Thursday, December 22, 2011

শিল্প স্থাপনে মমতা সম্পূর্ন ব্য র্থ

মমতা এবং পার্থবাবু দুজনেই শিল্প স্থাপনে আন্তরিক। কিন্ত বাস্তব নীট ফল হচ্ছে পশ্চিম বঙ্গের শিল্পায়ন গত ছমাসে সম্পূর্ন স্থগিত। জয় বালাজী থেকে ভূষন স্টীল- জমির অভাবে সব বন্ধ। উপরন্তু পেনশন থেকে রিটেল এফ ডি আই-সর্বত্র তৃণমূলের বাম মনোভাবে, ভারতের শিল্পপতিরাও মমতাকে সিপিএমের ক্লোন হিসাবেই দেখছেন। ফলে পশ্চিমবঙ্গে আশু বিনিয়োগের কোন সুযোগ তৈরী হবে বলে মনে হচ্ছে না।

১৯৭৭-৮৪ সালের ইতিহাস ফিরে আসছে। জ্যোতিবাবু বা তৎকালীন সিপিএম নেতৃত্ব মোটেও চান নি, শিল্প পশ্চিম বঙ্গ ছেড়ে চলে যাক। শিল্পায়নের জন্যে মমতার মতন জ্যোতিবাবুও আন্তরিক ছিলেন। কিন্ত নিজেদের বামপন্থী অবস্থানে অনঢ় থাকায় , পশ্চিম বঙ্গ শিল্প শ্বশানে পরিণত হয়। মমতার সৌভাগ্য এই যে উনি শ্বশান থেকেই শুরু করবেন-পশ্চিম বঙ্গকে শ্বশান বানানোর দায়ভার উনাকে বইতে হবে না।

বাস্তবটা তাহলে আমরা কি শিখলাম? জনবিরোধি এবং বৃহৎশিল্পের পক্ষে অবস্থান না নিলে, রাজ্যের শিল্পোন্নতি সম্ভব না। বৃহৎ শিল্পের স্বার্থের সাথে জনগণের বিরোধ কেন বাধছে? এটা রাজনীতি না বাস্তব? এখানে উইন-উইন গেমপ্ল্যান বেড় হচ্ছে না কেন? মমতার জমি অধিগ্রহণ নীতি মেনে শিল্পের জন্যে জমি নেওয়া সম্ভব না সব শিল্পপতিরাই বলে দিয়েছে। ঠিক যেমন সম্ভব ছিল না সিটুর দাবির মেনে পশ্চিম বঙ্গে শিল্প চালানো। ফলে শিল্পের জন্যে ক্রমশ সিপিএম বাধ্য হয়েছে জন বিরোধি অবস্থান নিতে। অবশ্য তার আগে বেনফিশের মতন নিজে কিছু ব্যবসা করার চেষ্টা করে লালবাতি জ্বালিয়েছে।

সমাজতন্ত্রের ইতিহাস জানলে, এটা মোটেও অভিনব কোন নতুন অবস্থান না। ধণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে স্যোশালিস্ট রিফর্ম করে সমাজতান্ত্রিক অবস্থান মোটেও সম্ভব না-সেটা বহুদিন আগে বার্নস্টাইনের লেখার জবাব দিতে গিয়ে রোজা লুক্সেমবার্গ লিখেছিলেন। কারন এই ধরনের সংস্কার আসলে ধনতান্ত্রিক এবং শোষণের হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে, শোষন কাঠামোকে দীর্ঘায়িত করে। যেটা ভারতের বামআন্দোলনের মধ্যেও আমরা দেখছি। এমন স্থিতিতে সমাধান তিনটি

(১) সম্পূর্ন লেনিনিস্ট বিপ্লব। উৎপাদনের জাতীয়করন। কিন্ত সেটি আসলে ধণতান্ত্রিক গণতন্ত্রের চেয়েও অনেক খারাপ একটি সিস্টেম বলে ইতিহাসের পরীক্ষিত সত্য। লেনিনিজমের পরীক্ষা পৃথিবীর সর্বত্র দুর্ভিক্ষ এবং গণখুন ছারা পৃথিবীকে ভাল কিছু দিতে পারে নি। এটা না মানলে, হয় আপনি নিরক্ষর, নয় বোকা -নইলে পাগল।

(২) ধণতান্ত্রিক কাঠামোকে বাড়তে দেওয়া-কোন বাধা না দেওয়া- এতে উৎপাদন এবং দক্ষতা বাড়বে। কিন্ত সমাজে অসাম্য ও বাড়বে। এই পর্যন্ত আমার আপত্তি ছিল না। খাইতে পেলেই হল। কিন্ত সমস্যা হচ্ছে ক্ষমতা কুক্ষিগত হবে কিছু হাতে গোনা বণিকদের হাতে। ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন খুব খারাপ জিনিস। গোটা কমিউনিজমটাই এইভাবে ডুবে গেছে। এই জন্যে ইহাও কাম্য না।

