আজ জানা গেল প্রকাশের চিঠির উত্তর না দিয়ে মনমোহন সত্যমের ব্যাপারে সরাসরি ফোনই করেছেন। এবং আস্বস্ত করেছেন যে অপরাধীদের শাস্তি হবেই। মনমোহন বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ এবং বাজার অর্থনীতির প্রবক্তা। খুব ভালো করেই জানেন এই 'মুক্ত' কথাটা অর্থহীন-মার্কেটের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রন না থাকলে অচিরেই তা মার্কেট না হয়ে ফাটকাবাজি হবে। মনমোহন গত দুবছর ধরেই আমেরিকাকে এব্যাপারে সাবধান করেছেন-বিশ্বের ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটে রেগুলেশনের অভাব আছে একাধিবার বলেছেন। সুতরাং খুব সম্ভবত কারাতকে ফোন করেছিলেন এটা জানাতে যে মার্কেটে নিয়ন্ত্রন এবং খবরদারি বাড়াবার ব্যাপারে তিনিও চিন্তাভাবনা করছেন। ভারতের মত ফাটকাবাজির দেশে তা কতদূর সম্ভব তা জানি না-তবে মার্কেটে আইন শৃঙ্খলা না বাড়ালে বাজারের বৃদ্ধিই সম্ভব না। আটকে যাবে দেশের প্রগতি। এটাত সিংজীর মতন পোড় খাওয়া অর্থনীতিবিদ বিলক্ষন জানেন-তাই সম্ভবত প্রকাশ কারাতকে আশ্বস্ত করেছেন-দেশের ভার যখন তার হাতে, তিনি ভালো করেই এসব ফাটকাবাজি আটকাবেন।
মুশকিল হচ্ছে প্রকাশ কারাত এর থেকে কি শিক্ষা নেবেন জানি না। নিজের ক্ষমতাবৃদ্ধির লক্ষ্যে ভারত-আমেরিকার পরমানূ চুক্তি রুখতে গিয়ে এখন তিনি কোনঠাসা। একবার মায়াবতী-অন্যবার জয়ললিতা-তার পরে চিরঞ্জীবির হাতের ঠোঙার প্রসাদ খেয়ে এত দিনেও যদি না বোঝেন তৃতীয় ফ্রন্টের ইচ্ছা আসলেই সিপিএমের তথা পশ্চিম বঙ্গের জন্যে ক্ষতিকারক-তাহলে সিপিএম তথা সমগ্র পশ্চিম বাংলার বিপদ। মায়াবতী, জয়ললিতা, চন্দ্রবাবু নাইডুরা কি অর্থে মনমোহন বা প্রণবদের থেকে ভাল নেতা হন? এই সেই মায়াবতী যার জন্মদিনের উপহার দিতে আমজনতার ওপর মারপিট করা হয়। জয়ললিতার কথা যত কম বলা যায় তত ভাল-উনাকে ত সোনার ভারে ওজন করা হয়। এরা আজ বিজেপি, কাল কংগ্রেসের সাথে! এরা নেতা?
কংগ্রেস সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে অনেক পরিণত শক্তি এখন। সব থেকে বড় কথা মনমোহন এবং চিদাম্বরন দক্ষ, উচ্চশিক্ষিত এবং সৎ। এদের সাথে বামপন্থীদের মতের পার্থক্য থাকতেই পারে-কিন্তু তার জন্যে কি তোলাবাজ এবং চুড়ান্ত প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির সাথে হাত মেলাতে হবে? তাছাড়া কংগ্রেসের ঘোষিত নীতিও গরীব এবং ধনীর মধ্যে পার্থক্য যতটা সম্ভব কমিয়ে উন্নয়ন করা। এটা ত ১৯১৭ সাল না-যে কারাতবাবু লেনিনের মতন গরম গরম বিপ্লবী ডায়ালোগ দিলেই শ্রমিকরা বন্দুক ধরবে। সব থেকে বড় কথা ভারতের উন্নয়ন হচ্ছে-তবে একটা অংশের কাছে তা পৌছাচ্ছে না। সেটা নিয়েত কংগ্রেস বা সিপিএমে দ্বিমত নেই-প্রশ্নটা হচ্ছে কোন পথে গেলে দেশের সার্বিক উন্নতি সম্ভব। সেখানে মতবিরোধ আছে-সেটাত গণতন্ত্রে থাকবেই। এবং সেখানে বিতর্কের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। ভারত-আমেরিকার পরমানু চুক্তির মতন তর্কে হেরে গেলে, বা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হেরে গেলে, পশ্চিম বঙ্গের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ইউ পি এ থেকে বেড়িয়ে আসার মতন বালখিল্য কাজের কি কোন রাজনৈতিক অর্থ হয়? এগুলো ছেলেমানুষি এবং তার খেসারত দেবে পশ্চিমবঙ্গ।
আবার বলি এটা ১৯১৭ সাল নয় কমরেড। কমি্নিউস্টরা প্রতিষ্ঠিত ব্যার্থ-শক্তি। ইতিহাস থেকে জনগন তাদের চিনেছে। আপনারাও শিখেছেন। ধুরি জ্যোতিবসু-হরকিশেন শিখেছিলেন। আপনি শেখেন নি। গণতন্ত্রে থাকলে জনগনকে, গণতান্ত্রিক পক্রিয়াকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন। নইলে মাওবাদিদের মতন বন্দুক হাতে নিন। গণতন্ত্রের চুরুটও খাবেন-আবার সেই চুরুটের নিন্দাও করবেন-এমন করে নিজেদের জীবনটাত ব্যার্থ করেইছেন-কিন্ত পশ্চিমবঙ্গের আগামী প্রজন্মকে বাঁচতে দিন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment