সদ্য রুমানিয়া থেকে ফিরে, লিখেছেন মহান কমিনিউস্ট নেতা চেসেস্কুর সংগ্রামী জীবন কাহিনী ( এবং আমার মনে আছে, তা বাংলায় গণশক্তিতেও প্রকাশিত হয়)।
এই মহান কমিনিউস্ট নেতা নিজে থাকতেন এক লক্ষ স্কোয়ার ফুটের বিশাল প্রাসাদে। কিন্ত প্রজাবৃন্দকে প্রবল ঠান্ডার মধ্যেও হিটার না চালিয়ে বাঁচতে হত।
রুমানিয়াতে বিদ্যুতের উৎপাদন যথেষ্টই ছিল-কিন্ত তা বেচে দেওয়া হত বিদেশে যাতে চেসেস্কু রাজপরিবারের বৈবভ এবং ব্যাঙ্ক একাউন্ট বাড়তে থাকে রুমানিয়ায় কৃষিজ উৎপাদন ছিল বেশ বেশী-কিন্ত তাও আধপেটা খেয়ে থাকত সেই দেশের জনগন, কারন মহান সমাজতান্ত্রিক নেতা আন্তর্জাতিক কালোবাজারে খাদ্য বেচে প্রিয়তমা স্ত্রী বা মিস্ট্রেসের জন্যে গহনা কিনতেন।
নতুন নতুন প্রাসাদ উপহার দিতেন তার রক্ষিতাদের।

পশ্চিম বঙ্গে যেমন মানুষের জীবনের এবং সমাজের প্রতিটা পদক্ষেপে পার্টির কতৃত্ব এবং কড়া নজর-রুমানিয়াতেও ছিল তাই। মজার ব্যাপার হল, এই চেসেস্কুই এক সময় ফ্যাসিবাদ বিরোধি ছাত্র আন্দলোনের নেতা ছিলেন। যখন ক্ষমতাই আসেন তখন বেশ জনপ্রিয় যুবনেতা চেসেস্কু। ঠিক আমাদের বর্তমান সিপিএম নেতাদের মতন-এরাও ছাত্রে অবস্থায় কংগ্রেসের অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে ষাঠ এবং সত্তরের দশকে অনেক আন্দোলন করেছেন। আর আজ ভারত বর্ষে শুধু একটি রাজ্যে দেশের সংবিধান না, পার্টির সংবিধান মেনে মানুষকে চলতে হয়। একটি ফ্যাসিস্ট শাসককুল তাদের পোষা কুকুর ছানাগুলোকে নিয়ে, কারারক্ষীদের মতন পাহারা দিচ্ছে। স্বভূমে এই ভাবেই পরাধীন আমাদের রাজ্যের লোকেরা।

যাইহৌক আবার চেসেস্কুতেই ফিরে আসি। ২২ ডিসেম্বর ছেড়ে পালানোর আগে, ২১শে ডিসেম্বর ও মনে হয় নি চেসেস্কুর পতন হবে। বেলগ্রেডের রেড স্কোয়ারে বিক্ষোভকারিদের বিরুদ্ধে গুলি চালিয়ে, তাদের হটিয়ে, কমিনিউস্ট পার্টি ক্যাডার নামিয়ে বিরাট জনসভা করে চেসেস্কুর
সমর্থনে- টিভিতে তাই দেখানো হয়। তখনো গোটা বিশ্ব বুঝতে পারে নি কমিনিউস্টদের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ কোথায় পৌঁছেছে। বহিঃবিশ্বত দূরের কথা চেসেস্কু নিজেও বোঝেন নি। নইলে ২১ তারিখেই দেশ ছেড়ে পালাতেন। কিন্ত কমিনিউস্টরা মানুষকে বলপূর্বক দাবিয়ে রেখে, বন্দুকের নলের সামনে নিজেদের সমর্থনে লোক নামিয়ে, ভাবে লোকে লাল ঝান্ডা জিন্দাবাদ বলতে বাধ্য হচ্ছে মানে, তাদের গদির হারানোর ভয় নেই!

ডিয়ায়াল উইথ রিয়ালিটি। কমিনিউস্টরা সর্বত্র এর জন্যেই বিখ্যাত-পশ্চিম বঙ্গে তাদের অন্তিম যবনিকাগুলোই বা বাদ যাবে কেন?

কাল খেজুরিতে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্ব, যেভাবে সিপিএমের ২০ট পার্টি অফিস পোড়ানো হয়েছে এবং সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি সার্চ করে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তাতে আমার প্রথমেই চেসেস্কুর শেষ দিনের কথা মনে পড়ল। খেজুরিতেও অস্ত্রবাজ পার্টির গুন্ডাগুলোকে ধরিয়ে দিয়েছে, অতীতে লাল ঝান্ডা তুলে নিতে বাধ্য হওয়া নির্যাতিত জনগণ। ২১ শে ডিসেম্বর চেসেস্কু যে লোকগুলিকে বন্দুকের নল দিয়ে নিজের সমর্থনে নামিয়েছিলেন, ২২ তারিখে পার্টির ভয় থেকে মুক্ত হয়ে, তারাই তাকে ধাওয়া করে। তৃণমুলের এই বিজয়ে, নির্যাতিত্ জনগণ বুঝেছে, সিপিএমকে আর ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ফলে আরাম্ বাগ, খেজুরী, কেশপুর-সর্বত্র যেখানে হার্মাদ বাহিনীর একচেটিয়া রাজত্ব চলত-আজকে সেসব জায়গার নির্যাতিত জনগন সিপিএমের গুন্ডাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

সিপিএমের বিরুদ্ধে যেভাবে জনরোষ ফুঁসলে উঠেছে, তাতে আমার মনে হচ্ছে ২০১১ সালের আগেই নির্বাচন হয়ে যাবে। আগামী দুই বছর সিপিএমের পক্ষে কিছু করা সম্ভব হবে না। ইচ্ছা থাকলেও না। এমন অবস্থাতে বুদ্ধদেব বাবু, সরকার ভেঙে দিলে রাজ্য এবং সিপিএম পার্টির আসু মঙ্গল। নইলে প্রতিটি লোকাল থেকে উচ্চ স্তরের নেতাদের চেসেস্কু বানিয়ে ছাড়বে জনগণ। বত্রিশ বছর এই ভাবে মানুষকে নিস্পেষন করার পর, জনগণের এই প্রতিক্রিয়া স্বতস্ফুর্ত।

কে জানে ভবিষ্যতের ইতিহাস হয়ত এটাকেই জুন বিপ্লব বলবে ।

Sunday, June 7, 2009

মমতাকি বামপন্থীদের প্রত্যাশা পূরন করতে পারবেন?

মহেশ্বতাদেবী বলছেন মমতা না কি পশ্চিম বঙ্গের একমাত্র বামপন্থী। ইস্তাহার দেখুনঃ তৃনমুলের সাথে সিপিএমের পার্থক্য শুন্য। সমাজতন্ত্র আর সংখ্যালঘু তোষনের ককটেল। তৃণমূলও বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধ। ব্যাঙ্ক থেকে ইনসুয়ারেন্সে বিদেশী বিনিয়োগ চলবে না-ডিটো সিপিএমের শ্লোগান, তাদেরও নাপসন্দ। বিগ ক্যাপিটাল, মল সংস্কৃতির বিরোধিতা করবে তৃণমুল এটি তাদের ঘোষনা। জ়োট সঙ্গী কংগ্রেস অবশ্যই আরো ব্যাপক অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও সোনিয়া গান্ধী ধীরে চলার নীতিই নিচ্ছেন। সেই জন্যেই প্রধানমন্ত্রীর পছন্দ মন্টেক সিং অর্থমন্ত্রক পেলেন না। সমাজতান্ত্রিক প্রণববাবু পেলেন এই কাঙ্খিত মন্ত্রীত্ব।

পশ্চিম বঙ্গের রাজনীতিতে এখন ডান-বাম বলে কিছু নেই। আপনি সিপিএমের ফ্যাসিজমের পক্ষে বা বিপক্ষে। লাল ফ্যাসিজম বনাম তার বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রেমী মানুষদের গণ প্রতিরোধ-এটাই পশ্চিম বঙ্গের রাজনীতির সার্বিক চিত্র। গোটা রাজ্যজুরেই গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি। ২০১১ সালের ভোটের আগে কটা লাশ পড়বে কেও জানে না।

প্রশ্ন হচ্ছে মমতা এই যে ২১০ টি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে আছেন, তা কি ধরে রাখতে পারবেন?
এই প্রশ্ন তুলছি তার কারন বাম-বাঙালীর একটা বড় অংশই মমতাকে এবার ভোট দিয়েছেন। কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার সংস্কার জোর কদমে চালালে সেই বামবাঙালীর একটা বৃহৎ অংশ আবার সিপিএমে ফিরে যেতে পারে।

অর্থনৈতিক সংস্কার ভারতে দরকার। নইলে জ়িডিপি বাড়বে না। চীনের থেকে আমরা পিছিয়ে পড়ব। হ্যাঁ, জনগন এবং জাতীয় স্বার্থ অক্ষুন্ন রেখেই সংস্কার চালিয়ে যেতে হবে। কিন্ত সমস্যা হচ্ছে পশ্চিম বঙ্গে ৩২ বছর বামপন্থী ব্রেইন ওয়াশের ফলে, একটা বিরাট বামভোট ব্যঙ্ক সিপিএম তৈরী করছে, যার একটা বড় অংশ এখন তৃণমূলে। সমাজতন্ত্রের বদলে ঠিকাদারতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা সিপিএমের কাছে তা এখন বুমেরাং। বাম বাঙালীর এই অংশটি এখনো লেনিনের স্বর্গরাজ্যের স্বপ্ন দেখেন-তা যতই নারকীয় বলে ঐতিহাসিকরা প্রমান করুন না কেন। এরা সব সংস্কারেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ভূত দেখেন। হ্যাঁ অর্থনৈতিক সংস্কারে রাশটানা দরকার-কিন্ত ম্যানুফাকচারিং সেক্টরে শিল্প আইন সংশোধন না হলে চীনের থেকে আমরা ১০০ বছর পিছিয়ে পড়ব। এসব সূক্ষ পার্থক্য বামবাঙালী বোঝে না। জাতীয় স্বার্থও তারা দেখবে না-তাদের বাইবেল লেনিনের রাষ্ট্র ও বিপ্লব।

যদ্দিন না এই সব বামপন্থী মিথগুলোকে বাঙালীর মাথা থেকে দূর করা না যাচ্ছে, মমতার উচিত এই নব্য বামভোট ব্যঙ্ককে ধরে রাখা। সমস্যা হচ্ছে এর জন্যে জাতীয় স্বার্থের ক্ষতি হবে। কিন্ত ২০১১ সালে সিপিএম আবার ক্ষমতাই থেকে গেলে বা লোকসভাতে সিপিএমের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে দেশের ক্ষতি আরো বেশী। সুতরাং দীর্ঘ স্বার্থের কথা মনে রেখে, এই নব্য বামভোট ব্যাঙ্ককে ধরে রাখার চেষ্টা করাটাই অনেক বেশী বাস্তব সম্মত পথ।

Saturday, June 6, 2009

জ্যান্ত মানুষকে মৃত রটিয়ে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে গণশক্তি

কাল গণশক্তিতে একটি সংবাদে প্রকাশ তাদের কর্মী গোবিন্দ সামন্তকে খুন করেছে তৃণমুল। এটি ছিল তাদের হেডলাইন নিউজ। এখানে দেখুনঃ
http://bangla.ganashakti.co.in/shownews.php?w=1403&h=531&year=2009&month=6&date=6&page=1&dpn=204610

আজ সকালে আজকাল ( এবং আনন্দবাজারেও দেখলাম), না উনি মার খেতে হাসপাতালে ভর্ত্তি আছেন মাত্র।http://www.aajkaal.net/report.php?hidd_report_id=113900আমি এক সিপিএম সমর্থককে, যে আমাদের তৃণমূলের দালাল বলে গালাগাল দেয়, সামন্ত ফ্যামিলির টেলিফোন নাম্বার দিতে বলেছিলাম। তৃণমূল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কেও বলুক, এটাই চাইছিলাম। কেন সে পারেনি সেটা এবার বুঝলাম।এত মারাত্মক ব্যাপার!!! শুনলাম সিপিএমের দালা ২৪ ঘণ্টা চ্যানেল ও একই ভুল করে শুধরেছে।

আমাদের ভিন্নবাসরকে বামপন্থীরা ছিন্নকাঁসর বলেন। তারা গণশক্তির এই জ্যান্ত মানুষ মারা কে কি বলবেন? এদের ত দেখছি লজ্জা শরমও নেই। একটা জ্যান্ত লোককে এই ভাবে মেরে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা---আমি ধিক্কার জানাই --সিপিএম কোন তলানিতে এসে ঠেকেছে গনশক্তির অবস্থাই তা প্রমান করছে।

এর থেকে কি প্রমান হয়? সিপিএমের উর্ধত্তন নেতৃত্ত্ব রাজনৈতিক হিংসা ছড়াতে বদ্ধকল্প। তারা চান পশ্চিম বঙ্গে রক্তের হোলি খেলা হৌক-কারন ২০১১ সালে তারা ৫০টি আসনও পাবেন না, তা তারা বুঝেছেন। তাই লেনিনের রেড টেটরের কায়দায় বিরোধিদের খুন করার খেলায় নেমেছেন। এই ধরনের মিথ্যে সংবাদ রটনোর আর কোন উদ্দেশ্য থাকতে পারে না। জ্যান্ত লোককে নিহত বলে রটিয়ে আরো তৃণমূলের কর্মীকে খুন করার ভিসা দিচ্ছে সিপিএমের কেব্দ্রীয় নেতৃত্ব।

Wednesday, June 3, 2009

পশ্চিম বঙ্গে এখন গৃহযুদ্ধ চলছে


খানাকুলে তৃণমুলনেতা যুধিষ্টির বাবু খুন হলেন। সিপিএম তাকে ছবছর গৃহছাড়া করে রেখেছিল। কিন্ত দমাতে পারেনি নরপিশাচ সিপিএমের অত্যাচারের বিরুদ্ধে তার লড়াই। ফলে অন্যান্য তৃণমুল নেতাদের ন্যায় তিনিও শহীদ হলেন। দেড়শো সিপিএম হার্মাদ বাহিনী তার বাড়ি ঘিরে কুপিয়ে রেখে গেল।

একই দিনে খবর পশ্চিম বঙ্গের প্রতিটা কলেজে এস এফ আই এর সাথে দুই ছাত্রপরিষদের সংঘর্ষ।

মুঠোর রাশ যে আলগা হয়ে আসছে-এটা বুঝতে কষ্ট হচ্ছে সিপিএম নেতা এবং ক্যাডারদের। পঞ্চায়েতের চাল-গম আর এতদিনের মৌরসীপট্টার দিন শেষ হয়ে আসছে, এটা সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী ক্রমশ বুঝছে। ফলে, লাল সন্ত্রাস এখন গোটা পশ্চিম বঙ্গেই ছড়িয়ে পরবে। এবং তার কাউন্টার রেসপন্স হিসাবে সবুজ সন্ত্রাস ও আমরা দেখব। তখন আবার সিপিএম খোকা, আমাদের মারছে বলে মায়াকান্না জুড়বে।

প্রশ্ন হচ্ছে কেন এই হিংসা? ভারতের অন্যরাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা অনেক কম। এসব কিছুরই মূলে মাথা পিছু জমি কম হয়ে আসা-কিন্ত রাজনৈতিক দলগুলি জমির ওপর বর্ধিত চাপ কমামোর জন্যে কিছুই করে নি। দায় অবশ্যই সিপিএমের। গ্রামে উৎপাদন বাড়ানো বা কুটির শিল্পের প্রসারে তাদের ভুমিকা টা ঠিক কি? ১৯৯৮ সালের পর থেকে পশ্চিম বঙ্গে কৃষির উৎপাদন প্রায় থেমে গেছে। কৃষিভিত্তিক শিল্প কোথাও গড়ে ওঠে নি। অথচ বাঁচার জন্যে এখন দ্বিগুন টাকা লাগে। আবার জনসংখ্যাও বেড়েছে। তাহলে লোকগুলো যাবে কোথায়? খাবে কি? এদিকে নেতারা নিজেদের মাইনে , ছেলে বৌদের চাকরি ঠিকই ম্যানেজ করেছেন।

হয়ত প্রতিটি কমিনিউস্ট শাসনে শেষ হয়ে এলে এমন এনার্কি-বা অরাজকতার দরকার হয়। লেনিন বলতেন রক্ত ছাড়া বিপ্লব হয় না-হয়ত একই কারনে এটাও সত্য শহীদদের বলিদান ছাড়া এই রাজ্য লাল সন্ত্রাসের হাত থেকে মুক্ত হবে না। সিপিএম নেতারা শুনছেন কি না জানি না-তবে এই রকম চললে, তৃণমুল ক্ষমতায় এলে হয় আপনাদের সবার সামনে কান ধরে তৃণমুলে যোগ দিতে হবে-নইলে বিহার বাংলাদেশে পালাতে হবে।

৩২ বছর মানুষের ওপর সিপিএম যা অত্যাচার চালিয়েছে, তারপরেও সিপিএম নেতারা যদি গনধোলাই না খেতে চাই-তাদের বাঁচার একটাই পথ। গণতন্ত্রকে প্রতিটা পদে শ্রদ্ধা করা। গণতন্ত্রের ভিত্তিটা ভেঙ্গে দিলে, এর পরে সিপিএম বলে কোন পার্টি থাকবে না। গণধোলাই এ নিশ্চিহ্ন হবে। এবং সাধারন মানুষ তাতে দুঃখ করার বদলে খুশীই হবে।

Thursday, May 21, 2009

সিপিএমের ভবিষ্যত-আদৌ আছে কি?

হঠাৎ স্ট্যালিনের ওপর করা বিবিসির ডকুমেন্টারীটা মাথায় আসল। ১৯৩৬ সালের মধ্যে, বলশেভিক বিপ্লবের সাথী সমস্ত সঙ্গীদের ( সংখ্যার বিচারে ৯২%) মৃত্যুদন্ড দিয়েছিলেন জ়োসেফ স্ট্যালিন। ইতিহাসে এই ঘটনা গ্রেটপার্জ নামে খ্যাত। স্তালিন বর্ণিত অপরাধ-এরা কমিনিউস্ট আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে, মস্কোতে ভোগবাদি নব্য বুর্জোয়া শ্রেনী তৈরী করছিলেন। ১৯১৭ সালে যারা বিপ্লবী ছিল, ১৯৩৬ সালে, ১৯ বছরের মধ্যে, তারাই নাকি নতুন বুরোক্রাটিক বুর্জোয়া ক্লাস তৈরী করেছে বলে স্ট্যালিন অভিযোগ করেছিলেন। যদিও, অন্য ইতিহাস বলে, এসবই পার্টিতে স্ট্যালিন বিরোধিদের খুন করার রাষ্ট্রীয় চক্রান্ত। সে যাক-সেই ইতিহাস আমাদের পশ্চিম বঙ্গে রিপিট করছে কি না-সেটা নিয়েই এই লেখা।

৩২ বছরে পার্টির নেতাদের চরিত্র কেমন বদলেছে? ১৯৭৭ সালে যারা পার্টির নেতৃত্বে ছিলেন গ্রামের দিকে- তাদের সবাই স্কুল শিক্ষক। দেশভাগের ফলে ওপার বাংলা থেকে এসে উদবাস্তুর জীবনসংগ্রামে উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা। তত্ত্ব বলতে সম্বল মার্ক্সবাদ লেনিনবাদের দু চারিটি চটি বই-কিন্ত দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করে জীবনের অভিজ্ঞতা অনেক বেশী। বাংলাদেশ থেকে এসে লড়াই করার সেই কঠিন অভিজ্ঞতা নিয়েই পশ্চিম বঙ্গে সিপিএমকে ইনারা দাঁড় করিয়েছিলেন। মার্ক্সবাদ, লেনিনবাদ বোঝার চেষ্টা তারা করেন নি-জীবনের অভিজ্ঞতায় তাদের চিনিয়েছিল শ্রেনীতত্ত্ব। আর দেশভাগের জন্যে ছিল কংগ্রেসের ওপদ অদম্য রাগ সেই ১৯৪৭ সাল থেকে। এটাই ছিল তখন সিপিএমের নেতৃত্বের ভিত্তি। কয়েকশো টাকা শিক্ষকদের বেতন-তাও নিয়মিত দিত না কংগ্রেস সরকার।

সোভিয়েত ইউনিয়ান তখন তাদের চোখে স্বর্গরাজ্য। বাংলায় বিনা পয়সায়, খুব দামী কাগজের সোভিয়েত ইউনিয়ানের পত্রিকা গুলো আসত। গ্লসি পেপার। দারুন প্রিন্টিং। সুন্দর সুন্দর হাসপাতাল, স্কুল আর শিল্পের ছবি। পৃথিবীর বুকে স্বর্গের ডাক। নাম স্যোশালিজম।

১৯৮৫ সাল থেকেই বিপদটা আসছিল। আমার মামার বাড়ি কালনায়। কালনা থেকে হাওড়া যেতে দুদিকে দেখতাম দাঁড়িয়ে আছে ভাঙা কারশেড। শিয়ালদাহ থেকে কৃষ্ণ নগরে আসতেও দুদিকে শুধু বন্ধ জুটমিল। কলকাতা শহরতলি তখন শিল্প শ্বশান।

আসলে যারা সিপিএমের নেতৃত্ব তখন ছিলেন-তাদের কেওই ব্যাবসার সাথে যুক্ত ছিলেন না। ফলে অর্থনীতি এবং ব্যাবসা ব্যাপারটা এরা তখন একদম বুঝতেন না। মনে করতেন সরকারি উদ্যোগে সব হয়। ফলে সীমিত ক্ষমতার মধ্যে জীবিকা তৈরীর জন্যে পশ্চিম বঙ্গ সরকার জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ-অনেক ব্যাবসা শুরু করল-এবং সেগুলো চলার আগেই রুগ্ন হয়ে গেল। সরকার রেস্টুরেন্ট বা টুরিস্ট ব্যাবসা চালাতে গেলে যা হয় আর কি। না-ওই ভাবে পশ্চিমবঙ্গে জীবিকা সংস্থান করা গেল না।

কারখানা বন্ধ। কর্পরেট অফিস কোলকাতা থেকে উঠে মুম্বাই চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে লোকেরা এসেই চলেছে এবং সিপিএমের দাক্ষিন্য তারা রেশন কার্ড করে এ দেশের নাগরিক ও হয়ে যাচ্ছে। নব্বইএর দশকে গোটা পশ্চিম বঙ্গ আটকে গেল। ১৯৭৭ সালে পশ্চিম বঙ্গ শিল্পে চতুর্থ-১৯৮৬ সালে মাত্র ন বছর সিপিএম শাসনে নেমে গেল শেষের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে। নিজেদের ব্যার্থতা ঢাকতে মোড়ে মোড়ে সিপিএমের বাহিনী ( তখনো হার্মাদ বাহিনী হয় নি) মাইকে করে কেন্দ্রের বঞ্চনা গাইত। ভূমি সংস্কারের ফলে গ্রামে তখনো সিপিএম প্রবল জনপ্রিয়-কিন্ত কংগ্রেস মরে যায় নি। বরং ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ইন্দিরার মৃত্যুর সময় কংগ্রেস ১৬ টি আসন পেলেও, সংখ্যার বিচারে সিপিএমের থেকে বেশী ভোট পেয়েছিল। ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধীর মৃত্যু বাংলার বিরোধি রাজনীতিকে ১৫ বছর পিছিয়ে দেয়। রাজীব গান্ধীর মৃত্যু না হলে, ১৯৯৫-৯৭ সালেই সিপিএমের শেষ ঘণ্টা বেজে যেত।

কিন্তু রাজীবের মৃত্যুর পর বাংলার বিরোধি রাজনীতির দুর্দিন ঘনিয়ে আসে। সোনিয়া গান্ধী না হাল ধরা পর্যন্ত, কিছু নেতাদের বালখিল্যতায় কংগ্রেস ধ্বংশ হতে থাকে। পশ্চিম বঙ্গের কিছু কংগ্রেস নেতা সিপিএমের সাথে আঁতাত করে। কংগ্রেসে সিপিএমের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাবে না দেখে মমতা ব্যানার্জী তৃণমুল গঠন করেন। এই সময় এই নতুন দলটির বিজেপির খুব প্রয়োজন ছিল। তারা মমতাকে বিপুল অর্থ যোগায় প্রাথমিক ভাবে তৃণমূলকে দাঁড় করানোর জন্যে। বিজেপির সাথে তৃণমূল চলে যাওয়ায়, সিপিমের আরো সুবিধা হয়-কারন এতে সংখ্যালঘু ভোট সিপিএমে নিশ্চিত হয়।

১৯৯৫ সাল থেকে রাজ্য রাজনীতিতে জমি দখলের জন্য তীব্র হিংসার সূচনা হয়। এটা এক মাত্র নিও-ম্যালথেসিয়ান তত্ত্ব দিয়েই বোঝা যাবে। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত পশ্চিম বঙ্গের জনসংখ্যা বেড়েছে ৭৮% ( যার প্রায় সবটাই গ্রামে এবং সংখ্যালঘুদের মধ্যে)-কিন্ত পতিত জমি থেকে কৃষিজমি বেড়েছে মোটে ৬%। অর্থাৎ আগে যেখানে গ্রামে জনপ্রতি 0.34 একরে জীবিকা নির্বাহ করতে হত, ১৯৯৫ সাল সেটা নেমে এল 0.21 একরে। গ্রামের মানুষের চাহিদা বাড়ল-কিন্ত উপায় কমল। ফলে ভূমিহীন ডেইলি লেবারে সংখ্যা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিম বঙ্গে বাড়ল সব থেকে বেশী।

শিল্প নেই-অথচ গ্রামে ভূমিহীন কৃষকদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে ৯০এর দশকে। ফলে ভারতের অন্যান্য রাজ্যে যেখানে কৃষি মজুরীর পরিমান ১৯৮০ সালের রোজ ১০ টাকা হিসাব থেকে ২০০৭ সালে ৯০-১২০টাকা হল, আমাদের রাজ্যে হয়েছে ৫০-৭০ টাকা। গুজরাটে যেখানে কৃষি শ্রমিকরা বছরে ৯০ দিন কাজ পায়, আমাদের রাজ্যে পেল মোটে ২০-৩০ দিন।

এই আর্থ সামাজিক পরিপেক্ষিতেই আমাদের কেশপুর, নন্দীগ্রাম -সিঙ্গুর বুঝতে হবে। সিঙ্গুরে যাদের জমি ছিল-তাদের প্রচুর লাভ হয়েছে-কিন্ত সিপিএমের শিল্পায়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল ভূমিহীন, শিক্ষাহীন এই প্রান্তিক লেবাররা।

সিপিএমের নেতৃত্বের এর মধ্যে গুণগত পরিবর্ত্তন হয়েছে। যারা কম্প্রোমাইজ করতে পারেন নি-বেড়িয়ে গেছেন। গ্রাম থেকে শহর সর্বত্রই সিপিএম নেতাদের ভাল বাড়ি হতে লাগল। সরকারি চাকরি একমাত্র তাদের ফ্যামিলির লোকদের জন্যেই বরাদ্দ। বুদ্ধদেব বাবু শিল্প বন্ধু ইমেজ নেওয়ার পর, মধ্যবিত্ত্ব শ্রেনীর সমর্থন ও সিপিএম পেল। কিন্ত পার্টির নেতৃত্ব ভুলে গেল বছরে কুড়িদিন কাজ পাওয়া লোকেদের কথা-

কেন ভুলে গেল? কারন যারা পার্টিতে টিকে ছিল বা সদ্য ঢুকেছিল তাদের শ্রেণী চরিত্র বিশ্লেষন করা দরকার-সবার ধান্দা দুটো কামিয়ে নেওয়া। উদাহরন দিচ্ছি। ১৯৯৬ সালে এস এফ আই এর স্টেট কমিটির এক নেতা আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন-পার্টির হোলটাইমার ও ছিলেন। '৯৮ সালে দেখা হল। এর মধ্যে তিনি যে মেয়েটিকে তিনি ভালবাসতেন তাকে প্রাথমিক স্কুলে ঠিক ঢুকিয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, পুরীতে তার হনিমুন করার টাকাটাও এক স্থানীয় মারোয়ারী দিয়েছে-কারন মিউনিসিপালিটির স্থানীয় কাউন্সিলার তখন তিনি। ছেলেটি কি খুব অসৎ ছিল? আমার একবারও মনে হয় নি-ওর জাস্ট মনে হয়েছে লোকে দিচ্ছে, নিতে ক্ষতি কি? অথচ আমি দেখেছি এই ছেলেটিই এক সময় মাসে মাত্র ৮০০ টাকা হোলটাইমার মাইনে সম্বল করে পাঁশকুড়া পার্টি অফিসে কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে থাকত। আস্তে আস্তে প্রতিটা পার্টি অফিসের নির্বাচনে স্থানীয় ব্যাবসায়ী এবং কনট্রাক্টরদের ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে। মেদিনীপুরে জোনাল এবং লোকাল নির্বাচনে পুলিশ লাগত-কারন খুনোখুনি হত। কিসের জন্যে লোক্যাল কমিটির নির্বাচনে খুনোখুনি? শুধুই ক্ষমতা? না। আসলে জিতলে জেলাতে যে শিল্প বা ব্যাবসা করতে আসবে, তার কাছ থেকে কিছু কামিয়ে নেওয়ার ধান্দা। ফলে ১৯৯৮ সালেই পার্টি দরিদ্র জনসাধারন থেকে বিচ্ছিন্ন-তাদের নতুন ভোটার বেস ফুলে ফেঁপে ওঠা নেতাদের ফ্যামিলি এবং বাঙালী মধ্যবিত্ত।

সিপিমের বিরুদ্ধে মানুষের রাগ কিন্ত ভোটে প্রতিফলিত হয় নি। কারন বিজেপির সাথে থাকায় সংখ্যালঘু ভোট মমতা পাচ্ছিলেন না। গ্রামে কংগ্রেসের সংগঠন নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়-সেখানে চলে পার্টির নিরবিচ্ছিন্ন ডিক্টেটর শিপ। একটু অন্যসূরে গাইলেই বাড়ি পোড়ানো, মেয়েদের ধর্ষন সিপিএমের ক্যাডাররা চালিয়েছে। পশ্চিম বঙ্গে পুলিশ প্রশাসন সব কিছুই পার্টির দখলে-ফলে পার্টির স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কেও ছিল না।

কিন্ত প্রশ্ন হচ্ছে এই অধঃপতনকে নেতারা শীর্ষ স্থানীয় নেতারা প্রশ্রয় দিলেন কেন? একদম হাতে নাতে ধরা পড়লে কিছু লোককে তাড়ানো হয়েছে-কিন্ত তাতে কি? সেত ভাসমান হিমশৈলের ওপরটাও না।

কেন নেতারা এই অধপতন আটকালেন না? আরে তারা নিজেরাই ত চূড়ান্ত অধঃপতিত তখন। প্রতিটা নেতা নিজের ছেলে, বৌমাদের চাকরি-ব্যাবসা ইত্যাদিতেই সময় দিতেন বেশী। পশ্চিম বঙ্গ ডুবছিল সব দিক দিয়ে-তাতেও তাদের মাথায় চিন্তা গজায় নি। কারন সংখ্যালঘু ভোটের নিশ্চয়তা ছিল। ২০০১ সাল থেকে দলে দলে গ্রামের বেকার ছেলেরা অন্যরাজ্যে পাড়ি জমায়। এর ফলে পশ্চিম বঙ্গের গ্রামীন অর্থনীতি যেমন চাঙ্গা হয়-ঠিক তেমনি, গ্রামের লোকেরা প্রথমবারের মতন শোনে অন্যান্য রাজ্য পশ্চিম বঙ্গ থেকে কত এগিয়ে। পশ্চিম বঙ্গ অন্যান্য রাজ্য থেকে এগিয়ে-এই ধাপ্পাবাজি ধরে ফেলে গ্রামের লোকেরা এই সব বহিরাগত যুবকদের অভিজ্ঞতা থেকে। আমাদের রাজ্যে রাজমিস্ত্রীর রোজ ১২০টাকা-কেরালাতে ৪০০টাকা, মহারাষ্ট্রে ৩২০টাকা। এইসব তথ্য গ্রামে ঠিকই পৌছায়। ফলে ধাপ্পাবাজি চাপা থাকে না।

এর পরে ১৬-১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং সহ্য করে যখন পাড়ার নেতারা মাইকে ফুঁকদেন, এই রাজ্য বিদ্যুতে দ্বিতীয়-তখন কাটা ঘায়ে নুনে ছিটে পড়ে জনসাধারনের। ক্ষুদ্র শিল্পের মালিকদের করুন অবস্থা এই রাজ্যে। আমার জেঠামশাই গ্রামে তেল-চাল-গমকল চালান। তাদের ইনকাম উত্তোরোত্তর কমেছে। তারপরে লোডশেডিং এর জন্যে ব্যাবসায় বিশাল ক্ষতি হয়। যাদের জমি আছে-ডিজেল পুড়িয়ে জল দিতে হচ্ছে-কারন বিদ্যুত নেই। জল-সারে এত খরচ হলে, লেবারদের টাকা দেবে কোত্থেকে? ফলে কৃষির সাথে যুক্ত এক বিশাল জনসংখ্যা এই রাজ্যে ভয়ংকর ক্ষতির সম্মুখীন। তাদের কথা ভাবার মতন পার্টিতে কেও নেই। থাকলে আমরা দেখতাম সরকার কৃষিতে জল এবং বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের জন্যে কি পদক্ষেপ নিচ্ছে। কি করে থাকবে? নেতাদের ত একটাই ধান্দা-তার নিজের বা ছেলের ব্যাবসা বা চাকরী।

নন্দীগ্রাম বা সিঙ্গুর নিয়ে অনেক শহুরে বাবু লাফাচ্ছে। আমি নিজে নদীয়া মুর্শিদাবাদে অনেক চাষিদের প্রশ্ন করেছি-তারা কি ভাবছেন। না-তারা নন্দীগ্রাম নিয়ে ভাবেন নি। ন্যানো নিয়েও নয়। আমেরিকা-ভারত নিউক্লিয়ার চুক্তি নিয়েও না। কংগ্রেসের হাওয়া ফাওয়া কিস্যু ছিল না।

তারা বিরাট বিপর্যয়ের সম্মুখীন বিদ্যুত এবং জলের অভাবে। অনেকে জমিতে আম কাঁঠাল বাগান করে দিচ্ছেন। কারন চাষ করে লাভের সম্ভাবনা নেই। তার থেকে লোকসান না খেয়ে, যা দুপয়সা আসে। কিন্ত তাদের ইনকাম সাংঘাতিক ভাবে কমে গেছে। রোগ হলে চিকিৎসা করার পয়সা নেই। আর তাদের বাড়ির পাশেই নেতাদের তিনতালা বাড়ী উঠেছে।

অর্থাৎ পার্টির সামনে এখন সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে রাজ্যে উৎপাদনের সমস্যা। পশ্চিম বঙ্গে এখন সবাই সেকুলার। মুসলিম ভোট আর ওভাবে পাওয়া যাবে না। তাদের প্রায় সবাই ভূমিহীন শ্রমিক। উৎপাদন কি ভাবে বাড়াতে হয়-সেটা লেনিনবাদে লেখা নেই! ফলে এই মুহুর্তে তারা যদি রাজ্যে বিদ্যুত জল, রাস্তা, কৃষকদের জন্যে ক্ষুদ্র ঋণ ইত্যাদি নিয়ে না ঝাঁপিয়ে পড়েন, তাহলে ২০১১ সালের ভোটে ৩০টা সিট ও উনারা পাবেন না। উচিত ও না।

প্রশ্ন হচ্ছে সিপিএমের কোন নেতা এই কাজ করবে? প্রকাশ কারাত থেকে নীচু স্থানীয় সব নেতাই নিজের ধান্দা নিয়ে ব্যাস্ত!

