Sunday, August 14, 2011

বেয়াইনি কল সেন্টার? না বেকারদের পেটে লাথি?

বিপ্লব পাল

১৪ ই আগষ্ট, ২০১১

আনন্দবাজার এবং এদেশের সরকার সমান ভাবে দ্বায়িত্বজ্ঞানহীন।

আগে আনন্দনাজারে প্রকাশিত খবরটি পড়ুন

রাজ্যে এই প্রথম হদিশ মিলল বেআইনি কল সেন্টারেরও। উত্তর চব্বিশ পরগনার ব্যারাকপুরে। টেলিকম দফতর হানা দিয়ে ওই কল সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, রাজ্যে বেআইনি ভাবে আরও কল সেন্টার চলছে। ওই ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে টেলিকম দফতরের ‘এনফোর্সমেন্ট রিসোর্স অ্যান্ড মনিটরিং (টার্ম) সেল।’ওই সেল-এর ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল অতনু ঘোষ জানিয়েছেন, অনুমতি ছাড়া কল সেন্টার চালালে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। কারণ, নিয়মিত বিদেশে কথা বলার জন্য সরকারকে টাকা দিতে হয় কল সেন্টার চালানো সংস্থাকে। কিন্তু ব্যারাকপুরের ওই কল সেন্টার সংস্থাটি তা করছিল না।

তা ছাড়া, কল সেন্টার থেকে নিয়মিত বিদেশি গ্রাহকদের সঙ্গে কথা হয় ইন্টারনেট মারফত। এতে খরচ কম হয়। তার জন্য আলাদা করে ‘সময়’ কিনতে হয় ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার কাছ থেকে। এদের মধ্যে ভারতীয় সংস্থা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে বিদেশি সংস্থাও। কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, এই ‘সময়’ কিনতে হয় কেবল ভারতীয় সংস্থার কাছ থেকেই। বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে ‘সময়’ কিনলে বিদেশে করা ফোন সংক্রান্ত নথি ভারত সরকারের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে। অতনুবাবুর কথায়, “দেশের নিরাপত্তার জন্য এই ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ন্ত্রণ জরুরি।” যে সংস্থার কাছ থেকে ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে ব্যারাকপুরের ওই কল সেন্টারটি চালানো হচ্ছিল, সেই সংস্থাকেও সতর্ক করেছে টেলিকম দফতর। ব্যারাকপুরে এক যুবক তাঁর নিজের নামে ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে কল সেন্টারটি চালাচ্ছিলেন। কিন্তু গত কয়েক মাস নিয়মিত দীর্ঘ সময় ধরে ওই যুবকের নামে ইন্টারনেট ব্যবহার হচ্ছে দেখেও সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি কেন খোঁজখবর নেয়নি, তা জানতে চাওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা দানকারী সেই সংস্থার কাছ থেকে। টার্ম সেল-এর ডিরেক্টর মনীশ দাসের কথায়, “নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি সংস্থারই গ্রাহকদের উপরে নজর রাখার কথা এবং ইন্টারনেট অত্যধিক ব্যবহার হলে সেখানে হানা দেওয়ারও কথা। এ ক্ষেত্রে সে নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে।” রাজ্যে আর কোথাও এই ধরনের বেআইনি কল সেন্টার চলছে কি না, তা-ও খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

খবর পড়ে আমি বিশেষ চিন্তিত এ রাজ্যের হাজার হাজার ছেলে মেয়েদের জন্যে, যারা ইন্টারনেটে কাজ করে উপায় করে এবং তাদের সবাইকেই ইহাহু মেন্সেঞ্জার বা স্কাইপ ব্যবহার করেই বিদেশী ক্লায়েন্টদের জন্যে কাজ করতে হয় ।

সরকারের এবং মিডিয়ার অজ্ঞতা এ ব্যাপারে আমাকে লজ্জা দিচ্ছে বলায় বাহুল্য!

