বিমান বোসের একটি অর্ধসমাপ্ত শাড়ি সংক্রান্ত উপমা হইতে এই ঘোটলার শুরু।
প্রথমেই বলিয়া রাখি, লেখক হিসাবে আমি ব্যক্তি বিমান বোস এবং তাহার রাজনৈতিক লাইনের ঘোর বিরোধি লোক বলিয়াই বেশী পরিচিত।
কিন্ত বিমান বাবুর অর্ধসমাপ্ত শাড়ি সংক্রান্ত মন্তব্যে বাঙালী রাজনীতিবিদগণ, সুশীলজীবিগণ এবং নারীবাদিরা যে পরিমানে ক্ষুন্ন ও বিক্ষুব্ধ হইয়াছেন, তাহাতে আবার প্রমাণিত হইল, বাঙালী রাজনীতি এখনো সাবালক নহে। যৌনতা লইয়া, নেতা ও প্রজাদের দ্বিচারিতা ভারতখন্ডে চলিতেছে চলিবে। যৌনতা লইয়া দ্বিচারিতার মূল বাঙালী জীবনে এত দৃঢ়, বিমান বসুর অর্ধসমাপ্ত শাড়ি সংক্রান্ত বক্তব্য মিডিয়ার সার্চ লাইটের ন্যায় পাক খাইতে থাকে।
কি বলিয়াছেন বিমান বসু?
তৃণমূল এবং কংগ্রেস শাড়ির নীচে থাকিবে না ওপরে থাকিবে, তাহা তিনি জানেন না।
কংগ্রেস এবং তৃণমূলের রাজনৈতিক সম্পর্ক ব্যাখ্যা করিতে-ইহা হইতে উত্তম সাহিত্যিক উপমা আমি ভাবিতে পারিতেছি না। বিমান বসু যাহা বলিতে চাহিতেছেন তাহা এই- কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে যে কলহ বিবাদ আছে, তাহা তারা প্রকাশ্যে আনিবেন না ঢাকিয়া রাখিবেন-তাহা তিনি জানেন না। ইহা বুঝাইতে শাড়িতে নারীদেহ ঢাকা সর্বোত্তম সাহিত্যিক উপমা বলিয়াই বিবেচিত হইবে। বাঙালীর তাহার সাহিত্যরস না বুঝিয়া, অবুঝের ন্যায় বিমান বসুর ওপর যেভাবে রে রে করিয়া উঠিয়াছে, নারীবাদিরা যেভাবে ইহাতে নারীত্বের অপমান দেখিতেছেন, তাহাতে ভয় হইতেছে, বঙ্গভূমি হইতে সাহিত্যের পাঠ এবার না উঠাইতে হয়।
গতকাল ফক্স নিউজ চ্যানেলে দেখিলাম এক প্রখ্যাত আমেরিকান সেনেটর, এম এন বি সি নামক এক ডেমোক্রাটিক টিভি চ্যানেলের ওবামা প্রীতি বোঝাইতে, বলিলেন ওক্ত চ্যানেলটি ওবামার জন্যে পা ফাঁক করিয়া বসিয়া থাকে। কোন আমেরিকান মিডিয়া ইহাকে কুৎসিত বলিল না। কোন নারীবাদি ইহাকে নারীত্বের অপমান বলিয়া দাবি করে নাই-বিশেষত বক্তব্যটি একজন নারীই রাখিয়াছিলেন। কারন এটি ভাষার একটি বিশেষ ব্যবহার। বিমান বোস যা করিয়াছেন, তাহা ইহা অপেক্ষা অনেক সভ্য বক্তব্য। ইহাতে রসবোধ ছিল ষোল আনা। বাঙালী মিডিয়া সেই রস আস্বাদন না করিয়া যেভাবে বিমান বোসের "পেছন মারিতে" উদ্যত হইয়াছে, তাহাতে বঙ্গস্থানে বাকস্বাধীনতার কোরবানীতে চিন্তিয় রহিলাম।
No comments:
Post a Comment