Tuesday, May 19, 2009

মিঃ কারাত, সিপিএমকে আর কত ডোবাবেন?

ইউ পি এ ট্যালি এখন ৩১৪!
কি বিপদ, ভোটের আগে কংগ্রেসকে গালি দিয়ে, এখন কংগ্রেসের পা চাটছে, তৃতীয় ফ্রন্টের সব হনুয়ালাপ্রধান মন্ত্রীরা। মন্ত্রী না হৌক সান্ত্রী হলেও শান্তি।এসবই মুসলমান ভোটের জন্যে। কংগ্রেসের সাথে না গেলে মুসলিম ভোট পাবে না সেই জন্যে। বিজেপিকে সবাই ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছে। এটাই সুযোগ ছিল বামপন্থীদের কাছে নিজেদের বাড়ানোর জন্যে। উলটে তারা ছোট হয়ে গেল! প্রকাশ কারাতের মতন মাথাহীন স্কন্ধ পার্টির ওপরে থাকলে যা হয়।

অর্থাৎ এই নির্বাচনে সব আঞ্চলিকনেতারা বুঝলেন মুসলমান ভোট ছাড়া উপায় নেই। তাই কংগ্রেসের সাথে না থাকলেও উপায় নেই। ফলে কংগ্রেসের আর সোনিয়ার দশপুরুষ উদ্ধার করার পর এখন ১০ জনপথে তাদের লাইন।

এটাই হতে পারত সিপিএমের সেই সুযোগ। কংগ্রেসের বিরোধি হিসাবে নিজেদের সব রাজ্যে প্রতিষ্ঠা করা। সেগুড়ে বালি, প্রকাশ কারাত তার থেকে মায়াবতি বা জয়ার সাথে ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড পছন্দ করেন বেশী। মায়া, জ়য়া আবার পাকা খিলাড়ি! তারাও শক্তিমান পার্টনার ছাড়া বিছানায় যাওয়া পছন্দ করেন না। ফলে প্রাত্তন প্রেমিক প্রকাশকে ফেলে, উনারা এখন দশজন পথের জানালায় একটু উঁকি মারছে, যদি কংগ্রেসের ক্ষমতার বিছানায় আর কোন প্রেমিকা লাগে! জনগনের ভারতীয় পেটে কি আর এই সব প্লেবয় দের সহ্য হয়! ফলে পরকীয়া করতে গিয়ে একুল ওকুল দুক্লল ভাসায়ে সেক্রেটারী জেনারেল এখন পার্টির পরকালের অপেক্ষায়।প্রকাশ কারাতকে যেহেতু সিপিএম সরালো না। বামপন্থি মনোভাবা সম্পন্ন সবার উচিত, সিপি এমকে বাদ দিয়ে নিজেদের জোট করে, আগামী নির্বাচনে লড়া। বিজেপি প্রায় অপ্রাসঙ্গিক । এটাই ত সুযোগ, কংগ্রেসের বাম বিকল্প দাঁড় করানো।

Sunday, May 17, 2009

রাজ্যে সিপিএম সরকারকে কি এখনই তাড়ানো উচিত?



পশ্চিম বঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারকে এখনই ফেলে দিতে চাইছেন অত্যুতসাহী তৃণমুলের সমর্থকরা এই চাওয়ার মধ্যে নৈতিক অন্যায় কিছু নেই সিপিএম ভারতীয় সংবিধান মানে না পশ্চিম বঙ্গে পার্টির সংবিধান চলে তাদের মহান নেতা লেনিন এবং স্ট্যালিন রেড ফাসিজমে বিশ্বাস করতেন-এবং মানুষ খুন করা এই দলের কাছে হারাম না-বিপ্লবী কর্মযজ্ঞ লেনিন ১৯১৭ সালের নভেম্বর মাসে ভোটে হারার পর পার্লামেন্ট ভেঙে দেন বিরোধিদের খুন করা শুরু করে যা রাশিয়ার ইতিহাসে লাল সন্ত্রাস নামে কুখত্যাত গণতন্ত্রের সেই ধ্বংশ যজ্ঞকেই কমিনিউস্টরা মহান নভেম্বর বিপ্লব নাম দিয়ে প্রতি বছর পালন করেন সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতি তীব্র ঘৃণা-আবার সেই পার্লেমেন্টারী পদ্ধতির ঘি খেয়ে ফুলে ফেঁপে ওঠা নেতাগনের বিরোধি খুন করার লেনিনিস্ট রাজনীতি ইতিহাসের নিয়মেই আস্তাকুঁড়ে যেত আজ ১৬ই মে, ২০০৯ সালে সেই পক্রিয়াতেই সিল মোহর পড়ল এখন ভোট হলে তৃণমুল জোট ২১০টি আসন পাবে একথা নিশ্চিত এবং ভারতীয় গণতন্ত্রে অবিশ্বাসী সিপিএমকে উৎখাত করার মধ্যে কোন নীতিহীনতাও খুঁজে পাওয়া যাবে না আমেরিকাতে কোন পার্টিকে ভোটে লড়তে দেওয়া হয় না যারা আমেরিকান সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ নয় হ্যাঁ প্রকাশ কারাতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ভারতীয় সংবিধানকে রক্ষা করার শপথ ও নেন-আবার তাদের নিজের দলের স্পীকারকেও তাড়ান যার একমাত্র অপরাধ তিনি ভারতীয় সংবিধানকে পার্টির ওপরে স্থান দেন পশ্চিম বঙ্গের পুলিশ ভারতীয় সংবিধান নয়-পার্টির নেতাদের কথা অনুযায়ী কাজ করে এমত অবস্থাতে পশ্চিম বঙ্গ থেকে সিপিএম সরকারকে উচ্ছেদ করা, খুবই আইন সঙ্গত এবং নৈতিক কাজ

কিন্তু তবুও আমি বলব ২০১১ সালেই নির্বাচন হৌক বিরোধিরা এখনো ৪-৫টিজেলাতে সাংগঠনিক দিক দিয়ে দুর্বল এই সময়টাতে মমতার দল দিল্লীতে মন্ত্রীত্ব নিয়ে পশ্চিম বঙ্গের জন্যে কিছু করে-জনগণকে প্রমান দিক, তারা নতুন বাংলা গড়বে ওইসব জেলা গুলিতে সংগঠন তৈরী করুক এখন ভোট হলে বিরোধিরা ২১০ মতন সিট পাবে-২০১১ সালে ভোট হলে আমার ধারনা লেফট ফ্রন্ট ৫০টাও পাবে না যদি এরমধ্যে মমতা ভাল কাজ দেখাতে পারেন

একটি গণতান্ত্রিক খুনী রাজনৈতিক দলকে মুছে দিতে, অগনতান্ত্রিক পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া উচিত নাগনতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই সিপিএমের দ্বিচারিতা, অগণতান্ত্রিক নীতিকে শুইয়ে দিতে হবে-যা রাজ্যের জনগণ দিয়েছেন আমি এই ব্যাপারে মহত্মা গান্ধীর কথা সবাইকে স্বরণ করাবো হিংসাত্মক বিজয়, আরো বেশী হিংসাকে ডেকে আনে সিপিএমের লোকেদের প্রতি হিংসা পরায়ন আচরন থেকে কংগ্রেসের ভাইরা বিরত থাকুন মনে রাখবেন কংগ্রেসের ভিত্তি গান্ধীবাদ-যার মুল কথাই হল সিস্টেমের প্রতি ঘৃণা-মানুষের প্রতি না হ্যাঁ কমিনিউজমকে ঘৃণা করুন-যে আদর্শ গোটা পৃথিবীতে চূড়ান্ত সর্বনাশ ছাড়া কিছুই আনে নি-সোনার বাংলাকে শ্বসান বাংলা বানিয়েছে-গোটা পশ্চিম বাংলাকে পার্টির হাতে জেলের কারাগার বানিয়েছে কিন্তু কমিনিউস্টদের ঘৃণা করবেন না-কারন তারাও আমাদের মতন মানুষ-গান্ধীর ভাষায় পথ হারানো মানুষ যারা মনুষ্যত্ব ভুলে মানুষকে অত্যাচার করাকে নিজেদের রাজনৈতিক পথ হিসাবে বেছে নিয়েছে তাদের যাতে আধ্যাত্মিক উন্নতি হয়-সেটাই আমাদের জন্যে, সমাজের জন্য কাম্য পৃথিবীর ইতিহাসে এমন অত্যাচারী শাসক কুল বারবার এসেছে-জনগণ তাদের আস্তাকুঁড়ে ফেলেও দিয়েছে এ রাজ্যেও দেবে সেই দিনের সুপষ্ট সুবাস আমরা সবাই ১৬ই মে পেয়েছি তাই ধৈর্য্য ধরুন-সিপিএম সরকারকে ফেলে ওদের শহীদ হতে দেবেন না ওরা শহীদ হওয়ার ও যোগ্য না জনগনের হাতে ওদের শাস্তি পেতে দিন সেই শাস্তিদন্ড নিজেদের হাতে তুলে নেবেন না

Saturday, May 16, 2009

নির্বাচনী রেডীও আলোচনা

আমাদের রেডিও আলোচনা চলছে

[১] কেন রাজ্যভিত্তিক ইস্যু চলছে?
http://ishare.rediff.com/music/bengali/election1/618566
[২] সিপিএমের হারার কারন?
http://ishare.rediff.com/music/bengali/cpm-keno-harche/618585

[৩] তৃণমুল কেন জিতছে?
http://ishare.rediff.com/music/bengali/mamataknojitchen/618590

[৪] প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপদাকে প্রশ্ন করছেন সোমনাথ, বাঘ

http://ishare.rediff.com/music/bengali/pcc-president-pradipda-speaking/618593

Tuesday, May 12, 2009

সেলিমের লোকজন বিজেপির এজেন্টের কাজ করছে ভোট কাটার আশায়

ভোট বড় বিষম বস্তু প্রমাণ করলেন সিপিএমের নেতৃত্ব। কোলকাতা উত্তরে জেতার জন্যে সেলিমের একমাত্র ভরসা বিজেপির তথাগত যদি সুদীপের ভোট কাটতে পাড়েন। কিন্ত বিজেপির এবার ত কিছুই নাই-না হাওয়া, না সংখ্যা, না সমর্থক। অগত্যা মহম্মদ সেলিম তার বাড়তি ছেলেদের নির্দেশ দিয়চছেন বিজেপির এজেন্ট হয়ে বসতে-যাতে লোকে কিছুটা ভোট বিজেপিকে দেয়।

সকালে আমাদের সংবাদদাতা শ্যামনগর বিধান সভা কেন্দ্রের ৪৫ এবং ৪৫ এ বুথ থেকে জানাচ্ছেন এখানে বাইরে থেকে ক্যাডার এনে তাদের বিজেপির এজেন্ট করে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন একজন পরিচিত লোকাল ক্যাডার কুমার রায়। তিনি অবশ্য মানছেন না মহম্মদ সেলিম তাকে এই কাজ দিয়েছে-তার বক্তব্য বিজেপি তাকে টাকা দিয়েছে বুথে বসার জন্যে। কিন্ত আমাদের সাংবাদিকরা শ্যামনগরের অন্যান্য বুথেও সিপিএমের ক্যাডারদের বিজেপির হয়ে কাজ করতে দেখেছেন।

একেই বলে ভোট সর্বস্ব রাজনীতি। যার জন্যে মহম্মদ সেলিমকে হনুমান বাবার চরণামৃত খাওয়া থেকে বিজেপিকে এজেন্ট সাপ্লাই-বিজাতীয় সবকাজকেই 'সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব' সাধনের উদ্দেশ্যে করতে হয়। বিমান বাবু শুধু মুখেই বলেন-তাদের সেলিম বা তড়িৎ তরফদারের ফটো লে আউট রাস্তায় কমে না। বাড়তেই থাকে।

Saturday, March 21, 2009

সইফুদ্দিন না কবীর সুমন?

সইফুদ্দিন চৌধুরী যাদবপুরে পার্থী হওয়াই অনেক বিরোধি বন্ধুরাই স্পস্টত ক্রুদ্ধ। কেও কেও কুৎসা রটাচ্ছেন সিপিএমের টাকা খেয়ে সইফুদ্দিন পার্থী হয়েছেন যাতে সিপিএমের সুবিধা হয়। কি আনন্দের কথা-একজন লোক যে সিপিএমের তিনবারের এম পি ছিলেন-বাঁধা ছিল নিশ্চিত পলিটবুরোর সদস্যপদ-তিনি সেইসব ছেড়ে দিয়ে আদর্শের প্রশ্নে, সিপিএমের অগণতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষনা করে নতুন পথের নতুন দল তৈরী করলেন। আর আজ বলা হচ্ছে তিনি সিপিএমের টাকা খেয়েছেন? শুধু যারা তৃণমূল করে তারাই একমাত্র সিপিএম বিরোধি? সিপিএম বিরোধিতাকি মমতার খাস তালুক না কি?

একটা কথা সিপিএম এবং তৃণমূলের 'সমর্থক' দের পরিস্কার জানা উচিত। কজন সি পিএম কে চাই?
১৫%? ২০%--সংখ্যাটা ২৫% বেশী হওয়া সম্ভব না। বাকী ২৫% বামফ্রন্টকে ভোট দিতে বাধ্য হয়-তাদের পছন্দ করে বলে এই ভোট দেয় না। তার কারন, তারা বিরোধিদের আরো বেশী অপদার্থ বলে মনে করে। আর কজন বঙ্গবাসী তৃণমূলকে পছন্দ করে? মমতাকে পছন্দ করে? সংখ্যাটা ১০% এর বেশী? আমি খুব জোর গলায় বলবো-তারও কম। কিন্তু তাও মমতার দল ইদানিং বিপুল ভোটে জিতছেন। কারন সিপিএমের আত্মরম্ভিকতা এবং অগণতান্ত্রিকতায়-সাধারন মানুষের চারিদিকে যে চক্রব্যুহ তৈরী হয়েছে-তার থেকে সাধারন মানুষ মুক্তি চাইছে।

এর পরেও বলব, মমতা এবং সিপিএমকে ঘৃণা করে এমন বাঙালীর সংখ্যা ৫০% এর বেশী। এরাই সাধারন বাঙালী। এই তৃতীয় শক্তির জায়গাটা কংগ্রেস নিতে পারত-কিন্ত দিল্লীদের নেতাদের অপরিনামদর্শিতায় নিতে পারল না। পি ডিএস ও নিতে পারত। কিন্তু সমীরবাবু মমতার আঁচল ধরে থেকে পার্টির অস্তিত্বই ঝুলিয়ে দিলেন। সংখ্যাধিক্য যে বাঙালী-যারা চাইছিল অহিংসার রাজনীতি-উন্নতির রাজনীতি-গণতন্ত্রের রাজনীতি-তাদের প্রতিনিধিত্ব করার কেও রইল না বাংলায়। পড়ে রইল, সিপিএমের অগণতান্ত্রিকতার সাথে মমতার উন্নয়ন বিরোধি আন্দোলনের ফলে কৃত এক শ্বশান বঙ্গ।

এর পরেও আমাকে মানতে হবে সইফুদ্দুন চৌধুরীর মতন পার্থীদের প্রাসঙ্গিকতা নেই? যিনি মমতা এবং সিপিএমের থেকে সমান দূরত্বে থেকে গণতন্ত্র, অহিংসা এবং উন্নয়নের রাজনীতির প্রতীক হিসাবে দাঁড়াতে চাইছেন? যারা মমতা এবং সিপিএম -উভয়কেই চান না-তারা সইফুদ্দিনকে ভোট দিয়ে তাদের নীরব প্রতিবাদ জানাবেন সেইসব ক্ষমতালোভি হাঙরদের বিরুদ্ধে যাদের জন্যে পশ্চিম বাংলার আজ এই হাল।

