মহেশ্বতাদেবী বলছেন মমতা না কি পশ্চিম বঙ্গের একমাত্র বামপন্থী। ইস্তাহার দেখুনঃ তৃনমুলের সাথে সিপিএমের পার্থক্য শুন্য। সমাজতন্ত্র আর সংখ্যালঘু তোষনের ককটেল। তৃণমূলও বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধ। ব্যাঙ্ক থেকে ইনসুয়ারেন্সে বিদেশী বিনিয়োগ চলবে না-ডিটো সিপিএমের শ্লোগান, তাদেরও নাপসন্দ। বিগ ক্যাপিটাল, মল সংস্কৃতির বিরোধিতা করবে তৃণমুল এটি তাদের ঘোষনা। জ়োট সঙ্গী কংগ্রেস অবশ্যই আরো ব্যাপক অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও সোনিয়া গান্ধী ধীরে চলার নীতিই নিচ্ছেন। সেই জন্যেই প্রধানমন্ত্রীর পছন্দ মন্টেক সিং অর্থমন্ত্রক পেলেন না। সমাজতান্ত্রিক প্রণববাবু পেলেন এই কাঙ্খিত মন্ত্রীত্ব।
পশ্চিম বঙ্গের রাজনীতিতে এখন ডান-বাম বলে কিছু নেই। আপনি সিপিএমের ফ্যাসিজমের পক্ষে বা বিপক্ষে। লাল ফ্যাসিজম বনাম তার বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রেমী মানুষদের গণ প্রতিরোধ-এটাই পশ্চিম বঙ্গের রাজনীতির সার্বিক চিত্র। গোটা রাজ্যজুরেই গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি। ২০১১ সালের ভোটের আগে কটা লাশ পড়বে কেও জানে না।
প্রশ্ন হচ্ছে মমতা এই যে ২১০ টি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে আছেন, তা কি ধরে রাখতে পারবেন?
এই প্রশ্ন তুলছি তার কারন বাম-বাঙালীর একটা বড় অংশই মমতাকে এবার ভোট দিয়েছেন। কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার সংস্কার জোর কদমে চালালে সেই বামবাঙালীর একটা বৃহৎ অংশ আবার সিপিএমে ফিরে যেতে পারে।
অর্থনৈতিক সংস্কার ভারতে দরকার। নইলে জ়িডিপি বাড়বে না। চীনের থেকে আমরা পিছিয়ে পড়ব। হ্যাঁ, জনগন এবং জাতীয় স্বার্থ অক্ষুন্ন রেখেই সংস্কার চালিয়ে যেতে হবে। কিন্ত সমস্যা হচ্ছে পশ্চিম বঙ্গে ৩২ বছর বামপন্থী ব্রেইন ওয়াশের ফলে, একটা বিরাট বামভোট ব্যঙ্ক সিপিএম তৈরী করছে, যার একটা বড় অংশ এখন তৃণমূলে। সমাজতন্ত্রের বদলে ঠিকাদারতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা সিপিএমের কাছে তা এখন বুমেরাং। বাম বাঙালীর এই অংশটি এখনো লেনিনের স্বর্গরাজ্যের স্বপ্ন দেখেন-তা যতই নারকীয় বলে ঐতিহাসিকরা প্রমান করুন না কেন। এরা সব সংস্কারেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ভূত দেখেন। হ্যাঁ অর্থনৈতিক সংস্কারে রাশটানা দরকার-কিন্ত ম্যানুফাকচারিং সেক্টরে শিল্প আইন সংশোধন না হলে চীনের থেকে আমরা ১০০ বছর পিছিয়ে পড়ব। এসব সূক্ষ পার্থক্য বামবাঙালী বোঝে না। জাতীয় স্বার্থও তারা দেখবে না-তাদের বাইবেল লেনিনের রাষ্ট্র ও বিপ্লব।
যদ্দিন না এই সব বামপন্থী মিথগুলোকে বাঙালীর মাথা থেকে দূর করা না যাচ্ছে, মমতার উচিত এই নব্য বামভোট ব্যঙ্ককে ধরে রাখা। সমস্যা হচ্ছে এর জন্যে জাতীয় স্বার্থের ক্ষতি হবে। কিন্ত ২০১১ সালে সিপিএম আবার ক্ষমতাই থেকে গেলে বা লোকসভাতে সিপিএমের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে দেশের ক্ষতি আরো বেশী। সুতরাং দীর্ঘ স্বার্থের কথা মনে রেখে, এই নব্য বামভোট ব্যাঙ্ককে ধরে রাখার চেষ্টা করাটাই অনেক বেশী বাস্তব সম্মত পথ।
Sunday, June 7, 2009
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment