Monday, February 16, 2009

আরেকবার ভারসাম্যে পরিচয় দিলেন প্রণব মুখার্জী

গত পাঁচ বছরে মনমোহন-প্রণব-চিদাম্বরম টিম, খুব সম্ভবত স্বাধীনতোত্তর ভারতের সেরা সরকার উপহার দিয়েছেন। রাজনীতিতে পরম সাফল্য বলেত কিছু হয় না-আমাদের নানান বাস্তবতা এবং সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেই বুঝতে হবে সাফল্যের লাভ খতিয়ান। সেই জন্যে, প্রথমেই আমরা ২০০-২০০৪ সালের এন ডি এ সরকারের সাথে বর্তমান ইউপিএ সরকারের পার্থক্যর পরিসংখ্যানটা চোখ বুলিয়ে নিই।

http://www.hindustantimes.com/news/
specials/popup/state_of_economy.htm

মোটামুটি ব্যাপারটাকে এই ভাবে দেখা যায়ঃ ইউ পি এ সরকারের বাজেট এন ডি এর ৫ বছরে তুলনায় যে হারে বেড়েছে

(১) কৃষিক্ষেত্রে x2.5
(২) গ্রামে চাকরি সৃষ্টিতে x3
(৩) বিদ্যুত x2.0
(৪) রেলওয়ে x2.5
(৫) রাস্তা, সরক এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার x 2.5
(৬) শিক্ষা x 4.0
(৭) স্বাস্থ্য x2.0
(৮) গৃহ নির্মান x 2.0
(৯) শেয়ার মার্কেটের বৃদ্ধি x5.0

এখন মুদ্রাস্ফিতি এবং জিডিপির বৃদ্ধিকে ধরলে দ্বিগুন বৃদ্ধি স্বাভাবিক বেস বা ধারক সুচক। অর্থাৎ বর্তমান ইউ পি এ সরকার সব ক্ষেত্রেই পূর্বের অগ্রগতিকে ধরে রেখেছে ত বটেই-গ্রামীন কর্ম সংস্থান এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বাজেট অনেক বেশী বাড়িয়েছে। খুব পরিষ্কার ভাবেই মনমোহন সিং সরকার, বিজেপির থেকে অনেক বেশি পরিচ্ছন্ন এবং সমাজতান্ত্রিক সরকার উপহার দিয়েছেন। আবার শেয়ার মার্কেটের বৃদ্ধিও হয়েছে পাঁচগুন। সুতরাং ব্যাবসায়ী ও শিল্পগোষ্ঠিকেও নিরাশ করে নি এই সরকার-বরং শেয়ার মার্কেটের এত উত্থান ভূতপূর্ব আর কোন সরকারের আমলেই হয় নি।

এর মানে এই নয় টাকা ফেললেই সব কাজ হয়ে গেল। গ্রামে রোজগার যোজনাগুলিতে পশ্চিম বঙ্গের মতন রাজ্যে ১০০ দিনের মধ্যে ২০ দিনও লোকে কাজ পায় নি। এর পরেও সরকারি খরচের স্বচ্ছতা বাড়াতেও ব্যার্থ হয়েছেন মনমোহন। ই-গর্ভনেন্স মুখভরা বুলি রয়ে গেছে-গুদামে চালপচা বা সরকারী কর্মচারিদের নানান যোজনার টাকা
মেরে দেওয়া তারা আটকাতে পারেন নি। মনে রাখতে হবে-এই চুরি আটকাতে না পারলে-১০০ টাকা আর ১ টাকা খরচ করায় কোন পার্থক্য থাকে না। শিক্ষাখাতে খরচ বৃদ্ধি স্বাগতম। কিন্তু শিক্ষা অধিকার বিল আটকে দিয়ে বেসরকারি বিমা বিল কেন অগ্রাধিকার পাচ্ছে? শিক্ষার অধিকার বিল বিশ্বের বৃহত্তম নিরক্ষর দেশের জন্যে সবথেকে বেশী জরুরী-সেটাকে গুরুত্ব না দিয়ে বিমা শিল্পের বেসরকারীকরনে জন সাধারনের কি লাভ? আমাদের ৩০% গরীব লোকেদের বিমা কেনার ই ক্ষমতা নেই! নিদেন পক্ষে কৃষকদের আত্মহত্যা ঠেকাতে সরকারি বিমার ব্যাবস্থা করা যেত না? প্রধানমন্ত্রী নিজেও দরিদ্র ঘরের মেধাবী সন্তান-নিদেন পক্ষে গরীব মেধাবি জন্যে সরকারী ব্যাঙ্কগুলো কোন স্কীম তৈরী করতে পারলো না? উনি ১৬ টি আই আই টি দিলেন-গবেষকদের ফেলোশিপ, মাইনে বাড়িয়েছেন। খুব ভাল কাজ। এদের কথাত এতদিন কেও ভাবত না। কিন্তু গরীবদের কাছে যাতে প্রকল্পহুলির টাকা পৌঁছায়-সেটাও ত নিশ্চিত করতে হবে।

পরিশেষে বলি-মিলিটারি খাতের ১১৬,০০০ কোটি টাকার বরাদ্দ বড্ড বেশী। ভারত দেশটাতে মিলিটারী অপরিহার্য্য-কিন্ত এতটাকা-২৭ বিলিয়ান ডলার কেন দরকার মাথায় ঢোকে না। আজকাল ত লোকবলের চেয়ে স্ট্রেটেজিক অস্ত্রবলের কদর বেশী। স্ট্রটেজিক ওয়েপনাইজশনের জন্যে ডি আর ডি ওর বরাদ্দ বাড়ানো উচিত-সেটা ত দেখলাম না। তাহলে ত এই টাকাটা যাবে বিদেশী অস্ত্র ব্যাবসায়ী আর দালালদের পকেটে। রাষ্ট্রের অস্তিত্ব যতদিন না ঘুচছে-ততদিন এই খাতের টাকা মিলিটারি গবেষনাতে যাক। তাতে অন্তত আই আই টি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবগুলোতে ফান্ডিং এর জ়োয়ার আসবে- গবেষনার মান বাড়বে-গবেষকদের সংখ্যা বাড়বে। যা দেশের জন্যে এসেট্ও বটে। মিলিটারী ছাড়া যখন উপায় নেই-তখন টাকাটা মিলিটারী গবেষনা খাতেই খরচ হৌক।
একটা অর্জুন ট্যাঙ্ক ডি আর ডী ও থেকে বেড়তে ২৫ বছর লাগছে-এসব দিকে নজর দিক সরকার।

No comments:

Post a Comment