জনগণের প্রতি সেই দৃঢ় বিশ্বাস আমার আছে।

যাদবপুরের মানুষ কাকে ভোট দেবেন তাদের ব্যাপার। আমার নিজের কেন্দ্র কৃষ্ণনগর। ভোট দেওয়ার জন্যেই আমি আমেরিকা থেকে ভারতে আসছি-কারন তখন পর্যন্ত জানতাম ওখানে কংগ্রেস দাঁড়াবে। এখন বুথে যাব-এবং সংবিধানের ৪৯ ধারা মেনে কাওকে ভোট না দেওয়ার অধিকার প্রয়োগ করব। সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে ভোট নষ্ট সেটা আগেই বলেছি। তাপস পালকে ভোট দেব কেন? উনি ওই অঞ্চলের সমস্যা নিয়ে কি জানেন? কটা নদী মারা গেছে আমাকে বলতে পারবেন? বৃটিশ আমলের পর একটাও খাল কাটা হয় নি-একটাও ব্রীজ তৈরী হয় নি-বন্যা হলে এখন ভেসে যায়। মমতার একদিন মনে হলে ওখানে তাপস পালকে দাঁড় করানো হৌক -টিকিট দিয়ে দিলেন। চাপিয়ে দিলেন স্থানীয় মানুষদের ওপরে। যেভাবে ওই এলাকাতে আগে সিপিএম দীর্ঘদিন অজয় মুখার্জী বলে এক অপদার্থ এম পি কে রেখেছিল-যিনি স্থানীয় লোক ছিলেন না। অজয় বাবু সম্মন্ধে এই কথা বলতে খুব খারাপ লাগছে-আমার ছোটদাদু উনার আপ্ত সহায়ক ছিলেন বহুদিন। সেই সুত্রে অনেকবার দেখা হয়েছে। কিন্তু চাপিয়ে দেওয়া পার্থীরা এই এলাকার জন্যে কিছুই করে নি।

আসলে অধিকাংশ জনগনই বোঝে সিপিএমের আদর্শের বুলিও যেমন ফানুস-তৃণমূলের সিপিএম বিরোধিতাও ততটাই অন্তসারশুন্য -পশ্চিম বঙ্গের জন্যে আরো ভয়ংঙ্কর। তৃণমূল এবং সিপিএমের আসল খেলাটা ক্ষমতার। সেই জন্যেই এত হিংসা চারিদিকে। এর থেকে মুক্তির জন্যে-নিদেন পক্ষে এদের ক্ষমতার রাশে টান ধরতে জনগনের তৃতীয় শক্তিকে প্রতিষ্ঠা করার ভীষন দরকার আজ পশ্চিম বঙ্গে। সইফুদ্দিন চৌধুরী যদি ভালো ভোট টানতে পারেন-তাহলেই বোঝা যাবে এক বৃহৎ অংশের জনগন মমতার ক্ষমতালোভি ভোট সর্বস্ব বিরোধিতাকে বর্জন করেছে। বোঝা যাবে তারা সদার্থক বিরোধিতা দেখতে চাইছে। এই তৃতীয়শক্তির পথ ছাড়া --মমতার উন্নয়ন বিরোধি রাজনীতি-যা পশ্চিম বঙ্গকে সোনার বাংলা থেকে কানার বাংলা বানাচ্ছে-তার থেকে মুক্তির পথ নেই। বিরোধি রাজনীতির নামে তৃণমূলের ধ্বংশাত্মক রাজনীতিকে আটকানোর একটাই পথ-তাদের বিকল্পকেও শক্তিশালী করা-যাতে মমতা বুঝতে পারেন দ্বায়িত্বজ্ঞানহীন বিরোধিতা করলে, তার রাজনৈতিক অস্তিত্বও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

পশ্চিম বঙ্গের জনগণ যেন সর্বদা স্মরণে রাখেন-সিপিএমের যে অগণতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে তাদের যাবতীয় ক্ষোভ-সেটা তৃণমূল মসনদে আসলেই মিটে যাবে- এমন আশা করা মুর্খামি। কারন মমতা ব্যানার্জির পার্টিতে কোন গণতন্ত্র নেই। তৃণমূল একটি ফ্যাশিস্ট পার্টি। বাম পন্থি ফ্যাশিস্টদের সরিয়ে দক্ষিন পন্থী ফ্যাশিস্টদের আনলে পশ্চিম বঙ্গের গণতান্ত্রিক পরিবেশের উন্নতি হবে-এ কথা মানা যায় না।

সিপিএমের অগণতান্ত্রিক অপশাসনের বিরুদ্ধে আমি মনে করি, সইফুদ্দিন চৌধুরিই সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছিলেন-সেই পথ ছিল অহিংস উন্নয়নকামী গনতন্ত্রমুখী সমাজতন্ত্র ( আপনারা এই সাইটে ভিজিট করুন, সিপিএমের বিরুদ্ধে সঠিক পথ কি হওয়া উচিত ছিল জানতে http://www.pdsindia.org/). কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, পশ্চিম বঙ্গে সিপিএমের অগনতান্ত্রিক শাসনকে দূর করতে আমরা যার দিকে তাকিয়ে আছি-সেই ভদ্রমহিলা নিজে চূড়ান্ত অগণতান্ত্রিক। জনগণ বুঝতে পারছে না-গণতন্ত্র কোন কাগুজে শব্দ না। তা প্রতিনিয়ত অভ্যেসের মধ্যে দিয়ে প্রতিফলিত হয়। বাম ফ্যাসিজম সরিয়ে ডান ফ্যাসিজমকে আনলে, রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশের কোন উন্নতিই সম্ভব না। সেই জন্যেই সইফুদ্দিনের মতন তৃতীয় শক্তিকে শক্তিশালী করা দরকার-যাতে লাগাম ছাড়া উন্নয়ন বিরোধি রাজনীতি করে মমতা ব্যানার্জি পশ্চিম বঙ্গকে ধ্বংশের মুখে ঠেলে দেওয়ার আগে দুবার ভাবতে বাধ্য হন। তৃতীয় শক্তির উত্থান না হওয়া পর্যন্ত মমতা এটা একদমই ভাববেন না। কারন তিনি জানবেন, সিপিএমের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধদের ভোট তিনি পাবেনই। কিন্ত অধিকাংশ জনগন সিপিএমের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হলেও, সিপিএম যেভাবে জমি নিয়েছে তা সমর্থন না করলেও, তারা রাজ্য সরকারের শিল্পস্থাপনের পক্ষেই। য়েই বিশাল সাধারন জনগনের একমাত্র ভরসাস্থল হতে পারে, সইফুদ্দিন চৌধুরীর মতন তৃতীয় শক্তি-যারা পচে গলে যাওয়া সিপিএম এবং তৃণমূলের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা রাখবেন। তাই জনগণের কাছে অনুরোধ, আপনারা এই তৃতীয় শক্তিকে শক্তিশালী করুন-যাতে শাসক এবং বিরোধি দল আরো দ্বায়িত্বপূর্ন ভূমিকা নিতে পারে।

তৃতীয় শক্তি না থাকলে কিন্তু এই রাজ্যে সিপিএম এবং তৃণমূল উভয়ই আরো বল্গাহীন দ্বায়িত্বজ্ঞানহীন কান্ডকারখানা চালিয়ে যাবে।

মনে রাখবেন-কোয়ালিটি প্রোডাক্ট পেতে প্রতিযোগিতার বিকল্প নেই। তাই তৃতীয় শক্তিকে শক্তিশালী করে মমতা এবং সিপিএমের আরো একটি প্রতিদ্বন্দী তৈরী করুন। এতেই পশ্চিম বঙ্গের আসু মঙ্গল।

Thursday, March 19, 2009

মুখে মারিতং জগতের পুরস্কারটা সিপিএমের প্রাপ্য

১৫ বছরের পুরানো অটো বাস কলকাতার রাস্তা থেকে বিদায় করা গেল না।
সরকার আরো ছমাস, ১৫ই আগষ্ঠ অব্দি আদালতের কাছ থেকে সময় পেল।

শিক্ষা, শিল্পে পশ্চিম বঙ্গে সবার থেকে পিছিয়ে পড়েছে-সেই নিয়ে যত বিতর্ক হয়-এই রাজ্য
পরিবেশের দিক দিয়েও কি ভয়ংকর পরিণতির দিকে -তা নিয়ে আমরা আলোচনা করি না।
এত দূষিত বাস, ট্যাক্সি কলকাতা ছাড়া ভারতের আর কোন শহরে চলে না। দিল্লী একমাত্র ২০০১ সালের আগে কলকাতার সাথে দূষনে পাল্লা দিত- তারাও দূষন নিয়ন্ত্রনে সফল। আর আমাদের রাজ্য সরকার মুখে শুধু বাত ঝেড়ে গেছে। গত ৩৩ বছরে সেটাই তারা একমাত্র করেছে। আসুন দেখি কলকাতার বাতাসের অবস্থাটা কি--তারও আগে কোলকাতায় যারা থাকেন তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থাটা দেখি বায়ুদূষনের কারনেঃ

সুত্র বিবিসি ২০০৭ সালের স্টাডিঃ

  • কোলকাতার ৭০% লোকের ফুসফুস ঘটিত রোগ আছে-যা হাঁপানি বা লাঙ্গস ক্যান্সার বা সমগোত্রের ফুসফুসের রোগ হতে পারে। চিত্তরঞ্জন ন্যাশানাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটের স্টাডি এটি
  • ভারতের অন্যান্য শহরের মধ্যে কোলকাতায় ফুসফুসের ক্যান্সার সব থেকে বেশী -১৯ জন প্রতি ১০০০ জনে। যা নিকটতম প্রতি্দ্বন্দী দিল্লী (১৫ জন) অনেক বেশী
  • বাতাসে ভাসমান কনিকা এবং স্বাসের বায়ুতে ধূলিকনার সেফ লিমিট -১৪০ এবং ৬০।কোলকাতায় এটি ২১১ এবং ১০৫। সেফ লিমিটের অনেক ওপরে। ভারতের কোন শহরের বায়ুতে এত দূষিত কনা নেই।

এসবের কারন অবশ্যই শহর থেকে পুরাতন বাস, অটো সরানো যাচ্ছে না। জীবিকার অজুহাত।

আমার জানতে ইচ্ছা হয় সেটা কি শহরের সবাইকে মেরে ফেলার থেকেও গুরুত্বপূর্ন? অবশ্য সিপিএম কে একা দুষেই বা হবে কি? দিদিই ত এই পুরাতন গাড়িগুলিকে রাখার পক্ষে। তাতে শহরের লোক মরলে মরুক-ভোট ত আসবে। টাটা গেল ত কি কি হল-ভোট ত আসবে! ব্যেসিক্যালি পশ্চিম বঙ্গের সব থেকে দুর্ভাগ্য এই যে এখানে শাসক এবং বিরোধি দল উভয়ই ভোটসর্বস্ব ফ্যাসিস্টপন্থি আপাদমস্তক অপদার্থ- বাচালে ভর্ত্তি চাটুকারের দল। এরা নেতাজি সুভাস বা বিধানচন্দ্রের উত্তারাধিকার ভাবতেও গা ঘিন ঘিন করে। আবার এদের দোষ দিয়েই বা হবে কি-এরাও ত বাঙালীর প্রতিচ্ছবি। যারা নিজেদের সবথেকে সবথেকে বেশী সচেতন ভাবে-অথচ এই জাতের মতন অপদার্থ এবং গর্দভ কোথাও গেলে পাবে নাকো তুমি।

  • দফস

Wednesday, March 18, 2009

জাতীয়দলগুলি প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে

মহানায়ক তাপস পাল কৃষ্ণনগরে কংগ্রেসের পার্টি অফিসে নিজেই যেচে ঘুরে কল্কে পাচ্ছেন না। নদীয়া জেলারা কংগ্রেস সর্বাধিনায়ক শঙ্কর সিংহ দিল্লীর ডিকটাট নিয়ে পাত্তা দিচ্ছেন না। দেওয়া সম্ভবও না। কারন তাহলে নী্চু স্তরের কর্মীরা ক্ষুন্ন হবে। এতে ভোটের পাটিগণিতে সিপিএম সুবিধা পাবে তা না। কংগ্রেস বা তৃণমূলের সিপিএমের মতন বাঁধা ভোট আছে-তবে সংখ্যাটা অনেক কম। এরা জেতে মূলত সিপিএম বিরোধি ভোট পেয়ে-ভোটটা যতটা না পক্ষে তার থেকে বিপক্ষে বেশী। এবং কংগ্রেসের নেতারা যতই 'বিদ্রোহ' করুন না কেন-তা নিতান্তই নেতা-বিদ্রোহ। জনবিদ্রোহের সুযোগ নেই এই সিপিএম বিরোধিতার ভরা বাজারে। ফলে দিল্লীর সিদ্ধান্ত যতই চিরতার জল হৌক না কেন-গিলতে হবে। আন্দোলন বিমুখ ভোট সর্বস্ব বিরোধিতার আরামকেদারা না ছাড়লে-এর থেকে বেশী কিছু আশা না করাই ভাল।

কিন্ত কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তই বলে দিচ্ছে জাতীয় দলগুলির আধিপত্য একদম ফিকে। লালু কংগ্রেসকে তিনটে সিট ছাড়তেও দরাদরি করছেন বিহারে-যেখানে কংগ্রেস স্বাধীনতার পর অনেক দিন সরকার চালিয়েছে। বিজুত সিট ছাড়তে না চাওয়াই বিজেপির সাথে জোটই হল না। শরদ পাওয়ারও কংগ্রেসকে ঘুঘু দেখাচ্ছেন-শিবসেনার তোল্লা দেখিয়ে। উত্তরপ্রদেশের কথা না বলায় ভাল। ভয় পেয়ে নীতিশ যা চাই, বিজেপি রাজী হয়ে গেল বিহারে। অসহায় আত্মসমর্পন।

কেন জাতীয়দলগুলির এই হাল?

আসলে এই হাল না হওয়াটাই আশ্চর্য্য। যেসব নেতা কর্মীরা সারা বছর কাজ করবেন, জনগনের গালাগাল খাবেন-বিরোধিদের লাঠি খাবেন-তাদের বাদ দিয়ে যদি দিল্লীর নেতারা নিজেদের ক্ষমতালাভের অঙ্ক দেখেন-তাহলে সেই দল বেশী দিন চলতে পারে না। যেনতেন প্রকারে ক্ষমতা দখল করে রাজনীতির ব্যাবসা করা সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি সব দিল্লী ভিত্তিক প্রধান নেতাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। রাজ্যের কথা তারা ভাবেন না। ভাবলে প্রকাশ কারাত নিউক্লিয়ার ডিল নিয়ে ইউ পি এ ছাড়তেন না পশ্চিম বঙ্গের ক্ষতি জেনেও। রাহুল গান্ধী জোর করে পার্টিতে এক বছর হয় নি এমন মহিলাকে টিকিট দেওয়ার চেষ্টা করতেন না জেলা নেতৃত্বের সাথে কথা না বলে। বা তৃণমূলকে ২৮ টা সিট ছাড়তে রাজী হতেন না-যেখানে প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা মোটেও এর পক্ষে ছিলেন না। বিজেপি তপন শিকদারে কথা শুনে অনেকদিন আগেই মমতার আঁচল ছাড়ত।

সেরকম কিছু হয় না। কারন খেলাটা অনেক জটিল। জাতীয় দল মানে দিলীর নেতারা দেখতে চাই প্রদেশের নেতারা অনুগত। আনুগত্য বোঝা যায়, অনুগত কতটা ছাপানো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। ফলে চাপানোর প্রক্রিয়াটা আনুগত্যের প্রশ্নে পরীক্ষিত পদ্ধতি। এই ভাবেই প্রকাশ কারাত অজস্র বাজে সিদ্ধান্ত রাজ্য সিপিএমের ওপর চাপিয়েছে। রাহুল মুখে বলছেন চাপাবেন না-কিন্তু কার্যক্ষেত্রে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের কথা না শুনেই মমতার কাছে মাথাদান অব্যাহত।

এখন ব্যাপারটা হচ্ছে এই-রাজ্যের স্বার্থ না দেখলে এই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো টিকবেই না। বিচ্ছিন্নতাবাদি আন্দোলন এখন অনেক কম-কারন আঞ্চলিক দলগুলির রমরমা। এটা ভারতের স্থিতিশীলতার জন্যে ভাল। কিন্ত জাতীয় দল একদম না থাকলে কেন্দ্রে সুস্থির সরকার গঠন সম্ভব না। যে দুইবার সরকার অস্থায়ী হয়েছে-প্রতিবার মূল সমস্যা একটাই-কোন জাতীয় দল ছিল না সরকারে। কংগ্রেস বা বিজেপির অধীনে গঠিত কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ণ মেয়াদ কাটিয়েছে।

ফলে একটা ভারসাম্য দরকার। জাতীয়তাবাদি, সমাজবাদি এবং বামপন্থী তিনটি জাতীয় দল থাকা ভারতের রাজনীতির স্বার্থেই দরকার। কিন্ত এই সব দলের নেতারা আনুগত্য প্রিয় হলে-সখ্যাত সলিলে যমুনা নদীতে আত্মহত্যা করবেন।

Saturday, March 14, 2009

পলিটিক্স ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল ফোরামের বিতর্ক সভা

১৪ ই মার্চ সোমনাথ, বাসু, রীতেন, সৈকত, আকাশ, রাজীব, বাঘ-আমরা অনলাইন মিলিত হয় কিছু আলোচনা করি-সেই আলোচনা গুলো পার্ট পার্ট বাই এই ব্লগে পোস্ট করা হবে। অডিও ফাইল ইস্নাইপ এবং রেডিফ থেকে লিংক করা হচ্ছে। যাতে কারুর শুনতে অসুবিধা না হয়।

(১)
বস্তুবাদি দর্শনের ভিত্তি-এটি একটি বিতর্ক-বাসু বনাম বিপ্লব-আলোচনা অত্যন্ত গভীরে ঢুকে যাওয়ায় এটি হঠাৎ করে বন্ধ করে দিতে হয়। তবে বস্তুবাদি মন নিয়ে মার্ক্সীয় ধারনার সাথে বিবর্তনবাদি মনের ধারনার পার্থক্য কি-সেটাই আলোচনার মূল বিষয়।
১।
http://www.esnips.com/doc/a6ff615b-a71e-4178-8b3c-b4c3acfeb66c/Basu_Biplab_dialecticMaterialism

২|
http://ishare.rediff.com/filemusic-bostubadi-darshan-id-587381.php

(২)
নারীবাদ তথা মেয়েদের দুরাবস্থা নিয়ে মার্ক্সীয় বনাম বিবর্তনবাদি ধারনাঃ
এটি একটি মনোজ্ঞ আলোচোনা। এটি পরে-ইউটিউবেও পাওয়া যাবে। এখানে মহাভারত, ঋক বেদ, মার্ক্স, ডারউইন -সব কিছুই আলোচতি হয়েছে।

১|
http://www.esnips.com/doc/18693d42-fe89-4512-b9f7-24a053edf803/Basu_Biplab_Feminism
২|
http://ishare.rediff.com/filemusic-Naribaad-Marx-bonam-Darwin-id-587382.php

(৩)
স্যার কার্ল পপার ও লেনিনের সাম্রাজ্যবাদের ওপর থিসিসঃ লেনিন কি ঠিক বলে ছিলেন?
http://www.esnips.com/doc/1e01de37-d3be-4239-bd7a-dd3d1c1dcb32/Basu_Biplab_Popper

(৪)
প্রেম এবং নারী নিয়ে পুরুষ ঃ এটি একটি চিত্তাকর্ষক আড্ডা। বাংলার বাঘ মৃণাল, সৈকত, সোমনাথ এবং বিপ্লব -তাদের প্রেমিক জীবনের গল্প বলেছেন অকাতরে। এটি এই মাত্র পোস্ট করা হলঃ
http://www.esnips.com/doc/6b2f150c-38ce-42b9-bccf-f28722bd9d49/PremKi
http://ishare.rediff.com/filemusic.php?id=587414

(৫)
সিঙ্গুর এবং বাংলার উন্নয়ন নিয়ে সৈকত-বিপ্লব বিতর্কঃ
পোস্ট করা হল-
1.
http://www.esnips.com/doc/2df5d858-627a-4304-a598-336addcefc5d/Singurer-janne-amader-khati
2.
http://ishare.rediff.com/filemusic-Singurer-janne-khati-id-587598.php

(৬)
নিজের রাজনৈতিক মতবাদ, জীবন, যৌনতা এবং কম্যুনিজম নিয়ে সোমনাথকে দেওয়া বিপ্লব পালের সাক্ষাৎকারঃ

লেনিন থেকে বাঙালীর যৌন জীবন- এটাই এই ইন্টার ভিউ এর মূল উপপাদ্য
1.
http://www.esnips.com/doc/76709c1e-db6f-451d-95e8-d5a5b7535ca5/Biplab_Political_stereo
2.
http://ishare.rediff.com/filemusic.php?id=587602

Wednesday, March 11, 2009

কংগ্রেস-তৃণমূল জ়োট ঘোষিত হল

মমতার হুমকিতে কাজ হল। কংগ্রেস ২৮-১৪ ফর্মুলা মেনে নিল। না কংগ্রেস তাদের কাঙ্খিত ৫ টি সিটের মাত্র একটি-বিষ্ণুপুরের বদলে জেনারেল ক্যাটেগরীর বীরভূম পেল। অর্থাৎ ওভার অল এটা মমতার জয়। প্রণব নিজে মমতাকে ফোন করে জোটের কথা জানান আজ সন্ধ্যায়। মমতা নির্বাচনী প্রচার শুরু করার জন্যে অধৈর্য্য হয়ে পড়েছিলেন। ফলে আজকে কংগ্রেসকে ঘোষনা করতেই হল।

সব মিলিয়ে লাভ মমতার। কংগ্রেসের সাংঘাতিক ক্ষতি। কোলকাতা চব্বিশ পরগনাতে একটাও আসন দিতে পারল না। রাজ্য রাজনীতিতে আরো দূরে সরে গেল কংগ্রেস। পাশাপাশি উঠে এল তৃণমূল। এছারা উপায়ও ছিল না। তৃনমূলে নতুন দুচারটি মুখ তাও দেখা যাচ্ছে। কংগ্রেসে তাও নেই। আসলে সেটাও না। কংগ্রেসের পাশে মানুষ থাকত-কিন্তু নেতারা নিজেদের গদি নিয়েই ব্যাস্ত ছিলেন। যেখানে মমতা মানুষের পাশে গেছেন। এরাজ্যে সব থেকে বড় সমস্যা সিপিএমের চক্রবূহ্য। সেটা সম্বল করেই মমতা এগিয়ে গেলেন। সিঙ্গুরে আমরা টাটাকে হারালাম-হারালাম শিল্প সম্ভাবনা-কিন্তু দেখা যাচ্ছে তার নেগেটিভ প্রভাব তৃণমূলের ওপর পড়ে নি। অর্থাৎ সিপিএমের হাত থেকে মুক্তিটাই পশ্চিম বঙ্গে সব থেকে বড় ইস্যু হয়ে উঠছে। কংগ্রেসেরও এই ভবিতব্যকে না মেনে উপায় নেই। তবে একটাই ভাল-সেটা হচ্ছে তৃণমূল-কংগ্রেসে কর্মী স্তরে সম্পর্ক এখনো খুব ভাল। মমতা-প্রণব বা মমতা-সোনিয়া সম্পর্কও ভাল। তাই কংগ্রেস তৃণমূলের ওপর ভরসা করতে পারে-এই ভেবেই হয়ত ক্ষতি স্বীকার করে নিলেন সোনিয়া।

পাশাপাশি প্রকাশ কারাতের মূর্খতার আরেকবার খেসারত দেবে সিপিএম। সিপিএম ইউ পি এতে থাকলে কংগ্রেস তৃণমুল জোট হত না। তৃণমূলও এত দড়াদরি করতে পারত না। সবাই ৪২ টা করে পার্থী দিত। সব থেকে বড় কথা এন ডি এ ছাড়া তৃণমূলের উপায় থাকত না। সেক্ষেত্রে সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূল থেকে সরে যেত। বা তৃনমূল এন ডি এ ছেড়ে একলা চলোরে বললে ভোট ই পেত না।

Monday, March 9, 2009

সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে ভোট নষ্ট করা

এবার সিপিএমকে লোকসভায় কেন ভোট দেবেন বলুনত?

আমি ভেবে দেখলাম প্রকাশ কারাত যদ্দিন সিপিএমের জেনারেল সেক্ট্রেটারী আছেন-সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে রাজ্যের সাংঘাতিক ক্ষতি। ভোট শুধু নষ্ট নয়-বিশাল ক্ষতি আমাদের।

প্রথমত সিপিএমের থার্ড ফ্রন্ট কোনদিন ক্ষমতাই আসবে না। সব মিলিয়ে ওরা ১০০ টাও পাবে না। বামফ্রন্ট মেরেকেটে ৩৫, মায়াবতী ৩০, বিজু ১০-আরো মেরেকেটে না হয় চল্লিশ জুরে দিলাম। তাহলেও ১০০ হয়-২৭২ অনেক দূর। অর্থাৎ বিরোধি হয়ে বসে থাকবে। পাঠক মনে রাখুন, বিরোধিতা করে ১৯৭৭ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত আমরা দিল্লীর কাছ থেকে কি পেয়েছি। আর ২০০৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত রাজ্য কি পেয়েছে। বুদ্ধর প্রায় সব আর্জি বা দাবী মনমোহন মেনে নিয়েছিলেন গত পাঁচ বছরে। প্রকাশ কারাতের বালখিল্যতার মাশুল না দিলে আজ একটা নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট পশ্চিম বঙ্গ পেত। কেন্দ্রীয় ছাড়পত্র পেতে কোন প্রকল্পে পশ্চিম বঙ্গের কোন অসুবিধা হয় নি। কারন মনমোহন এবং প্রণব মুখার্জি পশ্চিম বঙ্গের জন্যে দুহাত খুলে বসে ছিলেন। প্রনব-বুদ্ধ জুটিতে ২০০৪ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত পশ্চিম বঙ্গে কেন্দ্রীয় সাহায্যে ভাল কাজ হয়েছে। সেটাত সিপিএমই বলে।

২০০৮ এর অক্টবর থেকে ইউ এস নিউক্লিয়ার ডিল থেকে খেলা ঘুরে গেল। আপনারা দেখলেন কিভাবে রাজ্যের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে প্রকাশ কারাত ইউ পি এ থেকে বেড়িয়ে গেলেন। রাজ্যের শিল্পের ত ক্ষতি হলই-সবাই এটাও জানল প্রকাশ কারাতের হাতে সিপিএম বাস্তববাদি পথে চলবে না। হাওয়াই উড়ে ফানুস ফাটাবে-আর তার মূল্য চোকাবে এই গরীব রাজ্য।

সবথেকে বড় কথা রাজ্যের উন্নতির জন্যে বুদ্ধর সমস্ত চেষ্টায় জল ঢেলেছেন কারাত। জুজুর নাম কখনো আমেরিকা-কখনো কংগ্রেস।

যাইহোক যারা ভাবছেন বামেরা গিয়ে বিমা বা ব্যাঙ্কিং এর বেসরকারীকরন ঠেকাবে-তারা এবার ভাবুন। সেটা ইউ পি এ তে থেকে ঠেকানো সহজ না বেড়িয়ে গিয়ে? কংগ্রেসের ও সমাজতন্ত্রী লবি আছে-সুতরাং ইউ পি এতে সমাজতান্ত্রিক এজেন্ডা নিয়ে ত কংগ্রেস আপত্তি করে নি গত চার বছর। কিন্ত ভুলভাল লেনিনিজমের ধুয়ো তুলে যখন প্রকাশ কারাত দেশের সর্বনাশ করতে গেছেন, তখন কংগ্রেস-সিপিএম বিরোধ সামনে এসেছে। প্রকাশ কারাত মুর্খের মতন নিউক্লিয়ার ডিল ঠেকাতে গেলেন দেশের ক্ষতি করে-এবার কি ওর মুখ রক্ষা হবে? ওই চুক্তির পরে ভারত এখনো আমেরিকা থেকে কোন ফুয়েল বা প্রযুক্তি কেনে নি। যা কিছু কিনেছে সবই ফ্রান্স বা জাপান বা অস্ট্রেলিয়া থেকে। সবথেকে বড় কথা ফ্রান্স নিউক্লিয়ার প্রযুক্তিতে একনাম্বার। সুতরাং ভারত সেখান থেকে কিনবে এটাই স্বাভাবিক ছিল। অথচ এই কারাত এবং তাদের মিথ্যুক কমি বাহিনী রটিয়ে বেড়িয়েছে এটা আমেরিকার ব্যাবসায়িক স্বার্থ। তা সেই স্বার্থ ছিল ত-এখন দেখা আমেরকার সাথে ভারত কি নিউক্লিয়ার ব্যাবসা করছে? সবটাই ত হচ্ছে ফ্রান্সের সাথে-যেটা প্রত্যাশিত ছিল। এখন ক্ষমতার লোভে দেশ ও পশ্চিম বঙ্গের ক্ষতি করা কারাত মুখ ঢাকবে কোথায়?

কিন্ত ইউ পি এ থেকে বেড়িয়ে কার লাভ হল? বীমার বেসরকারী বিল পাশ হয়ে গেল। সিপিএম ইউ পি এ তে থাকলে এটা হত না-এটা নিয়ে কংগ্রেস-সিপিএম মনোমালিন্য হওয়া কঠিন। কারন কংগ্রেসের মধ্যেই সোশালিস্ট লবি আছে। সিপিএম ইউ পি এ ছেড়ে দেওয়ায়, কংগ্রেসের সমাজতন্ত্রী লবি দুর্বল হল।

দেশে বামেদের কি কোন শক্তি আছে? নেই। অথচ জাতীয় সংস্থা গুলির , বিশেষত ব্যাঙ্কিং এর বেসরকারীকরন ঠেকানো দরকার। শিক্ষার অধিকার বিলটা আনা দরকার। এগুলো কি বামেরা একা পারবে কোন দিন? পারবে না। এর জন্যেই কংগ্রেসের সমাজতন্ত্রীদের সাথে জোট করে বেসরকারীকরন আটকানো ছিল একমাত্র বাস্তববাদি পথ। তৃতীয় ফ্রন্টে কি বেসরকারীকরনের বিরোধিতা করবে?? কংগ্রেসে যাও বা দু একটি আদর্শবাদি শিক্ষিত নেতার দেখা মিলবে-বিজু জনতা বা মায়াবতীর দলে সেরকম কারা আছে? না তাদের নিয়ে বেসরকারীকরন ঠেকাতে পারবে?

আমি নিশ্চিত কংগ্রেসকে নিয়ে রাজ্য সিপিএমের সমস্যা ছিল না। বাস্তবটা তারাও বোঝেন। আমি মনে করি এই রাজ্যের সিপিএমের নেতারাও রাজ্যকে যথেষ্ঠ ভালবাসেন। তাই দিল্লীতে কংগ্রসের সাথে জোট করে থাকার গুরুত্ব বোঝেন। কিন্ত তারা এখন প্রকাশের হাতের জিম্মি। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে বহিস্কার করে-সুভাষকে ধমকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এই রাজ্যে কোন কমরেড প্রকাশের বিরুদ্ধে গেলে তার হাল কি হবে।

এই অবস্থায় পশ্চিম বঙ্গে সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে প্রকাশ কারাতের হাত শক্ত করা-যে ব্যাক্তিটি এই রাজ্য নিয়ে কিছু ভাবেন না-এবং এই রাজ্যের ক্ষতি করেই নিজের ক্যারিয়ার ও ক্ষমতা সিদ্ধ করতে চান। সুতরাং আমি রাজ্যবাসীকে অনুরোধ করব প্রকাশ কারাতকে সবক শেখাতে। এই রাজ্যের ওই শত্রুকে বোঝানো হৌক রাজ্যবাসী তাকে পছন্দ করে না কারন তিনি এই রাজ্যকে ধ্বংশ করে নিজের আখের গোছাতে চান। বরং ভেবে দেখুন-এবার ইউ পি এ ক্ষমতাই আসছেই। তৃতীয় ফ্রণ্টের জন্যেই আসছে। সেক্ষেত্রে আমাদের রাজ্য থেকে যত বেশী তৃণমূল এবং কংগ্রেস এম পি আমরা পাঠাতে পারব-আমাদের তিনগুন লাভঃ

-রাজ্য থেকে বেশী মন্ত্রী হলে, তারা আমাদের বেকার ছেলেদের কাজ দিতে পারবেন।
-রাজ্যের জন্যে বেশী টাকা আনতে পারবেন। একথা কি কেও অস্বীকার করবে, প্রিয়দা বা প্রণব এই রাজ্যের জন্যে যা করেন তা রবীন দেবের করা সম্ভব ? এত অবাস্তব প্রশ্ন।
-রাজ্যে নতুন কেন্দ্রীয় গবেষনাগার বা প্রতিষ্ঠান আনতে পারবেন।

এদিক ওদিক না তাকিয়ে সোজা বাংলায় হিসাব করুন। সিপিএমের কাউকে জেতালে তিনি পার্লামেণ্টের বাইরে সিগারেট ফোঁকা ছাড়া আপনার জন্যে কিছু করতে পারবে না। কারন তৃতীয় ফ্রন্ট ১০০ সিটও পাবে না। অন্যদিকে আমরা যত বেশী কংগ্রেস-তৃণমূল এমপি পাঠাতে পারব-তত বেশী মন্ত্রী পাব-আমাদের ছেলেরা কাজ পাবে। পশ্চিম বঙ্গে কেন্দ্রীয় সাহায্য আসবে।

একটা কথা মনে রাখবেন। এখন মন্দার বাজার। সামনের বছর গুলিতে বেসরকারী উদ্যোগে উন্নতি খুব বেশী হবে না। প্রায় সব উন্নতিই হবে সরকারী উদ্যোগে। তাই কেন্দ্রে আমাদের রাজ্য থেকে যত বেশী ক্ষমতা দখল করা যায়-তত ভাল।

তাই প্রকাশ কারাতের মতন নির্বোধদের দরজা না দেখালে-তারা পশ্চিম বঙ্গের ক্ষতি করেই যাবে। এতে বঙ্গের সিপিএম নেতাদের ও লাভ নেই। জনগনের ত কিছু ই নেই। আমি ত বামপন্থীদের বন্ধুদের অনুরোধ করব রাজ্যের স্বার্থের কথা ভেবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। কংগ্রেসকে ভোট দিতে পারবেন না। ঠিক আছে। দেবেন না। কিন্ত নিজের ভোটটা সিপিএমকে দিয়ে রাজ্যের ক্ষতি করবেন না দয়া করে। রাজ্যবাসী প্রকাশ কারাতকে শিক্ষা না দিলে এই রাজ্যের ক্ষতি-রাজ্য সিপিএমের ও ক্ষতি। কারন সিপিএমের নেতাদের যতদিন প্রকাশের অধীনে কাজ করতে হবে-তাদের সদিচ্ছা থাকলেও তারা রাজ্যের জন্য অনেক কিছুই করতে পারবেন না। আর বৃহত্ত্বর ক্ষেত্রে বেসরকারীকরন আটকাতে যে কংগ্রেস-বাম জোট হওয়া দরকার-সেটাও প্রকাশ থাকা কালীন হবে না।

ডান-বাম-রাজ্য। সবার জন্যেই আজ প্রকাশ কারাতকে গোহারা হারানো বাঞ্ছনীয়।

নিজের ভোটটা সিপিএমকে দেওয়ার আগে দুবার ভাবুন।

Sunday, March 1, 2009

Saturday, February 28, 2009

বাংলাদেশের সেনা বিদ্রোহের নেপথ্যে



বাংলাদেশে গত তিন দিনে তাদের প্যারামিলিটারি বিডিআর বিদ্রোহে আমি প্রায় সব বাংলাদেশী , ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদে চোখ রাখছিলাম। এখনো অনেক কিছুই ধোঁয়াশা আমার কাছে। সুত্র মিলিয়ে দুই দুই এ চার হচ্ছে না । তাই সমস্ত সম্ভবনাকে খাতিয়ে দেখতে এটা লিখছি-পাঠক আমার ভুল সংশোধন করবেন। ভবিষ্যতের অনুসন্ধান হয়ত অন্যকিছু বলবে-তবুও কিছুটা নিজেকে বোঝানোর তাগিদেই এই লেখা-কি করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে-যেখানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যথার্থ ভাবেই একটি জনপ্রিয় সরকারের হাতে-সেখানে প্যারামিলিটারী ফোর্স তাদের উর্ধতন মিলিটারীর বিরুদ্ধে এই ধরনের বিদ্রোহ করতে পারে।

প্রথম জনপ্রিয় তত্ত্বটি অবশ্যই প্রলেতারিয়েত শ্রেনী সংঘাত। বি ডী আরের নিজস্ব বক্তব্য তাই। তারা শোষিত এবং তাদের উর্ধত্বন মিলিটারী কতৃপক্ষ দ্বারা নির্যাতিত। তাদের খাদ্যসরবরাহের , ডাল-ভাত প্রোগ্রামের টাকা পর্যন্ত মেরে উড়িয়ে দিয়েছে মিলিটারী। তাদের অভিযোগের সুত্র ধরে, শুধু এটাই জানা যায়-এই ধরনের অভাব অভিযোগ থেকে উর্ধত্তন অফিসারদের গণহত্যা কোথাও হয় নি।আবার এটাও ঠিক পৃথিবীর সবদেশের মিলিটারীতেই সাধারন সৈনিকরা অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে, অফিসারদের ওপর আক্রমন চালান। আমার জানা প্রায় সব ভারতীয় এবং আমেরিকান সৈনিক মিলিটারী ক্যারিয়ারে এক বা একাধিবার কোর্ট মার্শাল হয়েছেন এই কারনে। মিলিটারীতে অফিসারের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বিদ্রোহ করা-পৃথিবীর সর্বত্র অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। এমন কি ২০০৪ সাল থেকে নেওয়া তথ্য অনুযায়ী-সেখানে সন্ত্রাসবাদিদের হাতে নিহত ভারতীয় সৈন্যের সংখ্যা ২৫৪, সেখানে একই সময়ে সেনাবাহিনীতে আত্মহত্যা করেছেন ৩৩৩ জন। আর অফিসারদের হত্যা করেছেন প্রায় একশো জন।

অফিসারদের বিরুদ্ধে পুঞ্জিভূত রাগ পৃথিবীর সবদেশের মিলিটারীতে সর্বদা বিদ্যমান। কারন মিলিটারী একটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী বাহিনী-যার অস্তিত্ব আসতে আসতে ফুরিয়ে আসছে। রাষ্ট্রের সংজ্ঞাতেই আছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে নাগরিকদের ভীতি দেখিয়ে আইন মান্য করানো- তাই সভ্যতার বিপরীত দিকে হেটেই মিলিটারীর বেঁচে থাকা (
এই প্রবন্ধটি দেখতে পারেন)। সেখানে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের যে শিক্ষাটা তারা পায়-তার সাথে মানবাধিকার বা সভ্যতার সম্পর্ক নেই। এর ওপর লয়ালিটির পরীক্ষা সাধারন সৈনিকদের সব সময় দিতে হয়। আর চেইন অব কম্যান্ডের লয়ালিটি রক্ষা করার স্বার্থে সব সময়, অধীনস্ত সেনারদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সমস্ত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে, তাদের মানানো হয়। কারন, এইভাবে তাদের স্বাধীন ইচ্ছাকে মেরে দিতে না পারলে চেইন অব কমান্ড তৈরী হয় না-সুতরাং মিলিটারীর স্বার্থেই সমস্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, নীচু তলার সৈনিকদের বাধ্য করা হয় ওপর তলার থুতু চাটতে। সুস্থ পরিবেশে বেড়ে ওঠা একজন যুবককে যখন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের এই প্রাথমিক পাঠ দেওয়া হয়, তখনত প্রশ্ন ওঠে না ওদের কেন সভ্যতা বিরোধি রাগী যুবক হিসাবে তৈরী করা হচ্ছে? তখন ত আমরা নিজেদের সুরক্ষার স্বার্থই দেখি।

এক্ষেত্রে যেসব অফিসাররা সেদিন সভাগৃহ থেকে পালাতে পেরেছিলেন তাদের ভাষ্য অনুযায়ী এটা পূর্বকল্পিত অনেক দিনের চক্রান্ত। ভারতীয় মিডিয়া এর মধ্যে ইসলামিক চক্রান্ত্ব খুঁজে পাচ্ছে। আমি অবশ্য সেরকম কিছু দেখতে পেলাম না। এটা কি করে সম্ভব যখন সভাগৃহে অনেক মিলিটারী কর্ত্তা আছেন, তখন মাত্র একজন লুঙ্গি পড়ে গেঞ্জী গায়ে মেশিনগান চালিয়ে বিদ্রোহ ঘোষনা করল? বাকিরা তার আগেই বেড়িয়ে গিয়েছিল। যদি পরিকল্পনা মাফিক বিদ্রোহের প্রশ্ন ওঠে এটা সম্ভবত খুব বাজে পরিকল্পনা। মানাই কষ্টকর। কারন সেক্ষেত্রে (১) তারা সভাস্থলকে বিদ্রোহের সুতিকা গৃহ হিসাবে ব্যাবহার করবে না-রাতের অন্ধকারে কোয়াটার টু কোয়াটার অতর্কিত আক্রমন করবে (২) আর যদি সভাগৃহকে বাছেও-তাহলে মাত্র একজন লুঙ্গী পরে মেশিন গান চালিয়ে বিদ্রোহের সূচনা করবে না। একটি দল পরিকল্পিত ভাবে সবাইকে ঘিরে ফেলবে। সেরকম কিছু হয় নি।

তাছাড়া যেভাবে মিলিটারী অফিসারদের জওয়ানরা খুন করেছে-তাতে ব্যাক্তিগত আক্রোশের ছাপ বড্ড বেশী। মানে মিলিটারী অফিসারদের বিরুদ্ধে তারা রাগে ফুঁসছিল এটা পরিস্কার। বিদ্রোহের লক্ষ্য মূল থাকলে-তারা রাষ্ট্রের সাথে দরাদরি করার জন্যে মিলিটারী অফিসারদের বন্দী করত-এই ভাবে চোখ খুবলে খুন করত না। সেনারা তাদের শত্রুর দেহকেও এই ভাবে বিকৃত করে হাত পা কেটে হত্যা করে না। এর থেকে তাদের পুঞ্জীভূত রাগের পরিমান প্রকাশ্য।

এছাড়াও গত তিনদিনে বিডিআর বিএস এফের কাছে অনেক চিরকুট পাঠিয়েছে। আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী চিদাম্ববরম তা স্বীকারও করেছেন। সেইসব চিরকুটের অধিকাংশতেই লেখা ছিল, বিডিআর মিলিটারীর অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তাই তারা ধরা না দিয়ে, ভারতের কাছে আশ্রয় চাইছে । যদি এটা ইসলানিস্ট গোষ্ঠির বিদ্রোহ হত, তারা ভারতের কাছে আশ্রয় এভাবে চাইত না।

বাংলাদেশের গুপ্তচররা এই খবর কেন আগে পেলেন না-সেটা নিয়ে অনেক জলঘোলা হচ্ছে। হতে পারে এরকম কিছু কংক্রীট চক্রান্ত ছিল না। অফিসারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ মিলিটারীতে খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তাই হয়ত ব্যাপারটাকে তারা অতটা আমল দেওয়ার প্রয়োজন ভাবে নি। আবার এটাও হতে পারে হাসিনা সরকারা আসায় অনেক গুপ্তচরের যে অতিরিক্ত ইনকাম ছিল -ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদি জঙ্গীদের কাছ থেকে বা আই এস আই এর কাছ থেকে- তা এখন বন্ধ। ফলে বর্তমান সরকার গেলে-তাদের পকেটে দুপয়সা আসে আর কি।


মিলিটারীর অনেক অফিসারই বলছেন তারা বি ডী আরের স্মাগলিং থেকে উপার্জন বন্ধ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ বি ডি আরের গরীব সেনাদের সামান্য যেটুকু অতিরিক্ত ইনকাম ছিল-তাও বন্ধ! গোদের ওপর বিষফোঁড়া। কিন্ত শুধু এইটুকুর জন্যে কেও গণহত্যা করবে না।

পরিশেষে একটা গণতান্ত্রিক দেশে রাজধানীতে কেন ৩০% বর্ডার সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ান বা মিলিটারীরা থাকে-সেটাও বুঝলাম না। আমি ভারতে দেখি বি এস এফের ১০-১২ হাজার লোকের থাকার আবাসনগুলি শহর থেকে অনেক দুরেই থাকে। বাংলাদেশে বি ডি আরের সংখ্যা ৬৫,০০০। আর ঘটনার সময় ঢাকায় হেডকোয়ার্টারে ১৫০০০ বিডীআর পাকাপোক্ত ভাবে ছিলেন। এটা একধরনের অপচয়।

রাষ্ট্র যত দ্রুত বিলুপ্ত হয়ে মিলিটারী নামক সভ্যতা বিরোধি রাষ্ট্রযন্ত্রটির অবসান ঘটে ততই মঙ্গল। ভারতের এই বছরের মিলিটারী বাজেট
২৩ বিলিয়ান ডলার-বাংলাদেশের প্রায় দেড় বিলিয়ান ডলার। যেদেশগুলির অর্ধেক লোক আধপেটা খেয়ে থাকে, নিরক্ষর-সেখানে ওই টাকা শিক্ষা এবং উন্নয়নে খরচ করতে পারলে-দারিদ্র নিশ্চিত ভাবেই কমানো যেত।

যারা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থান ইত্যাদি দেশের অস্তিত্ব টেকানোর পক্ষে তাদের আবার লাল সেলাম!!! কারন দেশের অস্তিত্ব মানলে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদিদের (মিলিটারী) পেছনে এই বাজে খরচ এবং তাদের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ রাষ্ট্রবিরোধি সন্ত্রাস মেনে নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে! আপনারা কি চান, আমি বাংলাদেশী, আমি ভারতীয় এইসব আবেগের মূল্য দরিদ্র জনগণের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্যের থেকেও বেশী?

Wednesday, February 25, 2009

রাহুল গান্ধী কি নেতৃত্বের যোগ্য?



বামবাঙালীকে রাহুল গান্ধী নিয়ে প্রশ্ন করলে প্রত্যুত্তরে নাক সিঁটকানি অনিবার্য্য। সেই বামবাঙালী যারা মার্ক্সবাদকে মাছভাত বানিয়ে খাচ্ছেন-এখনো বোঝেন না, মার্ক্সীয় তত্ত্বের মূল সুত্র এবং দর্শনের ভিত্তিপ্রস্তরটা কি। যাইহোক-ভারতবর্ষে এবার ১০ কোটি নতুন ভোটার। রাহুল গান্ধীর তাড়া খেয়ে আদবানীজিকে এখন কলেজের জিমে গিয়ে আইরনিং করে ভিডিও তু্লে বোঝাতে হচ্ছে ১৮ আর ৮১ একই ব্যাপার। জিম করে শরীরটাকে একটু উলটে নিলেই হল!

কি আজব ব্যাপার বলুন ত! আমি সেই কোনকাল থেকে আফশোস শুনে আসছি গান্ধী ডাইন্যাস্টি অযৌত্বিক! নেহেরুর পান্ডিত্য নিয়ে কেও প্রশ্ন তোলে না- ইন্দিরা গান্ধী নিয়ে আগে উঠত-এখন মেনে নিয়েছে। তবে রাজীব গান্ধী থেকে রাহুল গান্ধী-নাম এলেই বাম বাঙালীর নাক সিঁটকানো অব্যাহত। রাজীব শাহনানু মামমা ইত্যাদি নিয়ে কতগুলি মারাত্মক ভুল করেছিলেন-তবে এটাও সত্য, তার হাত ধরেই ভারতে উদার অর্থনীতি এসেছে-যার ফলে তার আমলে জিডিপি, পূর্বের তুলনায় অনেক বেশী বৃদ্ধি পায়। যাইহোক প্রশ্ন হচ্ছে গান্ধী ফ্যামিলির প্রতি নেতিবাচক মনোভাব গণতন্ত্রে থাকতেই পারে। কিন্ত সেটা যুক্তি সঙ্গত? না মেছোভাতে বামপন্থী হবার অভিমান?

সেই সুত্র ধরেই রাহুল গান্ধীকে দেখা যেতে পারে। রাহুলের ব্যাগ আছে- ব্যাগেজ নেই। কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক হিসাবে রোগটাকেও ধরেছেন। পার্টির মধ্যে গণতন্ত্রের অভাব আছে। ওপর থেকে সিদ্ধান্ত চাপানো হয়। নেতা চাপানো হয়। পুরানো নেতারা কংগ্রেসী আলখাল্লা চাপিয়ে নতুনদের উঠতে দিচ্ছে না। নতুন মুখ নেই। রোগটা সবার জানা। ডাক্তারীটাও রাহুল ভালোই করছেন। বৃদ্ধদের পাত্তা না দিয়ে সরাসরি তরুন নেতাদের কাছে যাচ্ছেন। কাগযে বিজ্ঞাপন দিয়ে, জনসংযোগ বাড়িয়ে তরুনদের কংগ্রেসে যোগ দিতে ডাকছেন।

গান্ধীমুখী কালচার যে কংগ্রেসের বিরাট ড্রব্যাক সেটা স্বীকার করতেই হয়। ভোটের আগে জেতার জন্যে যদি রাহুল গান্ধীর বক্তৃতার ওপর নির্ভর করতে হয়-সেটা দুর্ভাগ্যের। সেটা রাহুল নিজেই বলেছেন। কিন্তু কংগ্রেসীরাও এত নীচে নেমে গেছে, নিজেরা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে ঘুমানো ছাড়া কিছুই করে না-ফলে গান্ধী পরিবারের সৌজন্যই ভরসা। এগুলো নিসন্দেহে দেঊলিয়াপনার লক্ষন। এটাও লক্ষ্যনীয় রাহুল গান্ধী এসব সবই স্বীকার করে নিচ্ছেন। কিন্তু তাতে কংগ্রেস বদলাচ্ছে কি? রাজস্থানে জেতার পেছনে কোন সন্দেহ নেই গেলহটের কৃতিত্বই সব থেকে বেশী ছিল- অথচ দেখলাম কংগ্রেসীরা সবাই মিলে রাহুলজী জিন্দাবাদ বলছে। দিল্লীতেও কংগ্রেসের বিজয়ে শীলা দিক্ষিতের ভূমিকা মূখ্য ছিল-অথচ দেখলাম আমজনতা মিলে রাহুল গান্ধী জিন্দাবাদ শব্দে পাখিসব কলরব শুরু করেছে। এগুলো সবই সমর্থকদের দোষ। এর জন্যে রাহুলকে দোষ দেওয়া অবশ্যই অন্যায়। রাহুলই একমাত্র রাজনীতিবিদ যে অন্তত জাত বা ধর্মের প্রশ্নে পরিস্কার ভাবে বলতে পেরেছে সেসব অতীতের জিনিসে আঁকড়ে ধরে থাকলে চলবে না-ভবিষ্যতে সবাইকে মানুষ ভেবেই কাজ করতে হবে। অতীত নয়-ভবিষ্যত-এই রাহুলের চিন্তাধারা নিসন্দেহে আশাব্যাঞ্জক।

আসলে বামবাঙালী নিজেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পন্ডিত মনে করে। এটা ভুলে গিয়ে, সমাজের ইতিহাসের মার্ক্সিস্ট রিডাকশনিজম বা দ্বান্দিক বস্ত্রুবাদ টাইপের খিচুরীর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। সমাজ এবং রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এটাই সত্য-প্রতিটা সমস্যার আলাদা বাস্তববাদি সমাধান চাই। কোন আদর্শবাদ দিয়ে সমস্যার সমাধান হয় না। প্রতিটা সমস্যাই এক বা একাধিক দ্বন্দ-যার সমাধান প্রতিটি পরস্পর বিরোধি গ্রুপের কথা শুনে-উইন-উইন কনট্রাক্টের মাধ্যমে করতে হবে। সেটাই প্রকৃত গণতন্ত্র। শুধু ব্যাবসায়ীদের কথা শুনলে সাধারন মানুষের অশেষ দুর্ভোগ-আবার ব্যাবসায়ীদের চোর-ডাকাত বলে তাড়িয়ে দিলেও, সাধারন মানুষের দুর্দশা বাড়বে বই কমবে না। সুতরাং বাজার এবং ব্যাবসায়ীরা যাতে সমাজ এবং মানুষের স্বার্থ রক্ষাকরে ব্যাবসা করতে পারেন, রাষ্ট্রকে সেই মধ্যমপথেই চলতে হবে। এটা ভুলে গেলে চলবে না, ভারতে এখন ৫০% এর বেশী লোক এই বেসরকারী বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল। গান্ধী পরিবারে সাফল্য এই যে, উনারা এখনো পর্যন্ত মোটামুটি মধ্যম পথেই দেশটাকে রাখতে পেরেছেন-গণতন্ত্রও সেই জন্যেই টিকে আছে। এটা ঠিক রাইজিং ইন্ডিয়ার স্বাদ একটা বড় অংশের কাছে পৌঁছল না-আবার না না করে-গ্রামেও মোবাইল ফোন বা আই টির ব্যাবহার বেশ ভালোই চলছে এখন। রাহুল গান্ধী গ্রামে গ্রামে প্রযুক্তিকে পৌছে দেবার যে চেস্টা করছেন তা স্বাগত। তবে দুর্নীতির জন্যে এই সমস্ত প্রকল্পের টাকা যে জনগণের হাতে পৌছাচ্ছে না-সেই সমস্যার সমাধানও প্রযুক্তি দিয়েই করতে হবে। কিন্ত এই যে করতে হবে-এটা নির্ভর করছে-আমরা বাস্তববাদি চোখে সমস্যাটাকে বোঝার চেস্টা করছি কি না। তার সমস্ত সমাধানগুলিকে নিয়ে আমরা ভাবছি কি না। সমাধান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা প্রযুক্তি নির্ভর বা এদের মিশ্রন হতে পারে-কিন্তু একটা সমস্যাকে নিরেপেক্ষ ভাবে বোঝা
এবং তার সেরা সমাধান বার করার জন্যে অবশ্যই সেরা পথটিকে বাছতে হবে। এখন মাওবাদি সমস্যার সমাধানের জন্যে আমরা যদি শুধু
রাজনৈতিক বা শুধু অর্থনৈতিক চেষ্টা করি-এ সমস্যার সমাধান আমরা করতে পারবো না। এখনো পর্যন্ত যা দেখছি রাহুল গান্ধী বাস্তব্বাদি ভাবে সেরা পথটিকে বাছার চেষ্টা করছেন-কারন তার ব্যাগেজ নেই।

আর যার ব্যাগেজ নেই-সেই প্রকৃত জীবনপথিক।

Sunday, February 22, 2009

অস্কারে ইতিহাস তৈরী করে জিতল স্ল্যাম ডগ!!!!!!



এ র রহমান পেলেন দুটি--

সব আশঙ্কার অবসান ঘটিয়ে স্ল্যামডগ মিলিয়ানার পেল ৯ টি অস্কার।
সেরা সিনেমার পুররস্কারও!

হিদ লিজার বেস্ট সাপোর্টিং অভিনেতার পুরস্কার জিতে নিলেন এই মাত্র।

ওস্কার নাইট শুরূ হয়ে গেছে।

পেনোলোপা ক্রুজ প্রথম সাপোর্টিং অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতলেন। ভিকি ক্রিস্টিয়ানা বার্সিলোনা সিনেমাতে তার অনবদ্য অভিনয়ের জন্যে।

এদিকে স্ল্যাম ডগ মিলিয়ানার নিয়ে আবেগ তুঙ্গে। অনিল কাপুর, ইরফানরা রেড কার্পেটে পৌছে গেছেন। আমরাও ঘন্টায় ঘন্টায় এই ব্লগ আপডেট করব।

নমিনেশন লিস্টঃ

Best picture
"The Curious Case of Benjamin Button"
"Frost/Nixon"
"Milk"
"The Reader"
"Slumdog Millionaire"

Director
Danny Boyle, "Slumdog Millionaire"
Stephen Daldry, "The Reader"
David Fincher, "The Curious Case of Benjamin Button"
Ron Howard, "Frost/Nixon"
Gus Van Sant, "Milk"

Actor
Richard Jenkins, "The Visitor"
Frank Langella, "Frost/Nixon"
Sean Penn, "Milk"
Brad Pitt, "The Curious Case of Benjamin Button"
Mickey Rourke, "The Wrestler"

Actress
Anne Hathaway, "Rachel Getting Married"
Angelina Jolie, "Changeling"
Melissa Leo, "Frozen River"
Meryl Streep, "Doubt"
Kate Winslet, "The Reader"

Supporting actor
Josh Brolin, "Milk"
Robert Downey Jr., "Tropic Thunder"
Philip Seymour Hoffman, "Doubt"
Heath Ledger, "The Dark Knight"
Michael Shannon, "Revolutionary Road"

Supporting actress
Amy Adams, "Doubt"
WINNER: Penelope Cruz, "Vicky Cristina Barcelona"
Viola Davis, "Doubt"
Taraji P. Henson, "The Curious Case of Benjamin Button"
Marisa Tomei, "The Wrestler"

Animated feature
"Bolt"
"Kung Fu Panda"
WINNER: "WALL-E"

Adapted screenplay
"The Curious Case of Benjamin Button," screenplay by Eric Roth, screen story by Eric Roth and Robin Swicord
"Doubt," written by John Patrick Shanley
"Frost/Nixon," screenplay by Peter Morgan
"The Reader," screenplay by David Hare
WINNER: "Slumdog Millionaire," screenplay by Simon Beaufoy

Original screenplay
"Frozen River," written by Courtney Hunt
"Happy-Go-Lucky," written by Mike Leigh
"In Bruges," written by Martin McDonagh
WINNER: "Milk," written by Dustin Lance Black
"WALL-E," screenplay by Andrew Stanton, Jim Reardon; original story by Andrew Stanton, Pete Docter

Art direction
"Changeling," James J. Murakami; set decoration: Gary Fettis
WINNER: "The Curious Case of Benjamin Button," Donald Graham Burt; set decoration: Victor J. Zolfo
"The Dark Knight," Nathan Crowley; set decoration: Peter Lando
"The Duchess," Michael Carlin; set decoration: Rebecca Alleway
"Revolutionary Road," Kristi Zea; set decoration: Debra Schutt

Cinematography
"Changeling," Tom Stern
"The Curious Case of Benjamin Button," Claudio Miranda
"The Dark Knight," Wally Pfister
"The Reader," Chris Menges and Roger Deakins
WINNER: "Slumdog Millionaire," Anthony Dod Mantle

Costume design
"Australia," Catherine Martin
"The Curious Case of Benjamin Button," Jacqueline West
WINNER: "The Duchess," Michael O'Connor
"Milk," Danny Glicker
"Revolutionary Road," Albert Wolsky

Documentary feature
"The Betrayal (Nerakhoon)"
"Encounters at the End of the World"
"The Garden"
"Man on Wire"
"Trouble the Water"

Documentary short
"The Conscience of Nhem En"
"The Final Inch"
"Smile Pinki"
"The Witness -- From the Balcony of Room 306"

Film editing
"The Curious Case of Benjamin Button," Kirk Baxter and Angus Wall
"The Dark Knight," Lee Smith
"Frost/Nixon," Mike Hill and Dan Hanley
"Milk," Elliot Graham
"Slumdog Millionaire," Chris Dickens

Foreign language film
"The Baader Meinhof Complex," Germany
"The Class," France
"Departures," Japan
"Revanche," Austria
"Waltz with Bashir," Israel

Makeup
WINNER:
"The Curious Case of Benjamin Button," Greg Cannom
"The Dark Knight," John Caglione Jr. and Conor O'Sullivan
"Hellboy II: The Golden Army," Mike Elizalde and Thom Floutz

Original score
"The Curious Case of Benjamin Button," Alexandre Desplat
"Defiance," James Newton Howard
"Milk," Danny Elfman
"Slumdog Millionaire," A.R. Rahman
"WALL-E," Thomas Newman

Original song
"Down to Earth" from "WALL-E," music by Peter Gabriel and Thomas Newman, lyrics by Peter Gabriel
"Jai Ho" from "Slumdog Millionaire," music by A.R. Rahman, lyrics by Gulzar
"O Saya" from "Slumdog Millionaire," music and lyrics by A.R. Rahman and Maya Arulpragasam

Animated short
WINNER: "La Maison en Petits Cubes"
"Lavatory -- Lovestory"
"Oktapodi"
"Presto"
"This Way Up"

Live-action short
"Auf der Strecke (On the Line)"
"Manon on the Asphalt"
"New Boy"
"The Pig"
WINNER: "Spielzeugland"

Sound editing
"The Dark Knight," Richard King
"Iron Man," Frank Eulner and Christopher Boyes
"Slumdog Millionaire," Glenn Freemantle and Tom Sayers
"WALL-E," Ben Burtt and Matthew Wood
"Wanted," Wylie Stateman

Sound mixing
"The Curious Case of Benjamin Button," David Parker, Michael Semanick, Ren Klyce and Mark Weingarten
"The Dark Knight," Lora Hirschberg, Gary Rizzo and Ed Novick
"Slumdog Millionaire," Ian Tapp, Richard Pryke and Resul Pookutty
"WALL-E," Tom Myers, Michael Semanick and Ben Burtt
"Wanted," Chris Jenkins, Frank A. Montaño and Petr Forejt

Visual effects
"The Curious Case of Benjamin Button," Eric Barba, Steve Preeg, Burt Dalton and Craig Barron
"The Dark Knight," Nick Davis, Chris Corbould, Tim Webber and Paul Franklin
"Iron Man," John Nelson, Ben Snow, Dan Sudick and Shane Mahan

পিডিএসের ওয়েব সাইট চালু হল


২১শে ফেব্রুয়ারী-পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবসে সৈইফুদ্দিন চৌধুরী পিডিএসের ওয়েব সাইট চালু করলেন। এখানে ক্লিক করে সাইটটি দেখুন।

উনি বলেন পিডিএসকে বাঙালী এবং প্রবাসী বাঙালীরা নানান ভাবে সাহায্য করতে পারে। উক্ত সাইটের ফোরামে যোগ দিয়ে তারা গঠন মূলক সাজেশন দিতে পারেন। অর্থ সাহায্য দিতে পারেন। পার্টির নেতাদের সাথে কথা বলতে পারেন। দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি গণতন্ত্র প্রেমী মানুষকে পিডিএসের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াতে উনি অনুরোধ করেছেন।

Tuesday, February 17, 2009

স্বাগতম রঘুনাথপুর


ন্যানো বিদায়ের বিষাদবাদ্যের পর রঘুনাথপুরে শ্যামস্টীলের ৩০০০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্ধোধন রাজ্যবাসীর মনে নিশ্চয় একটু আশা দিচ্ছে। পাশাপাশি এটাও বিচার করা দরকার-পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, খরগপুরে কোন প্রকল্প হলে জমি নিয়ে বিরোধিতা হচ্ছে না-এই সমস্যা তৈরী হচ্ছে কোলকাতার আশেপাশের শহরতলিতে-যেখানে জমির উর্বরতা, ভাগীদার এবং জনসংখ্যার চাপ অনেক বেশী।

সিঙ্গুরে যারা ৪০০ একর জমি দিলেন না-পশ্চিম বঙ্গের ভবিষ্যত ক্ষতি করে-তাদের পেছনে মাত্র দুটো যুক্তিবাদি কারন অনুমান করা যায়-
(১) আন্দোলন করে দরদাম বাড়াতে চাইছিল জমির দাবীদাররা
(২) টাটার কোন বিরোধি পার্টি, সম্ভবত এই আন্দোলনকে টাকা জুগিয়েছে

মমতার অবশ্য এসব দায়ভার কোনটাই ছিল না। যেভাবেই হোক এর মধ্যে থেকে ভোট ব্যাঙ্ক গছানো ছিল একমাত্র উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্যে তিনি সফল হয়েছেন-উপনির্বাচন দেখে বলা মুশকিল। নন্দীগ্রামে সিপিএমের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগলে দিয়েছে জনগন। সিঙ্গুরে কি হবে সেটা এখন বোঝা যাচ্ছে না। কারন অনেক বেকার ভাইএর সর্বনাশ দিদি সেখানে করেছেন। আবার সিপিএমের বলপূর্বক জমি দখলের অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অনেকেই ক্রদ্ধও। সুতরাং কোনদিকে ভোট ঘুরবে বলা মুশকিল। মনে রাখতে হবে, সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে পুরুলিয়া থেকে বিরোধি পক্ষ হাওয়া হয়ে গেছে-কারন বিচ্ছিন্নতাবাদি এবং শিল্পবিরোধি দিদিকে তারা মোটেও পছন্দ করে নি।

এইসব বিচার করে, বামফ্রন্টের শিল্প নীতিতে কোলকাতা সহ শহরতলীকে রাখাই উচিত না-তা সেই এলাকা শিল্পপতিদের যতই পছন্দের হৌক না কেন। একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন-বর্তমানে পশ্চিম বঙ্গের গ্রামগুলি থেকে বহু সংখ্যায় পুরুষেরা অন্যরাজ্যে কাজ করছে। সেই সব রাজ্যের সমৃদ্ধির খবর মানুষের কাছে কিন্তু পৌঁছচ্ছে। আমাদের রাজ্যে চালে গমে সেরা বলে পাইকারী ঢপ দিয়ে, গ্রামের লোকেদের ভুলিয়ে রাখা আর যাবে না। লোকে প্রশ্ন তুলবেই, আমাদের রাজ্য সেরা হলে আমাদের এরাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে কেন যেতে হয় কাজের সন্ধানে? গ্রামের লোকেদের টুপি পড়িয়ে আর রাখা যাবে না-কারন তাদের একটা বড় অংশই এখন অন্যরাজ্যের -বিশেষত পশ্চিম ভারতের সমৃদ্ধি সচক্ষে দেখেছেন।

সুতরাং বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া-ইত্যাদি যেসব জেলাগুলি শিল্পে পিছিয়ে-সেখানেই শিল্প স্থাপনের সদিচ্ছা দেখাক সরকার। এই জেলাগুলিতে তৃণমুলের উপদ্রব খুব বেশী নেই। আর টাটার বিপক্ষর মতন শাঁশালো পার্টি এখানে আন্দোলনে টাকা জোগাবে -সেই সুযোগও কম। মমতা যে ধ্বংশের রাজনীতিতে নেমেছেন-তাতে তিনি ঘরে ফসল তুলবেন-এত বোকা মনে হয় না রাজ্যের লোক। পঞ্চায়েতের সাফল্য অনেকটাই সিপিএমের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের স্বৈরাচারের জন্যে। সেটার সাথে শিল্প-জমির রাজনীতিকে জড়ানো ভুল। যে রাজ্যের ৫৪% মানুষ সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রির সাথে জড়িয়ে-মাত্র ২৭% কৃষির সাথে জড়িত এখন -সেখানে শিল্পের পক্ষে ৫০% এর বেশী মানুষ থাকবেন। এই হিসাবটা মমতা ব্যানার্জি না করলে ভুল করবেন। তার শক্তি মোটে চারটে জেলায়-দুই মেদিনীপুর আর দুই চব্বিশ পরগণায়। হুগলী, নদীয়াতেও তৃণমূল বেশ দুর্বল। বাকী জেলাগুলিতে সিপিএম বিরোধি ভোট আছে-তার কিছু কিছু তৃণমূলে যাবে।

একটা জিনিস মমতা ব্যানার্জির মনে রাখা উচিত। তার পাশে যারা জুটেছে-তারা সিপিএমে ক্লান্ত-সিপিএমের শেষ দেখতে মরিয়া এই রাজ্যে। রাজ্যের মানুষকে এই অবস্থায় ঠেলার জন্যে সিপিএমই দায়ী। সেটাও মানছি। কিন্ত তৃণমূল ক্ষমতায় এলেই, মানুষের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে সেটাও দেখছি না। বরং সিপিএম তৃণমূল সংঘর্ষে বিরাট বিপর্যয়ও হতে পারে। সিপিএমের এই ৩২ বছরে আমরা কি দেখেছি? যে লঙ্কায় যায়-সেই হয় রাবণ। ক্ষমতার সেই সমীকরন বদলাবে? বরং তৃনমূলে যেহেতু গণতন্ত্র নেই-ফলাফল আরো ভয়াবহ হতে পারে। সিপিএমে তাও লোক্যাল কমিটিতে ফয়সালা হয়-মমতা এলেত সবাইকে নিত্যদিন কালীঘাটের সামনে বসে থাকতে হবে।

