
পশ্চিম বঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারকে এখনই ফেলে দিতে চাইছেন অত্যুতসাহী তৃণমুলের সমর্থকরা। এই চাওয়ার মধ্যে নৈতিক অন্যায় কিছু নেই। সিপিএম ভারতীয় সংবিধান মানে না। পশ্চিম বঙ্গে পার্টির সংবিধান চলে। তাদের মহান নেতা লেনিন এবং স্ট্যালিন রেড ফাসিজমে বিশ্বাস করতেন-এবং মানুষ খুন করা এই দলের কাছে হারাম না-বিপ্লবী কর্মযজ্ঞ। লেনিন ১৯১৭ সালের নভেম্বর মাসে ভোটে হারার পর পার্লামেন্ট ভেঙে দেন বিরোধিদের খুন করা শুরু করে যা রাশিয়ার ইতিহাসে লাল সন্ত্রাস নামে কুখত্যাত। গণতন্ত্রের সেই ধ্বংশ যজ্ঞকেই কমিনিউস্টরা মহান নভেম্বর বিপ্লব নাম দিয়ে প্রতি বছর পালন করেন। সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতি তীব্র ঘৃণা-আবার সেই পার্লেমেন্টারী পদ্ধতির ঘি খেয়ে ফুলে ফেঁপে ওঠা নেতাগনের বিরোধি খুন করার লেনিনিস্ট রাজনীতি ইতিহাসের নিয়মেই আস্তাকুঁড়ে যেত। আজ ১৬ই মে, ২০০৯ সালে সেই পক্রিয়াতেই সিল মোহর পড়ল। এখন ভোট হলে তৃণমুল জোট ২১০টি আসন পাবে একথা নিশ্চিত। এবং ভারতীয় গণতন্ত্রে অবিশ্বাসী সিপিএমকে উৎখাত করার মধ্যে কোন নীতিহীনতাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমেরিকাতে কোন পার্টিকে ভোটে লড়তে দেওয়া হয় না যারা আমেরিকান সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ নয়। হ্যাঁ প্রকাশ কারাতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ভারতীয় সংবিধানকে রক্ষা করার শপথ ও নেন-আবার তাদের নিজের দলের স্পীকারকেও তাড়ান। যার একমাত্র অপরাধ তিনি ভারতীয় সংবিধানকে পার্টির ওপরে স্থান দেন। পশ্চিম বঙ্গের পুলিশ ভারতীয় সংবিধান নয়-পার্টির নেতাদের কথা অনুযায়ী কাজ করে। এমত অবস্থাতে পশ্চিম বঙ্গ থেকে সিপিএম সরকারকে উচ্ছেদ করা, খুবই আইন সঙ্গত এবং নৈতিক কাজ।
কিন্তু তবুও আমি বলব ২০১১ সালেই নির্বাচন হৌক। বিরোধিরা এখনো ৪-৫টিজেলাতে সাংগঠনিক দিক দিয়ে দুর্বল। এই সময়টাতে মমতার দল দিল্লীতে মন্ত্রীত্ব নিয়ে পশ্চিম বঙ্গের জন্যে কিছু করে-জনগণকে প্রমান দিক, তারা নতুন বাংলা গড়বে। ওইসব জেলা গুলিতে সংগঠন তৈরী করুক। এখন ভোট হলে বিরোধিরা ২১০ মতন সিট পাবে-২০১১ সালে ভোট হলে আমার ধারনা লেফট ফ্রন্ট ৫০টাও পাবে না। যদি এরমধ্যে মমতা ভাল কাজ দেখাতে পারেন।
একটি গণতান্ত্রিক খুনী রাজনৈতিক দলকে মুছে দিতে, অগনতান্ত্রিক পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া উচিত না।গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই সিপিএমের দ্বিচারিতা, অগণতান্ত্রিক নীতিকে শুইয়ে দিতে হবে-যা রাজ্যের জনগণ দিয়েছেন। আমি এই ব্যাপারে মহত্মা গান্ধীর কথা সবাইকে স্বরণ করাবো। হিংসাত্মক বিজয়, আরো বেশী হিংসাকে ডেকে আনে। সিপিএমের লোকেদের প্রতি হিংসা পরায়ন আচরন থেকে কংগ্রেসের ভাইরা বিরত থাকুন। মনে রাখবেন কংগ্রেসের ভিত্তি গান্ধীবাদ-যার মুল কথাই হল সিস্টেমের প্রতি ঘৃণা-মানুষের প্রতি না। হ্যাঁ কমিনিউজমকে ঘৃণা করুন-যে আদর্শ গোটা পৃথিবীতে চূড়ান্ত সর্বনাশ ছাড়া কিছুই আনে নি-সোনার বাংলাকে শ্বসান বাংলা বানিয়েছে-গোটা পশ্চিম বাংলাকে পার্টির হাতে জেলের কারাগার বানিয়েছে। কিন্তু কমিনিউস্টদের ঘৃণা করবেন না-কারন তারাও আমাদের মতন মানুষ-গান্ধীর ভাষায় পথ হারানো মানুষ যারা মনুষ্যত্ব ভুলে মানুষকে অত্যাচার করাকে নিজেদের রাজনৈতিক পথ হিসাবে বেছে নিয়েছে। তাদের যাতে আধ্যাত্মিক উন্নতি হয়-সেটাই আমাদের জন্যে, সমাজের জন্য কাম্য। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন অত্যাচারী শাসক কুল বারবার এসেছে-জনগণ তাদের আস্তাকুঁড়ে ফেলেও দিয়েছে। এ রাজ্যেও দেবে। সেই দিনের সুপষ্ট সুবাস আমরা সবাই ১৬ই মে পেয়েছি। তাই ধৈর্য্য ধরুন-সিপিএম সরকারকে ফেলে ওদের শহীদ হতে দেবেন না। ওরা শহীদ হওয়ার ও যোগ্য না। জনগনের হাতে ওদের শাস্তি পেতে দিন। সেই শাস্তিদন্ড নিজেদের হাতে তুলে নেবেন না।
No comments:
Post a Comment