(৩) তৃতীয় সমাধান আমার মতে কোয়াপরেটিভ সিস্টেম অব প্রোডাকশনে লুকিয়ে আছে। যেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত, সেখানে রাস্তায় ঝান্ডাবাজি সম্পূর্ন অর্থহীন। প্রকৃত জনআন্দোলন গড়তে গেলে, তা উৎপাদন ব্যবস্থায় কোয়াপরেটিভ বা সমবায়ের মাধ্যমেই করতে হবে।
এই নিয়ে আমি আগে অনেক লিখেছি
http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=15798

আরেক বার এটাই লিখি যে সমাজতন্ত্রের মূল ধারনা সমাজের জন্যে মানুষের আত্মত্যাগ। আর সেটা তখনই সম্ভব যখন ১০টা মানুষ একসাথে একটা সংস্থা চালাতে পারবে। ১০ জন মানুষ কোন সরকারী সংস্থায় চাকরি করলে মোটেও অন্যদের জন্যে কোন অনুভূতি গড়ে ওঠে না। বরং সে আরো স্বার্থপর হয়। আবার ১০ জন মিলে রাস্তায় নেমে পার্টিবাজি করলেও কোন সমস্যার সমাধান হয় না। জনশক্তি তখনই কার্যকরী যখন তা ১০ জনে মিলে একসাথে একটা ব্যবসা বা ফার্ম খুলে উন্নততর উৎপাদনের পথ দেখাতে পারে।

Saturday, December 10, 2011

অপদার্থ তোদিরা না আমরা?



স্টিফেন কোর্টের আগুন থেকে রাজ্যবাসী বা সরকার যে কিছুই শিক্ষা নেয় নি সেটা আবার পরিস্কার হল।


বাস্তবটাকে স্বীকার করাতে কল্পনাপ্রেমিক বাঙালীর সমস্যা সর্বদা। বাস্তব এটাই কোলকাতার সব ব্যবসা মারোয়ারী ব্যবসায়ীদের হাতে যাদের " বিজনেস এথিকস" বলতে কিছু নেই-সমাজমুখী কোন চিন্তাই নেই।ঘুঁশ দিয়ে, সব সরকারী আইনকে হিমঘরে পাঠিয়েছে এরা। নইলে কি করে একাধিক সরকারী আইন ভাঙা হল আমেরীতে? আর তোদি, গোয়েঙ্কাদের ধরবে কে? এরেস্ট ত আই ওয়াশ। কালকেই শিল্প স্থাপনের জন্যে মমতাকে তোদির কাছে ছুটতে হবে।


সরকারের ঘুম ভাংবে? বাজে কথা। ইন্সপেকশন করলে কোলকাতার ৭০% বাড়ির মালিকদের লাইসেন্স বাতিল হবে। সে ক্ষমতা কার আছে? কারুর নেই। আর নেই বলেই কালকে আবার আরেকটা আগুনের ঘটনা হবে। হবেই। আমি স্টিফানকোর্টের আগুনের ঘটনার সময় এই কথাটাই লিখেছিলাম। যেখানে ১০০/১০০০ টাকা দিয়ে ইন্সস্পেক্টর ম্যানেজ করলে ১ লাখ টাকা লাভ, সেই পাটিগণিতের সুবিধা নেবে না কোন মারোয়ারী? সমাজের প্রতি দ্বায়বদ্ধতা নিয়ে ব্যাবসা করাটা ভারতীয় ব্যাবসায়ী ফামিলিগুলির মধ্যে নেই।


এর মধ্যে যদি ব্যবসার নাম চিকিৎসা আর শিক্ষা হয়-তাহলে, তার মধ্যে এই শ্রেনীর ব্যাবসায়ীরা ঢুকলে কি হবে আমেরি তার উদাহরণ। আমেরির বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ। এটা টাকা আদায় করার মেশিনে পরিণত হয়েছিল। সেদিক দিয়ে আরেকটা পাপের মৃত্যু হল। শিক্ষা এবং চিকিৎসাকে ব্যবসার বাইরে রাখতে হবেই। সরকারি চিকিৎসা খারাপ হলে- কমিউনিটির হাতে যেমন মিউনিসিপালিটি বা দরকার হলে চিকিৎস্ ক কোয়াপরেটিভের হাতে হাসপাতাল চলুক