Wednesday, January 14, 2009

আসলে বাঙালী কমরেডদের দাবিয়ে রাখাই প্রকাশ কারাতের নীতি


সম্প্রতি বাংলার সিপিএম মহলে দাবি উঠেছিল সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে ফিরিয়ে নেওয়ার। সুভাষ বাবু সেই মর্মে রাজ্য কমিটিকে চিঠিও দিয়েছেন। কিন্তু নারাজ প্রকাশ কারাত।

মনে রাখতে হবে বিতাড়নের পর সোমনাথ বাবুকে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জন্যে আহবান জানিয়েছিলেন মনমোহন স্বয়ং নিজে। এমন একজন গুণী মানুষকে পেলে কংগ্রেস নিশ্চয় গর্বিত হত। সোমনাথবাবু একনিষ্ঠ পার্টিকর্মী। চল্লিশ বছর যে পার্টি করেছেন-যার জন্যে নিজের পেশাকেও বর্জন করেছেন প্রায়-সেই পার্টি তাকে ছাড়তে পারে। তিনি পার্টিকে ছাড়বেন কি ভাবে? তার জীবনটাই ত তাহলে বৃথা হয়ে যাবে!

একথা আজ জ়লের মতন পরিষ্কার--প্রকাশ কারাত সিভিলিয়ান ভারত-আমেরিকান চুক্তির বিরোধিতা করেছেব শ্রেফ নিজের ক্ষমতা বাড়াতে-পার্টির মধ্যে এবং বাইরে। তারজন্যে জলাঞ্জলি দিয়েছেন ভারতের স্বার্থ। পশ্চিম বঙ্গের স্বার্থ। চেপে ধরেছিলেন বাঙালী কমরেডদের কন্ঠ। আমাকে ইউ এস ইন্ডীয়া বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি বলেছিলেন-প্রকাশের একগুঁয়েমির জন্যে সবথেকে বেশী ভুগবে কেরালা আর পশ্চিমঙ্গ। কারন সমগ্র বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের কাছে এই সংকেতই যাচ্ছে-যে এইসব বামরাজনীতিবিদরা পরিণত নন। অথচ জ্যোতিবাবু বা সুরজিত কিন্তু এমন একগুঁয়ে ছিলেন না। তারা ছিলেন অনেক বাস্তব্বাদি। অন্তত শুধু যে এন ইউ তে ছাত্ররাজনীতির ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা নিয়ে- কোনদিন সংসদীয় ভোটে না দাঁড়িয়ে সিগেরেট ফোঁকা বামপন্থী তারা ছিলেন না। ফলে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কারাত নিজে ডুবলেন ত বটেই-পশ্চিম বঙ্গকেও ডোবালেন। বঙ্গজ কমরেডরা তার বিরুদ্ধে যাতে টুঁ শব্দটীও না করতে পারে-তার জন্যে তাড়ানো হল সোমনাথ চ্যাটার্জিকে। ঠিক যেমন ভাবে ট্রটস্কিকে তাড়িয়েছিলেন স্টালিন। স্পিকারকে তাড়িয়ে দেখালেন -হ্যাঁ, শুধু দেখানোর জন্যেই-- আমার বিরুদ্ধে গেলে তোমাদের ও একই দশা হবে। স্পীকারকেই রেহাত করি না-ত তোমরা কোন ছাড়!

আসল ব্যাপারটা আরো গভীরে। আসলে সোমনাথের নেতৃত্বে প্রকাশ কারাতের অবাস্তব্বাদি লেনিনজমের বিরুদ্ধে বঙ্গজ কমরেডদের বিদ্রোহের সুযোগ ছিল। এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন প্রকাশ কারাত। নেহাত এটা সংসদীয় গণগন্ত্রের দেশ। ১৯৩০ সালের সোভিয়েত রাশিয়া হলে অবশ্য সোমনাথ চ্যাটার্জির লাশটাই শুধু পাওয়া যেত। গ্রেট পার্জ। এরা খেলে নিজেদের ক্ষমতার জন্যে-আলখাল্লা পড়ে আদর্শবাদের।

No comments:

Post a Comment