তৃণমূলের যারা রাজনীতি করছেন-তারা এই দিকটা ভাবুন। পার্টির মধ্যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন, উন্নয়নের জন্যে ইস্তাহার-এসব কিছুর উর্ধে যদি সিপিএম বিরোধি ঘৃণাকেই তারা মূল পাথেয় করেন-তাহলে সেই ঘৃণা তাদের পার্টিকে একদিন ধ্বংশ করবে। আপনারা অন্ধ বিরোধিতা ছেড়ে-উন্নয়নের রাজনীতি করুন। সস্তায় বাজিমাত কখনো সখনো হয় বটে-কিন্ত সেই বাজি একদিন বাজিগরকেই উচ্ছন্নে পাঠায়।

Monday, February 16, 2009

আরেকবার ভারসাম্যে পরিচয় দিলেন প্রণব মুখার্জী

গত পাঁচ বছরে মনমোহন-প্রণব-চিদাম্বরম টিম, খুব সম্ভবত স্বাধীনতোত্তর ভারতের সেরা সরকার উপহার দিয়েছেন। রাজনীতিতে পরম সাফল্য বলেত কিছু হয় না-আমাদের নানান বাস্তবতা এবং সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেই বুঝতে হবে সাফল্যের লাভ খতিয়ান। সেই জন্যে, প্রথমেই আমরা ২০০-২০০৪ সালের এন ডি এ সরকারের সাথে বর্তমান ইউপিএ সরকারের পার্থক্যর পরিসংখ্যানটা চোখ বুলিয়ে নিই।

http://www.hindustantimes.com/news/
specials/popup/state_of_economy.htm

মোটামুটি ব্যাপারটাকে এই ভাবে দেখা যায়ঃ ইউ পি এ সরকারের বাজেট এন ডি এর ৫ বছরে তুলনায় যে হারে বেড়েছে

(১) কৃষিক্ষেত্রে x2.5
(২) গ্রামে চাকরি সৃষ্টিতে x3
(৩) বিদ্যুত x2.0
(৪) রেলওয়ে x2.5
(৫) রাস্তা, সরক এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার x 2.5
(৬) শিক্ষা x 4.0
(৭) স্বাস্থ্য x2.0
(৮) গৃহ নির্মান x 2.0
(৯) শেয়ার মার্কেটের বৃদ্ধি x5.0

এখন মুদ্রাস্ফিতি এবং জিডিপির বৃদ্ধিকে ধরলে দ্বিগুন বৃদ্ধি স্বাভাবিক বেস বা ধারক সুচক। অর্থাৎ বর্তমান ইউ পি এ সরকার সব ক্ষেত্রেই পূর্বের অগ্রগতিকে ধরে রেখেছে ত বটেই-গ্রামীন কর্ম সংস্থান এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বাজেট অনেক বেশী বাড়িয়েছে। খুব পরিষ্কার ভাবেই মনমোহন সিং সরকার, বিজেপির থেকে অনেক বেশি পরিচ্ছন্ন এবং সমাজতান্ত্রিক সরকার উপহার দিয়েছেন। আবার শেয়ার মার্কেটের বৃদ্ধিও হয়েছে পাঁচগুন। সুতরাং ব্যাবসায়ী ও শিল্পগোষ্ঠিকেও নিরাশ করে নি এই সরকার-বরং শেয়ার মার্কেটের এত উত্থান ভূতপূর্ব আর কোন সরকারের আমলেই হয় নি।

এর মানে এই নয় টাকা ফেললেই সব কাজ হয়ে গেল। গ্রামে রোজগার যোজনাগুলিতে পশ্চিম বঙ্গের মতন রাজ্যে ১০০ দিনের মধ্যে ২০ দিনও লোকে কাজ পায় নি। এর পরেও সরকারি খরচের স্বচ্ছতা বাড়াতেও ব্যার্থ হয়েছেন মনমোহন। ই-গর্ভনেন্স মুখভরা বুলি রয়ে গেছে-গুদামে চালপচা বা সরকারী কর্মচারিদের নানান যোজনার টাকা
মেরে দেওয়া তারা আটকাতে পারেন নি। মনে রাখতে হবে-এই চুরি আটকাতে না পারলে-১০০ টাকা আর ১ টাকা খরচ করায় কোন পার্থক্য থাকে না। শিক্ষাখাতে খরচ বৃদ্ধি স্বাগতম। কিন্তু শিক্ষা অধিকার বিল আটকে দিয়ে বেসরকারি বিমা বিল কেন অগ্রাধিকার পাচ্ছে? শিক্ষার অধিকার বিল বিশ্বের বৃহত্তম নিরক্ষর দেশের জন্যে সবথেকে বেশী জরুরী-সেটাকে গুরুত্ব না দিয়ে বিমা শিল্পের বেসরকারীকরনে জন সাধারনের কি লাভ? আমাদের ৩০% গরীব লোকেদের বিমা কেনার ই ক্ষমতা নেই! নিদেন পক্ষে কৃষকদের আত্মহত্যা ঠেকাতে সরকারি বিমার ব্যাবস্থা করা যেত না? প্রধানমন্ত্রী নিজেও দরিদ্র ঘরের মেধাবী সন্তান-নিদেন পক্ষে গরীব মেধাবি জন্যে সরকারী ব্যাঙ্কগুলো কোন স্কীম তৈরী করতে পারলো না? উনি ১৬ টি আই আই টি দিলেন-গবেষকদের ফেলোশিপ, মাইনে বাড়িয়েছেন। খুব ভাল কাজ। এদের কথাত এতদিন কেও ভাবত না। কিন্তু গরীবদের কাছে যাতে প্রকল্পহুলির টাকা পৌঁছায়-সেটাও ত নিশ্চিত করতে হবে।

পরিশেষে বলি-মিলিটারি খাতের ১১৬,০০০ কোটি টাকার বরাদ্দ বড্ড বেশী। ভারত দেশটাতে মিলিটারী অপরিহার্য্য-কিন্ত এতটাকা-২৭ বিলিয়ান ডলার কেন দরকার মাথায় ঢোকে না। আজকাল ত লোকবলের চেয়ে স্ট্রেটেজিক অস্ত্রবলের কদর বেশী। স্ট্রটেজিক ওয়েপনাইজশনের জন্যে ডি আর ডি ওর বরাদ্দ বাড়ানো উচিত-সেটা ত দেখলাম না। তাহলে ত এই টাকাটা যাবে বিদেশী অস্ত্র ব্যাবসায়ী আর দালালদের পকেটে। রাষ্ট্রের অস্তিত্ব যতদিন না ঘুচছে-ততদিন এই খাতের টাকা মিলিটারি গবেষনাতে যাক। তাতে অন্তত আই আই টি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবগুলোতে ফান্ডিং এর জ়োয়ার আসবে- গবেষনার মান বাড়বে-গবেষকদের সংখ্যা বাড়বে। যা দেশের জন্যে এসেট্ও বটে। মিলিটারী ছাড়া যখন উপায় নেই-তখন টাকাটা মিলিটারী গবেষনা খাতেই খরচ হৌক।
একটা অর্জুন ট্যাঙ্ক ডি আর ডী ও থেকে বেড়তে ২৫ বছর লাগছে-এসব দিকে নজর দিক সরকার।

Thursday, February 12, 2009

শিক্ষাখাতে ব্যার্থ হয়ে কলেজ ইউনিয়ান দখলে উল্লাস


প্রেসিডেন্সি কলেজে এস এফ আই এর বিজয়ে সিপিএমের উল্লাস আমাকে যৎপরোনাস্তি আশ্চর্য্য করেছে। মাত্র দু সপ্তাহ আগে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষার ওপর সমীক্ষা বলছে পশ্চিমবঙ্গ পেছনের দিক দিয়ে দ্বিতীয়। সেটা নিয়ে বামফ্রন্ট সরকারের কোন হোলদোল ত ছিলই না-বরং একটি মিটিং এ মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, এটা না কি তাদেরকে হেয় করার চক্রান্ত! সত্যি কি বিচিত্রই না এই দেশ! বাঙলা এখন শিক্ষায় পেছনের দিক থেকে দ্বিতীয়-সেটা নিয়ে পার্টিতে আলোচনা হল না। এমনকি তাদের পোষ্য ছাত্র সংগঠনটিও এই নিয়ে একটিবার ও রা করলো না-পাছে তাতে ছাত্রনেতাদের পার্টি ক্যারিয়ার ধ্বংশ হয়। আর এরা কোন কলেজের ক্যান্টিন সেক্রেটারী হতে পেরেছে-সেটা নিয়ে লাফালাফি করছে!

আমি আগেও লিখেছি। হিন্দুত্ববাদি, ইসলামিস্টদের মতন কমিনিউস্টরাও যাবতীয় কিছু-এমনকি হেঁসেলের আরশোলার মধ্যেও চক্রান্ত খুঁজে পান। কারন এই আদর্শবাদগুলি আসলেই আলখাল্লা-ভেতরের রাজনীতিবিদটি সেই ক্ষমতালোভি মানুষ। ফলে যারা উঠতে বসতে আত্মসমালোচনার কথা বলেন, তারা এই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ন সমীক্ষাটিকে চক্রান্ত বলে আমাদের ছেলেমেয়েদের আরো খাদের দিকে ঠেলে দিলেন! তার আগে এই শিক্ষা সূচকটি বোঝার চেস্টা করি। ছাত্রদের শিক্ষার মান থেকে, শিক্ষক,ছাত্র অনুপাত এবং শিক্ষায়তনের সুবিধা-এক কথা শিক্ষার সর্বাঙ্গীন সমীক্ষার দ্বারা এই শিক্ষাসূচক বা এডুকেশনাল ডেভেলেপমেন্ট ইন্ডেক্স তৈরী হয়েছে।





পশ্চিমবঙ্গের তলায় শুধু অরুণাচল প্রদেশ আর বিহার!

সূত্রঃ
এরকম নই যে আমরা শিক্ষার এই বেহাল হাল নিয়ে কিছুই জানি না। বামফ্রন্ট সরকারের শিক্ষানীতিতে স্কুলের শিক্ষকদের পেস্কেল ছাড়া আর কিছুই স্থান পায় নি। ছাত্ররা সব থেকে অবহেলিত। শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি অবশ্যই শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ছাত্রদের তা উপকারে না এলে, পুরো টাকাটাই জলে। এই চুড়ান্ত ব্যার্থতার অনুসন্ধানে আজ প্রশ্ন উঠবেইঃ
(১) শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়বদ্ধতা বৃদ্ধিতে এই সরকারের ভূমিকা কি? স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট টীউশন এবং প্রাইভেট স্কুলের রমরমা আটকানো গেল না কেন? প্রাইভেট টিউশনের বিরুদ্ধে যখন ব্যাবস্থা নেওয়া শুরু হল-তখন শিক্ষা ব্যাবস্থার আর কিছুই বাকী নেই। এর কারনটাও আমরা জানি। শিক্ষক সংগঠনগুলির সাথে বেতন নিয়ে যত আলোচনা হয়েছে-শিক্ষাকে বাঁচাবার জন্যে কি করা যায়-সেই চেতনাটা বা ইচ্ছাটাই ছিল না।
(২) মাস্টার ডিগ্রী, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারীর ছাত্রদের মাত্র ৪% সরকারি প্রাথমিক স্কুলে পড়া। এই সংখ্যাটা আগে ৫০% এর বেশী ছিল। মিউনিসিপালিটির সরকারি স্কুলে ছাত্র নেই। দিন আনে দিন খাই এমন পিতা মাতাও সাধ্যের বাইরে গিয়ে ছেলে-মেয়েকে "বেসরকারী ইংরেজী স্কুলে" পাঠাচ্ছেন। তাহলে কি সরকার ধরেই নিয়েছে-শিক্ষার কোন দায়ভার তারা নেবে না? আমেরিকাতে পর্যন্ত বেসরকারী স্কুল একদমই চলে না। সব ভাল স্কুলই সরকারী। শিক্ষার বেসরকারীকরন-প্রাইভেট স্কুল-প্রাইভেট টিউশনএগুলো চলতে দিলে, রাজ্যের শিক্ষার বারোটা বেজে যাবে ( যদি কিছু বাকি থাকে)। শিক্ষার বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপই এই "জনগণের সরকার" নিল না। বরং উৎসাহিত করেছে সরকারি শিক্ষাকে উচ্ছন্নে পাঠিয়ে। সরকারি শিক্ষাকে ধ্বংস করে যার বেসরকারী শিক্ষায় মদত দেয়-তারা যদি প্রতিক্রিয়াশীল না হয়-জানতে ইচ্ছা করে, প্রতিক্রিয়াশীলতার সংজ্ঞাটা কি? শামুক থেকে আরশোলাকে প্রতিক্রিয়াশীল বললেই-ধাপ্পাবাজি চাপা থাকে?
(৩) সরকারি স্কুলগুলি পরিদর্শনের অভাবে উচ্ছন্নে গেছে। অথচ আগের সোভিয়েত ইউনিয়ানে বা বর্তমানের চীনে, যেখানে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা সবথেকে বেশী সফল হয়েছে-সেখানে স্কুলগুলির সাফল্যের পেছনে ছিল, কঠিন পরিদর্শন ব্যাবস্থা। সরকারি পরীক্ষায় স্কুলের রেজাল্ট বাজে হলে-আগের সোভিয়েত ইউনিয়নে হেডমাস্টারের চাকরি যেত। স্কুলের সিলেবাস প্রতিবছর বদলানো হত-যাতে শিক্ষকরা গাছাড়া মনোভাবে না থাকেন। আমাদের এখানে স্কুলের কোয়ালিটি কণ্ট্রোলের জন্যে আগে যা ইন্সপেকশন ছিল-সেটুকুও উঠে গেল। ইন্সপেক্টর আর কি করবেন? তিনি এবং তার যাকে টাইট দেওয়ার কথা সেই শিক্ষককুল-সবাই বেতন বৃদ্ধির জন্যে পার্টির পদলেহনে জীবন সার্থক করছেন। ছাত্রদের কথা তারা ভাববেন কেন? এই সরকারও ভোটব্যাঙ্ক ছাড়া কিছুই ভাবে না-ছাত্রদের ত ভোট নেই-আর তাদের শিক্ষাটাও এমন দেওয়া হচ্ছে-নিজেরা যে বঞ্চিত-যেটুকু ভাবার মতন মৌলিক চিন্তা করার ক্ষমতাও কোন ছাত্রর নেই!
(৪) স্কুল কমিটিগুলো-যা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক হওয়া উচিত-সেখানেও পার্টি ঢুকেছে। তাহলে আর বাকি রইলো কি? কমিটির প্রধান, পঞ্চায়েতের প্রধান আর স্কুলের প্রধান যখন একই পার্টির-কে কার কাছ থেকে দায়বদ্ধতা চাইবে? সবাই ত পরস্পরের স্বার্থে নিয়োজিত। এখানেও সেই একই প্রশ্ন উঠবে-তাহলে ছাত্রদের স্বার্থ দেখবে কে? স্কুল কমিটি শেষ ভরসা। গ্রামের লোকেরা চাই- তাদের স্কুল সেরা হৌক। আমেরিকাতেও স্কুল ডিস্ট্রিক্টে শিক্ষার মান নিয়ে, স্থানীয় লোকেরা গর্ব করে, চিন্তা করে। এই ধারা গ্রামবাংলায় ছিল বহুদিন। স্কুল কমিটিতে পার্টি ঢুকিয়ে-এই শেষ ভরসাস্থলটুকুকেও শেষ করে দেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ, আমরা যেটা দেখছি-সেটা হচ্ছে শিক্ষা ব্যাবস্থার প্রতিটা গুরুত্বপূর্ন অঙ্গনে-সিলেবাস, শিক্ষকের দায়বদ্ধতা, ইন্সপেক্টরের দায়বদ্ধতা, স্কুল কমিটির স্বাধীন পরিচালন ক্ষমতা-সর্বত্র পার্টির অদৃশ কালো হাত-ভোট যতটা চেয়েছে-ছাত্রদের শিক্ষার হাল কি হবে-তাই নিয়ে বিন্দুমাত্রও ভাবে নি।
আর শুধু সিপিএমকেই গালাগাল দিই কেন। শিক্ষা ব্যাবস্থার এত বড় বিপর্যয় নিয়ে তৃণমুল বা কংগ্রেসই বা কোন আন্দোলন করল? মমতা ওঁত পেতে আছেন সিপিএম কবে কোন মহিলার শাড়ী ছিঁড়বে-আর সেই ছেঁড়া ফাঁকদিয়ে গলে- তিনি রাইটার্স দখল করবেন। শিক্ষার বারোটা বাজিয়ে দিল শাসক দল-তাই নিয়ে বিরোধি নেতাদের কোন আন্দোলন নেই! তারা আছেন নিজেদের ঘর গোছানোর তালে। সাধে ছাই ফেলতে ভাঙা কুলোর মতন সিপিএম ভোট কুড়ায়?
তারফল এই-আমরা আজ শেষের দিক থেকে দ্বিতীয়-বিহারের আগে! তাতে কি? আসুন-আমাদের পার্টির পোষ্যছাত্ররা প্রেসিডেন্সি কলেজের ক্যান্টিন সম্পাদকের পদে জিতেছে-তাই আহ্লাদে আটখানা হয়ে নাট্যমঞ্চে রাজার আলখাল্লাখানা আবার দেখাই! বাজারে ফাটা প্যান্টতো আর দেখানো যাচ্ছে না-তাই রঙ্গমঞ্চই শ্রেয়।