[১] প্রথমত এই ইন্টারনেটের যুগে, আজকাল ফোনের থেকে ইণ্টারনেট মেসেঞ্জারে পৃথিবীর সবাই সবার সাথে কথা বলছে। সরকার যদি চান সেই কথাকে জানতে, তাহলে, তাদের প্রযুক্তি উন্নত করতে হবে। কিছু উদ্যোগী ছেলে মেয়ে যারা স্থানীয় চাকরি সৃষ্টী করছিল তাদের পেটে কেন লাথি মারবে সরকার এই ভ্রান্ত যুক্তি দেখিয়ে?

[২] পৃথিবীর সর্বত্র আজকাল স্কাইপ ব্যবহার করে সবাই আন্তর্জাতিক কল করে-আমি নিজেও আমেরিকা থেকে তাই করি। এতে আমেরিকার বৃহৎ কর্পরেশনগুলির বাণিজ্য বসে গেছে যারা এই ব্যবসা করত- স্কাইপের এর বিরুদ্ধে আমেরিকাতেও কর্পরেটগুলো সেনেটরদের ঘুঁষ খাইয়ে বিল আনার চেষ্টা করেছিল-কিন্ত টেকনিক্যাল কমিটি বাতিল করে দেয়। কারন এই ভাবে ইন্টারন্যাশানাল কল কাটকানো যায় না-আর ব্যবসার জন্যে তা উচিত ও না।

[৩] ধরা যার ভারতে এই আইন চালু হল যে ভি ও আই পি ফোন বা স্কাইপ বেয়াইনি। ভারতে প্রায় ৮ মিলিয়ান স্কাইপ ব্যবহারকারী আছে। সেসব ছেরে দিলাম। এই অনলাইন বিজন্সে মার্কেটে ভারতের সাথে রাশিয়া , আর্জেন্টিনা এবং ইস্ট ইউরোপের দেশগুলোর প্রচন্ড প্রতিযোগিতা। তারাত সবাই স্কাইপ ব্যবহার করে ব্যবসা করছে! তাহলে তাদের সাথে ভারতের ব্যবসায়িরা পারবে কি করে?

নিরাপত্তার প্রশ্ন শুনে বোঝা গেল, যে অফিসারটি এই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি আই টির ব্যাপারে নিরক্ষর। ভারতে যদি ২২ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারি থাকে, তাহলে তাদের সবাই কোন কোন ম্যাসেঞ্জার ব্যবহার করে বিদেশে ফোন করতে পারেন। কথা বলতে পারেন। কি করে আটকাবে ভারত সরকার? গুগল, ইয়াহু সবাই এই প্রযুক্তি দেয়। এবং পৃথিবীর কোন দেশেই তাদের এই ভয়েস এপ্লিকেশন আটকায় না। শুধু ভারত যদি আটকায়, ভারতে ব্যবসা করার খরচ এত বেড়ে যাবে, এদেশের ছোট ছোট বিপিও ব্যবসা গুলো সব মরে যাবে।

ইন্টারনেট নিরাপত্তা আসলে ভাওতাবাজি। সেটা করতে অন্য প্রযুক্তি লাগে এবং বিদেশ থেকে কেনা যায়।

আসল কথা হচ্ছে বড় কোম্পানীগুলো পুলিশ, মিডিয়া এবং সরকারকে টাকা খাটিয়ে এই সব কল সেন্টারগুলোকে মারতে চাইছে যাতে তাদের পকেটে দু পয়সা আসে। এবং এই ভাবে তারা হাজার হাজার ছেলের জীবিকার পেটে কিল মারছে ।

সরকার যখন জানে এই রাজ্যে জীবিকা তৈরী করা আজকে একটা মুখ্য লক্ষ্য সেখানে এই ধরনেই বেয়াইনি রেড, রাজ্যের হাজার হাজার বেকার যুবকদের আরো বিপদে ফেলবে।

আমি এই ব্যাপারে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং শিল্প মন্ত্রী শ্রী পার্থ চ্যাটার্জির দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

আমি খুব পরিস্কার ভাবে লিখছি সরকারের ভুমিকা এই ব্যাপারে বৃহৎ কর্পরেশনের স্বার্থ দ্বারা চালিত এবং তা রাজ্যের জন্যে বিরাট ক্ষতি।

No comments:

Post a Comment